ভুয়া কাজীর কান্ড: রাস্তা থেকে ধরে নিয়ে জোড়পূর্বক বিয়ে

S M Ashraful Azom
ভুয়া কাজীর কান্ড রাস্তা থেকে ধরে নিয়ে জোড়পূর্বক বিয়ে
ভুক্তিভোগী লিটন মিয়া
শফিকুল ইসলাম: জোড় পূর্বক বর সাজিয়ে জুতা পিটা করে বিয়ের পিড়িতে বসালেন মেয়ের অভিভাবক ও ভুয়া কাজি। থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন ভুক্তভোগী। ঘটনাটি ঘটেছে ১০ মে সন্ধার দিকে কুড়িগ্রাম জেলার রৌমারী উপজেলার সদর ইউনিয়নের কোনাচীপাড়া গ্রামে।

অভিযোগ ও বরের পরিবার সুত্রে জানা গেছে, উপজেলার বন্দবেড় ইউনিয়নের বাঘমারা গ্রামের আব্দুল বাতেনের ছেলে লিটন মিয়া (৩০) পার্শ্ববর্তী উপজেলা রাজিবপুর থেকে নিজ বাড়ির উদ্দেশে ফেরার পথে কোনাচীপাড়া গ্রাম সংলগ্ন ডিসি রাস্তায় উৎপেতে থাকা সহিদ ইসলাম বাবলু, কনে ফাতেমা খাতুন রুমি, চাঁন মিয়া, সমর আলী, হিরো মিয়া, গোলাম মোস্তফা, রাজু মিয়াসহ অনেকেই আমাকে জোড় পূর্বক কোনাচীপাড়া গ্রামের হারুন উর রশিদের বাড়িতে ধরে নিয়ে যায় এবং বেধরক মারপিঠ করে।

পরে রৌমারী সদর ইউনিয়নের ভুয়া কাজি সাখওয়াত হোসেন লিপনকে দিয়ে ৮ লাখ টাকা দেনমোহর ধার্য করিয়া কনে ফাতেমা খাতুন রুমির (২৯)’র সাথে লিটনের জোড় পূর্বক বিবাহ রেজিষ্ট্রি করান। পরে গোলাম মোস্তফা, আলি আকবর ও আব্দুল বারেকের স্বাক্ষী বানিয়ে মৌলভী আফসার আলী মুন্সি দিয়ে কলেমা পড়ান। বিয়ে পড়ানোর পর বর লিটন অসুস্থ হয়ে পরলে তার জীবন রক্ষার্থে থানায় সংবাদ দিলে রৌমারী থানার পুলিশ তাকে উদ্ধার করে নিজ বাড়ি বাঘমারা গ্রামে রেখে যান।

এবিষয়ে লিটন বাদি হয়ে ভুয়া কাজি সাখাওয়াত হোসেন লিপনসহ উল্লেখিত ব্যক্তিদের আসামী করে রৌমারী থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন।

এবিষয়ে কাজী সাখাওয়াত হোসেন লিপনকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তিনি জানান, আমাকে লিটন ও ফাতেমার বিবাহ বন্ধনে রেজিষ্ট্রি করার জন্য ডাকলে আমি কোনচীপাড়া গ্রামের হারুন অর রশিদ এর বাড়িতে যাই। গিয়ে দেখা যায় শতশত মানুষের ঢোল, হৈচৈ করছে। আমি পরে বিবাহের রেজিষ্ট্রি করে চলে এসেছি। পরে জানতে পারলাম বর লিটনকে পুলিশ উদ্ধার করে তার নিজ বাড়িতে পৌছিয়ে দিয়েছে। তবে এ বিষয়টি নিয়ে আমার কাছে লোকজন এসেছিল। এটা নিয়ে সমাধানের লক্ষে বসা হবে।

কনে ফাতেমা খাতুন রুমি বলেন, ২০০৬ সালে লিটনের সাথে আমার বিয়ে হয়েছিল। দির্ঘদিনের সুখের সংসার চলাবস্থায় কোন কারন ছাড়াই ২০১৯ সালে কোর্টের মাধ্যমে আমাকে ডিফোর্স দেয়। এর কিছুদিন পর থেকে আবার আমার সাথে মোবাইলে বিভিন্ন সময়ে যোগাযোগ করে এবং বিবাহের প্রস্তাব দেয়। ঘটনার দিন আমাকে ডিসি রাস্তায় ডেকেছে আমি ও আমার চাচা এবং দুলাভাইসহ গিয়ে তাকে আমার বাড়িতে নিয়ে আসি। পরে আমার অভিভাবকগণ পুনরায় ৮ লাখ টাকা ধার্য্য করে রেজিষ্ট্রি এবং বিবাহ দেয়।

লিটন অভিযোগ করে বলেন, ডিসি রাস্তায় ওৎপেতে থাকা ফাতেমাসহ কয়েকজন আমাকে জোড় পুর্বক ফাতেমার বাড়িতে ধরে নিয়ে যায় এবং মারপিট করে ফাতেমা বলে আমাকে এই মুহুর্তে বিয়ে কর। বিয়ে করতে অস্বীকার করলে প্রাণ নাশের হুমকি দেয়। পরে রেজিষ্ট্রি করে। আমি রেজিষ্ট্রিতে সহি না দিলে কাজীও আমাকে জুতা পেটা করে। আমি নিরুপায় হয়ে রেজিষ্ট্রি কপিতে স্বাক্ষর দেই। এর আগে সাদা ষ্ট্যামে আমার হাতের জোড় করে স্বাক্ষর নেয়।


ভিডিও নিউজ


-সেবা হট নিউজ: সত্য প্রকাশে আপোষহীন


ট্যাগস

#buttons=(Ok, Go it!) #days=(20)

Our website uses cookies to enhance your experience. Know about Cookies
Ok, Go it!
To Top