
রফিকুল আলম, ধুনট (বগুড়া): প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের হানায় বিপর্যস্ত দেশ। চলছে লকডাউন। এমন পরিস্থিতিতে ঘরবন্দী থেকে মানুষের মধ্যে মানসিক অস্থিরতা ও পারিবারিক অশান্তি বেড়ে যাচ্ছে। এতে মানুষ আত্মহত্যাপ্রবণ হয়ে উঠছে। পারিবারিক কলহ, মানসিক চাপের কারণে তিনদিনে শিক্ষার্থীসহ ৩জন আত্মহত্যা করেছেন। এটি বগুড়ার ধুনট উপজেলার চিত্র।
জানা গেছে, ধুনট পৌর এলাকার পশ্চিম ভরনশাহী গ্রামের সোহরাব আলীর সাথে তার স্ত্রী সন্ধ্যা খাতুনের কয়েক মাস ধরে পারিবারিক বিভিন্ন বিষয়াদি নিয়ে বিরোধ চলছে। এ অবস্থায় শুক্রবার বিকেলে স্বামীর উপর অভিমান করে বিশাক্ত গ্যাস ট্যাবলেট সেবন করে অসুস্থ্য হন সন্ধ্যা খাতুন। এরপর বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিকসাধীন অবস্থায় রাত ১০টার দিকে সন্ধ্যা খাতুন (৩০) মারা যান।
উপজেলার নাটাবাড়ী গ্রামের আলমগীর হোসেন ও তার স্ত্রী ১৩ মে দিনমজুরের কাজ করতে যমুনা নদীর চরে যান। সেখান থেকে বিকেলে তারা বাড়িতে ফিরে এসে মেয়ে আঁখি খাতুনকে ভাত রান্না করতে বলে। কিন্তু আঁখি ভাত রান্না না করায় তার মা তাকে বকাবকি করে। মায়ের উপর অভিমান করে সন্ধ্যার দিকে বাবার ঘরের তীরের সাথে ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করে আঁখি খাতুন (১৪)। আঁখি খাতুন পারনাটাবাড়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণীর ছাত্রী।
একই এলাকার চুনিয়াপাড়া গ্রামের মহির উদ্দিনের ছেলে আলমগীর হোসেনের সাথে তার স্ত্রীর দীর্ঘদিন ধরে পারিবারিক বিভিন্ন বিষয়াদি নিয়ে বিরোধ চলে আসছিল। এরই জের ধরে ১৩ মে রাতে স্ত্রীর ওপর অভিমান করে নিজ ঘরের তীরের সাথে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন আলমগীর হোসেন (২৮)।
ধুনট থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) কৃপা সিন্ধু বালা বলেন, সাধারণত পারিবারিক ও মানসিক অশান্তি, অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তাসহ নানা কারণে মানুষের মধ্যে আত্মহত্যার প্রবণতা তৈরি হয়। করোনাক্রান্তিকালে হঠাৎ করেই এলাকায় আত্মহত্যার প্রবণতা বেড়ে গেছে। পারিবারিক বিরোধের কারণে ৩টি আত্মহত্যার ঘটনায় থানায় পৃথক ভাবে অস্বাভাবিক মৃত্যু (ইউডি) মামলা রেকর্ড করা হয়েছে।