/*------Layout (No Edit)----------*/

খুমেক হাসপাতালে অবৈধ ফ্রি সার্ভিস প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা, ‘গাত্রদাহ’

S M Ashraful Azom
খুমেক হাসপাতালে অবৈধ ফ্রি সার্ভিস প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা, ‘গাত্রদাহ’

সেবা ডেস্ক:  খুলনা মেডিকেল কলেজ (খুমেক) হাসপাতালের দীর্ঘদিন ধরে অবৈধ ফ্রি সার্ভিস নামে দালালদের একটি চক্রের হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা সাধারণ রোগীদের আত্মীয়-স্বজনরদেরকে বিভিন্ন সময় লাঞ্ঝিতসহ নানা অত্যাচারে শিকার হয়েছেন। এসব কথিত ফ্রি সার্ভিসদের নামে ভুক্তভোগীরা নির্যাতনের শিকার হয়ে হাসপাতালের কর্তৃপক্ষের নিকট একাধিক অভিযোগও দাখিল করেছেন। এসব অভিযোগের ভিত্তিতে খুমেক হাসপাতালে পরিচালক ডা: মুন্সী মো: রেজা সেকেন্দার সাধারণ রোগীদের সেবা নিশ্চিত লক্ষে ও দালালদের হয়রানী বন্ধে নানা পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন। খুমেক হাসপাতালের পরিচালকের ফ্রি সার্ভিস নামক দালাল হঠাও পদক্ষেপ গ্রহণ করায় ওই চক্রটির গাত্রদাহ শুরু হয়েছে। ওই দালাল চক্রটি বিভিন্ন মাধ্যমে হাসপাতালের পরিচালককে ম্যানেজ করার চেষ্টা অব্যাহত রেখেছেন।

এ ব্যাপারে খুমেক হাসপাতালের পরিচালক ডা: মুন্সী মো: রেজা সেকেন্দার সোমবার রাতে এ প্রতিবেদককে বলেন, কথিত ফ্রি সাভির্স নামে এক শ্রেনী দালালরা হাসপাতালে প্রবেশ করে রোগীদের বিভিন্ন ভাবে শোষন করতেন। বিভিন্ন সময় ভুক্তভোগী রোগীর আত্মীয় স্বজনরা এসব অভিযোগ দিতেন। রোগীদের সেবা নিশ্চিত করতে এখন থেকেই হাসপাতালের ফ্রি সার্ভিসদের প্রবেশের নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। সকলের সহযোগিতা নিয়ে তিনি হাসপাতালের শৃংখলা ফিরিয়ে আনতে চান। কিন্তু কারও ব্যক্তিগত স্বার্থের জন্য কোন অবৈধ কাজকে বৈধ করার চেষ্টা করা হলে সেটি মেনে নেয়া হবে না। এজন্য তিনি খুলনার জনপ্রতিনিধি, সাংবাদিকসহ সকল শ্রেণি-পেশার সহযোগিতা চান। তবে দীর্ঘদিনের এ অনিয়মকে ভাঙ্গার জন্য বর্তমান পরিচালক সাহসী পদক্ষেপ নেয়ায় খুলনার বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে সাধুবাদ জানানো হয়েছে।

খুমেক হাসপাতালে ভুক্তভোগী একাধিক রোগীর আত্মীয়-স্বজনদের সাথে কথা বলে এসব তথ্য পাওয়া গেছে। জানা গেছে, জরুরি বিভাগ থেকে ট্রলিতে করে ওয়ার্ডে রোগী নেয়া, ওয়ার্ড থেকে পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য প্যাথলজী, আল্ট্রাসনোগ্রাম, এক্স-রে অথবা সিটি স্ক্যান রুমে নেয়া থেকে শুরু করে ছাড়পত্র নিয়ে বের হওয়ার সময় পর্যন্ত প্রতিটি ধাপে ধাপে রোগীদের গুনতে হয় অতিরিক্ত ও অবৈধ অর্থ। আর অর্থগুলো হাতিয়ে নেন ‘ফ্রি সার্ভিস’ নামের এক প্রকার কথিত দালাল। অনেক সময় কেউ মারা গেলে লাশ নামিয়েও শুরু হয় বাণিজ্য। মোটা অংকের অর্থ না দেয়া হলে লাশও ছাড়া হয়না। এ অঘোষিত নিয়ম চলে আসছে দীর্ঘদিন ধরে। যত ক্ষমতাধর তত্ত্বাবধায়ক বা পরিচালকই থাকেন না কেন ওইসব ‘ফ্রি সার্ভিস’ নামের দালালদের নিয়ন্ত্রণ করা কারও পক্ষেই সম্ভব হয়নি। জনবলের অভাবের দোহাই দিয়ে তারা রয়েছেন দীর্ঘদিন ধরে। কিন্তু স্থায়ী কর্মচারী নিয়োগ না হলেও সম্প্রতি নিয়োগ দেয়া হয়েছে তিন শতাধিক আউটসোর্সিং কর্মচারী। সুতরাং এখন আর ‘ফ্রি সার্ভিস’ নামের দালালের প্রয়োজন নেই। আর এ কারনেই বর্তমান পরিচালক এসব অবৈধ ফ্রি সার্ভিস নামের দালাল হটাও কর্মসূচি হাতে নিয়েছেন। এ চিত্র খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের।

