রফিকুল আলম, ধুনট (বগুড়া): দেশের বিপুল জনগোষ্ঠি যখন জীবন বাঁচাতে ব্যস্ত। সবাই অঘোষিত ভাবে বন্দী হয়ে পড়েছেন। তখন স্বল্প আয়ের এক নারী নিজের হাতে তৈরী মাস্ক এলাকাবাসীর মধ্যে নিজেই বিনামূল্যে বিতরণ করে মানবতার অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। ইতিমধ্যে তার তৈরী করা মাস্ক প্রায় ৩ হাজার লোকের মধ্যে বিতরণ করেছেন। শুধু তাই নয় এলাকাবাসীদের করোনা সম্পর্কে সচেতনতা তৈরীর পাশাপাশি সকল প্রকার সাহায্যে এগিয়ে এসেছেন।
তার নাম মোর্শেদা হক মকুট মনি। তিনি বেসরকারি সংস্থা টিএমএসএস’র কর্মী। বগুড়ার ধুনট উপজেলা শাখায় সহকারী ব্যবস্থাপক পদে কর্মরত আছেন। তিনি এসব মহতী কাজের মাধ্যমে এলাকায় বেশ সাড়া ফেলেছেন।
কর্মের তাগিদে মকুট মনি ধুনট শহরে ভাড়া বাসায় বসবাস করেন। টিএমএসএস সংস্থার পক্ষে তিনি এলাকায় তৃতীয় লিঙ্গ (হিজরা), প্রতিবন্ধী, বেকার ও বয়সন্ধীকালীন কিশোরীদের নিয়ে কাজ করেন। তিনি এলাকার মানুষের কাছে মানব কল্যানের বাতিঘর। সুবিধা বঞ্চিতদের আলোর দিশারী। একজন সাদা মনের মানুষ।
মকুট মনির বাসায় গিয়ে দেখা যায় নিজ খরচে, নিজের সেলাই মেশিনে তিনি বিরামহীনভাবে মাস্ক তৈরী করে চলেছেন। ০২ এপ্রিল থেকে শুরু করে প্রতিদিন ২০০-৩০০টি মাস্ক তৈরী করেন তিনি। কাজের ফাঁকে ফাঁকে তার সাথে কথা হয়। তার মুখ থেকে ফুটে উঠেছিল গোটা বিশ্বসহ বাংলাদেশেও করোনা ভাইরাস আতংক ছড়িয়ে পড়ার কথা। লাল সবুজের এই দেশে বেশ কয়েক জনের মত্যুর খবর ব্যথিত করেছে তার হৃদয়।
এদিকে নিজের থেকে দেশের সীমিত আয়ের মানুষরে কথা ভেবে তিনি খুবই চিন্তিত। তাই সীমিত আয়ের থেকে মানুষের জন্য কিছু করতে হবে। সেই মানবিকতার চেতনায় সামাজিক দায়িত্ববোধ থেকেই মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন তিনি। নিজেকে মানবিক চেতনায় উদ্বুদ্ধ করা, মানুষের দুঃসময়ে পাশে থেকে কাজ করা, নিজেকে আদর্শ মানুষ হিসাবে গড়ে উঠার যে প্রেরণা রয়েছে তা শুধু একজন মকুট-মনির বেলায় সম্ভব।
এনজিও কর্মী মোর্শেদা হক মকুট মনি বলেন, এলাকার দরিদ্র মানুষের মাস্ক কেনার সামর্থ্য নেই। কিন্তু ঝুঁকি থাকা সত্তে¡ও জীবিকার তাগিদে তাদের বাইরে বের হতে হচ্ছে। আমি এসব মানুষের মাঝে মাস্কসহ অন্যান্য সুরক্ষা সামগ্রী বিতরণ করছি। এই কঠিন সময়ে মানুষ হিসেবে মানুষের পাশে দাঁড়ানো আমাদের কর্তব্য। আমার যতটুকু সাধ্য আছে সেই অনুযায়ী মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছি।