সেবা ডেস্ক: করোনায় কর্মহীন, হতদরিদ্র, শ্রমিক ও অসহায় মানুষের জন্য ব্যতিক্রম উদ্যোগ নিয়েছেন খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান গাজী এজাজ আহম্মেদ।
তার মরহুম পিতার নামে প্রতিষ্ঠিত ‘গাজী আব্দুল হাদী ফাউন্ডেশন’র উদ্যোগে পহেলা বৈশাখ থেকে স্থানীয় শাহপুর বাজারে স্থাপন করেছেন ‘ফ্রি সবজির দোকান।’
করোনাভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে সরকারের ‘স্টে হোম’ নির্দেশনার এ কারণে হতদরিদ্র, অসহায়, শ্রমিক ও দিনমজুর পরিবারে দেখা দিয়েছে খাদ্যাভাব। তাদের কষ্ট কিছুটা লাঘবের জন্য খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলার শাহপুর বাজারে ‘ফ্রি সবজির দোকান’ চালু করা হয়েছে।
এখানে মিষ্টি কুমড়ো, বরবটি, ডাটা, উচ্ছে, লাউ প্রভৃতি সবজি থরে থরে সাজানো রয়েছে। কিন্তু কোন ক্রেতা নেই। যার যেটা প্রয়োজন তিনি নিজ হাতেই সেটি তুলে নিচ্ছেন। কয়েকজন স্বেচ্ছাসেবক শুধু তদারকি করছেন।
সাবেক ইউপি সদস্য মেসবাহুল আলম টুটুল বলেন, ‘করোনাভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে কর্মহীন মানুষেরা খাবার সংকটে পড়েছেন। এ কারণে ফ্রি সবজির দোকান থেকে তারা বিনামূল্যে ইচ্ছামত যে কোন একটি সবজি নিতে পারবেন।’
ফ্রি সবজি বাজারের উদ্যোক্তা ডুমুরিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান গাজী এজাজ আহম্মেদ বলেন, ‘করোনাভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে খেটে খাওয়া মানুষের সাময়িকভাবে অসুবিধা হচ্ছে। এজন্য মানবিক সহায়তা কর্মসূচির অংশ হিশেবে ফ্রি সবজির দোকান দিয়ে খেটে খাওয়া মানুষের জন্য কিছু করার চেষ্টা করছি।’
এর আগে কয়েকদিন ধরে তরুণ এ জনপ্রতিনিধি গাড়িতে করে জীবাণুনাশক নিয়ে নিজ হাতে উপজেলা সদর, শরাফপুর, চুকনগর, শাহাপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় জীবাণুনাশক স্প্রে ছিটিয়েছেন।
আবার, কখনও নিজের কাঁধে স্প্রে মেশিন ঝুলিয়ে গ্রাম-পাড়া -মহল্লা পর্যন্ত জীবানু নাশক স্প্রে প্রয়োগ করে চলেছেন। এছাড়া, করোনাভাইরাস প্রতিরোধ ও সচেতনতা সৃষ্টির জন্যে বিগত কয়েক দিনে তিনি সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত অর্থায়নে কয়েক হাজার মাস্ক, সাবান সাধারণ মানুষের মাঝে বিতরণ করেছেন।
সম্প্রতি তিনি নিজের ফেসবুক ওয়ালে এলাকাবাসীর উদ্দেশ্যে একটি বার্তা দিয়েছেন। যেখানে তিনি উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের সময় ভোটারদের কাছে দেয়া প্রতিশ্রুতি রক্ষা করতে চান বলে জানিয়েছেন।
উপজেলা চেয়ারম্যান গাজী এজাজ আহমেদের পোস্টটি তুলে ধরা হলো- ‘প্রিয় ডুমুরিয়াবাসী, আমার সালাম নিবেন.. গত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আপনাদের কাছে ভোট প্রার্থনা করবার সময় আমি আস্বস্ত করেছিলাম, নির্বাচিত হলে এই ডুমুরিয়ার মাটিতে আপনাদেরকে সুখে-শান্তিতে রাখবার জন্য সাধ্যমত সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা থাকবে আমার। অন্তত অভাবের তাড়নায় একটি পরিবারও যেন অনাহারে দিনাতিপাত না করে, সেদিকে সতর্ক দৃষ্টি রাখবো। কিন্তু ‘করোনার’ কারণে সৃষ্ট পরিস্থিতি সম্পর্কে আপনারা সকলেই অবগত। করোনার কারণে গরীব দিন-মজুর ভাই-বোনেরা আজ অতি কষ্টে দিন কাটাচ্ছে। এ পরিস্থিতিতে আমার ডুমুরিয়া উপজেলার কোথাও কোন মানুষ যদি খাবারের অভাবে কষ্ট পায়, তাহলে দয়া করে আমাকে জানাবেন..। আপনারা ঘরে থাকুন, আমি আছি আপনাদের পাহারায়..।’
উপজেলা চেয়ারম্যান গাজী এজাজ আহমেদ বলেন, ‘ফ্রি সবজির বাজার একস্থানে সীমাবদ্ধ না রেখে তিনি নিজেই গাড়িতে করে সবজি নিয়ে উপজেলার ১৪টি ইউনিয়নে যাবেন। এভাবে অসহায় মানুষের কাছে সবজি পৌঁছে দেবেন।’
জনগণের সেবার মাধ্যমে তার পিতা এ উপজেলার প্রয়াত চেয়ারম্যান গাজী আব্দুল হাদীর সুনামকে অক্ষুন্ন রাখতে চান বলেও জানান তিনি।