গত ৫ মে খুমেক হাসপাতালের পরিচালক ডা: মুন্সী মো: রেজা সেকেন্দার স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে বলা হয়, হাসপাতালের সকল ওয়ার্ড, আউটডোর এবং অন্যান্য বিভাগে অবৈধভাবে ফ্রি সার্ভিস হিসেবে যারা কাজ করছেন তাদেরকে বার বার নোটিশ করা সত্ত্বেও তারা হাসপাতালে কাজ করে যাচ্ছেন। তারা বিভিন্নভাবে হাসপাতালের দালালী, সরকারি ওষুধ চুরিসহ নানা অপকর্মে লিপ্ত বলেও পত্রে উল্লেখ করা হয়। তাদেরকে ওই পত্র জারির তিন কর্মদিবসের মধ্যে হাসপাতাল ত্যাগ করার জন্য নির্দেশ দেয়া হলো। যদি কেউ এ আদেশ অমান্য করেন তাহলে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।

তবে ওই পত্র জারির তিন কর্মদিবস ইতোমধ্যে অতিবাহিত হলেও এখনও পর্যন্ত তারা রয়েছেন বহাল তবিয়তে। শোনা যাচ্ছে দীর্ঘদিন ধরে তারা যাদেরকে ম্যানেজ করে হাসপাতালে অবৈধভাবে কাজ করে আসছেন তাদেরকে দিয়ে বর্তমান পরিচালককে ম্যানেজের চেষ্টা করছেন। এদের মধ্যে হাসপাতালের কর্মচারীদের প্রধান হিসেবে নিয়োজিত এবং দীর্ঘদিন একই পদে অধিষ্ঠিত বিশেষ করে হাসপাতালের খাদ্যসহ বিভিন্ন ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের সাথে জড়িত এক ব্যক্তি ওইসব অবৈধ কর্মচারীদের রাখার জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছেন।

অভিযোগ রয়েছে, ওইসব অবৈধ কর্মচারীরা স্থায়ী কর্মচারীদের প্রধান ওই ব্যক্তিকে নিয়মিত মাশোহারা দিয়ে তাদের কর্মে নিয়োজিত রয়েছেন। বিগত পরিচালকের আমলে এসব অবৈধ কর্মচারীদের বৈধতা দিতে কার্ড প্রথাও চালু করা হয়। সে ক্ষেত্রেও মূখ্য ভূমিকায় ছিলেন ওই ব্যক্তি। স্থানীয় এক প্রভাবশালী ব্যক্তির জামাতা ওই কর্মচারীদের প্রধান ব্যক্তি শ^শুরের নামের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান নিজে ব্যবহার করে দীর্ঘদিন ধরে হাসপাতালের খাদ্য সরবরাহসহ নানা আর্থিক সুবিধাভোগী কাজে নিয়োজিত বলেও অভিযোগ রয়েছে। স্থায়ী ও আউটসোর্সিং কর্মচারীদের রোষ্টার তৈরির নামেও তার বিরুদ্ধে বাণিজ্যের অভিযোগ রয়েছে। যে কারণে দীর্ঘদিনের অনিয়ম দূর করার মানষিকতা থাকলেও বর্তমান পরিচালক অনেকটা হিমশিম খাচ্ছেন।

ভিডিও নিউজ


-সেবা হট নিউজ: সত্য প্রকাশে আপোষহীন


ট্যাগস

#buttons=(Ok, Go it!) #days=(20)

Our website uses cookies to enhance your experience. Know about Cookies
Ok, Go it!
To Top