ধুনটে করোনার শঙ্কা মাড়িয়ে চাঙ্গা বাঁশ শিল্পের কারিগররা

S M Ashraful Azom
ধুনটে করোনার শঙ্কা মাড়িয়ে চাঙ্গা বাঁশ শিল্পের কারিগররা

রফিকুল আলম, ধুনট (বগুড়া): ঘরে ঘরে করোনার শঙ্কা। এলাকাজুড়ে চলছে লকডাউন। সামাজিক দুরত্ব মানার বিধান। এ সব বাধা মাড়িয়ে ঈদের বাজার ধরতে চাঙ্গা কারিগররা। কেউ বাঁশ কাটছেন, কেউ তৈরি করছেন বাঁশের চটি, তাদের হাতের ছোঁয়ায় তৈরি হচ্ছে খাঁচি। রাস্তার পাশে, বাড়ির আঙিনায়, ঘরের বারান্দায় কিংবা বাড়ির পাশে ফাঁকা জায়গায় বসে আপন মনে খাঁচি তৈরিতে ঝুঁকে পড়েছেন।

ঈদকে সামনে রেখে লাচ্ছা-সেমাইয়ের খাঁচি তৈরির কাজে এভাবেই ব্যস্ত সময় পার করছেন বগুড়ার ধুনট উপজেলার ২০ গ্রামের বাঁশ শিল্পের সাথে জড়িত কমপক্ষে ৫ হাজার কারিগর।

সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার প্রতিটি দোকানে লাচ্ছা সেমাই রাখার জন্য ব্যবহার হয় বাঁশের তৈরী খাঁচি। তাই কারিগররা সকাল থেকে রাত পর্যন্ত বাঁশের তৈরি খাঁচি বানাতে ব্যস্ত সময় পার করছেন। খাঁচির কারিগরদের ঈদের বাজার ধরার টার্গেটকে মাথায় রেখে কাজ করতে হচ্ছে। পুরুষের পাশাপাশি নারীরাও গৃহস্থালির কাজ সম্পন্ন করে এ কাজে সহায়তা করছেন।

জানা গেছে, জীবনের শরু থেকেই বাঁশের সঙ্গে নিবিড় সম্পর্ক তাদের। যুগ যুগ ধরে বাঁশের তৈরি বিভিন্ন সামগ্রী বানাতে পারদর্শী তারা। এ শিল্পের তারা নিপুন কারিগর। এটিই তাদের পেশা ও নেশা। অন্য কাজ করা বা শেখার মানসিকতাও নেই তাদের। বিভিন্ন আকার ও শৈলীতে কাটা সোনালী বাঁশের এ শিল্পের সঙ্গে জড়িয়ে থেকে জীবিকা নির্বাহ করছেন কারিগররা।

উপজেলার পাকুড়িহাটা, নলডাঙ্গা, কান্দুনিয়া, দাঁড়াকাটা, চালাপাড়া, বেলকুচি ও বাঁশহাটাসহ ২০ গ্রামের মানুষের জীবিকার পথ বাঁশের সামগ্রী তৈরি করা। তবে, এখানে সবচেয়ে বেশী চাহিদা বাঁশের তৈরী চাটাই। ঘরে ঘরে আছে চাটাই তৈরির নানা উপকরণ। প্রতিটি পরিবারই এই শিল্পের কাঁচামাল হিসেবে বাঁশ চাষ করেন। বাঁশ দিয়ে শুধু চাটাই নয়। এখানে আরো তৈরী হয় খলপা, তালাই, ডোল, খালই, হোচা, বিছন বা হাত পাখা, খাঁচি বা টোপাসহ নানা সামগ্রী।

বর্তমানে ঈদকে সামনে রেখে লাচ্ছা-সেমাই কারখানার মালিকদের চাহিদা মেটাতে খাঁচি তৈরীর কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন। কারিগরদের যেন সামান্য কথা বলারও ফুসরত নেই। তারা বাঁশ দিয়ে একই আকারের খাঁচি তৈরি করছেন। ধাপে ধাপে খাঁচি তৈরীর কাজ শেষে সেগুলো থরে থরে সাজিয়ে রাখাসহ নানা কাজে ঝুঁকে পড়েছেন। শিশু কিশোর থেকে শুরু করে পরিবারের সবাই হাত লাগিয়েছেন এসব কাজে।

নলডাঙ্গা গ্রামের আমিনুল ইসলাম বলেন, সারা বছর বিভিন্ন ধরনের সামগ্রী তৈরী করলেও ঈদের সামনে খাঁচি তৈরীর কাজ বেশী করা হয়। লাচ্ছা সেমাই কারখানার মালিকেরা ঈদের আগে খাঁচির চাহিদা দেন। তাদের চাহিদা অনুযায়ী খাঁচি তৈরী করে দেওয়া হয়। এই খাঁচি বিক্রির জন্য হাট বাজারে যেতে হয় না। কারখানার মালিকেরা গ্রামে এসে খাঁচি কিনে নিয়ে যান।

চালাপাড়া গ্রামের খাঁচি তৈরীর কারিগর মোকলেসুর রহমান বলেন, একটি বাঁশের দাম ৬০-৮০ টাকা। ভাল মানের একটি বাঁশ দিয়ে তিনটি খাঁচি তৈরী করা যায়। এক জন দক্ষ কারিগর দৈনিক তিন চারটি করে খাঁচি তৈরী করেন। প্রতিটি খাঁচির পাইকারী মূল্য ৩৫ থেকে ৪০টাকা।


ভিডিও নিউজ


-সেবা হট নিউজ: সত্য প্রকাশে আপোষহীন


ট্যাগস

#buttons=(Ok, Go it!) #days=(20)

Our website uses cookies to enhance your experience. Know about Cookies
Ok, Go it!
To Top