রফিকুল আলম,ধুনট (বগুড়া): বগুড়ার ধুনট উপজেলায় যমুনা নদীর বন্যা নিয়ন্ত্রন বাঁধ রক্ষা ও পানিবন্ধী পরিবারের লোকজনের নিরাপত্তার জন্য আনছার ভিডিপির সদস্য ও গ্রাম পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এরমধ্যে ১৬ জন আনছার ভিডিপি সদস্য ও ১০ জন গ্রাম পুলিশ রয়েছে। উপজেলা প্রশাসনের সিদ্ধান্ত মোতাবেক বন্যার শুরু থেকে যৌথভাবে তারা নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করছেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও অবিরাম বর্ষণে ধুনট উপজেলায় যমুনা নদীর পানি বেড়ে বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পানি বেড়ে প্লাবিত হয়েছে উপজেলার গোসাইবাড়ি ও ভান্ডারবাড়ি ইউনিয়নের ১৪টি গ্রাম। এসব গ্রামের কমপক্ষে এক হাজার পরিবারের লোকজন পানিবন্ধী হয়ে দূর্বিষহ জীবন যাপন করছেন।
যমুনার পানির তীব্র স্রোতে শুরু হয়েছে নদী ভাঙন। এতে করে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ হুমিকর মুখে পড়েছে। এছাড়া তলিয়ে যাচ্ছে ঘরবাড়ি, রাস্তা-ঘাট। পানিবন্দি এলাকার অসংখ্য মানুষ ঘরবাড়ি ছেড়ে আশ্রয়কেন্দ্র, বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধসহ উঁচু জায়গাগুলোতে আশ্রয় নিয়েছেন। এছাড়া যমুনা চরে বসবাসকারী অনেকে ঘর-বাড়ি ভেঙে নৌকায় করে নদীতীরে চলে আসছেন। বন্যার দুর্যোগ থেকে স্থায়ী সমাধান খুঁজতে তারা চরের পৈত্রিক ভিটেমাটি ছেড়ে বাঁধে আসছেন।
উপজেলার শহড়াবাড়ি থেকে মাধবডাঙ্গা পর্যন্ত সাত কিলোমিটার দীর্ঘ যমুনা নদীর বন্যা নিয়ন্ত্রন বাঁধ। যমুনার পানি বাড়ার সাথে স্রোতও বেড়েছে। প্রবল চাপে বাঁধের একাধিক পয়েন্ট দিয়ে চুইয়ে চুইয়ে সেই পানি লোকালয়ে ঢুকে পড়ছে। ইঁদুরের গর্ত এবং দুর্বল অংশে পানি চুইয়ে পড়ার কারণে বাঁধ ক্রমশ ঝুঁকির মধ্যে পড়ছে। লোকালয় অংশের চেয়ে নদীমুখ অংশের পানি বেশী উচ্চতায় প্রবল বেগে প্রবাহিত হওয়ায় বাঁধ ভেঙে যেকোনো মুহূর্তে লোকালয়ে পানি প্রবেশের আশঙ্কা রয়েছে। এছাড়া দূর্বৃত্তরা রাতের আধারে বাঁধ কেটে ক্ষতি করতে পারেন। এমন আশংকা থেকে বাঁধে আনছার ভিডিপি সদস্য ও গ্রাম পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
উপজেলার ভান্ডারবাড়ি ইউনিয়নের গ্রাম পুলিশ আব্দুর রশিদ ও হিরা লাল জানান, বন্যা দূর্গত এলাকায় পানিবন্ধী মানুষের মাঝে চুরি ও ডাকাতির শঙ্কা থাকে। এ কারণে বানভাসি মানুষের পাশে থেকে তাদের নিরাপত্তার জন্য রাত জেগে পাহারা দেওয়া হয়।
উপজেলার ভান্ডারবাড়ি ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আতিকুল করিম আপেল এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, বাঁধে আশ্রিত বানভাসি মানুষের জানমালের নিরাপত্তা ও বন্যা নিয়ন্ত্রন বাঁধ রক্ষার জন্য গ্রাম পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। প্রতিদিন সন্ধ্যা থেকে সকাল পর্যন্ত পালাক্রমে এই পাহারার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। ফলে বানভাসি মানুষ গুলো নিরাপত্তার মাঝে রাত যাপন করতে পারছেন।
ধুনট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সঞ্জয় কুমার মহন্ত বলেন, পানিবন্ধী মানুষের জানমালের নিরাপত্তা ও বন্যা নিয়ন্ত্রন বাঁধ রক্ষার জন্য আনছার ভিডিপি সদস্য ও গ্রাম পুলিশ দিয়ে রাতের বেলায় পাহারার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।