রফিকুল আলম,ধুনট (বগুড়া): টানা বর্ষণ ও উজানের ঢলে বগুড়ার ধুনট উপজেলায় সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির আরো অবনতি হয়েছে। যমুনা নদীর পানি মঙ্গলবার বেলা ৩টায় বিপদসীমার ৬৭সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় প্রতিদিন নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে।
এদিকে মঙ্গলবার দুপুর ১টার দিকে ধুনট উপজেলায় বৃষ্টির পানি জমে থাকা খাদে পড়ে মিনা খাতুন (৫) নামে এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। নিহত মিনা খাতুন উপজেলার মথুরাপুর ইউনিয়নের কুড়িগাঁতী গ্রামের রফিকুল ইসলামের মেয়ে। উপজেলার মথুরাপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হারুন-অর-রশিদ সেলিম এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলার রাধানগর ও বৈশাখীচরসহ অনান্য চরের অধিকাংশ স্থানেই পানি উঠেছে। বন্যা কবলিত এলাকার পরিবার গুলো গবাদি পশু নিয়ে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধে কিংবা উচু জায়গায় আশ্রয় নিচ্ছেন। একদিকে বন্যা অন্যদিকে বৃষ্টিতে এসব মানুষদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। খোলা জায়গায় রান্না করতে দেখা গেছে।
উপজেলার নিউসারিয়াকান্দি গ্রামের কৃষক জব্বার, মজিদ ও দিনমজুর আব্বাস আলী জানান, বৃষ্টির কারণে রান্না করতে না পারায় দুপুর পর্যন্ত রান্নার কোনো ব্যবস্থা হয়নি। একই গ্রামের নওশের আলী বলেন, গরু দিয়েই আমার সংসার চলে। ঘরে ৯টা গরু রয়েছে। এখন মানুষের চেয়ে গো-খাদ্য নিয়ে খুব চিন্তায় আছি।
শহড়াবাড়ি গ্রামের হযরত আলী বলেন, পানি বাড়ছে হু হু করে। গত ২৪ ঘণ্টা আগে পানি উঠানে ছিল। এখন পানি ঘরের ভেতর। অবশেষে বসতবাড়ি ছেড়ে তিনি আশ্রয়ের সন্ধ্যানে বের হন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সঞ্জয় কুমার মহন্ত বলেন, প্রতিদিন বন্যা কবলিতদের কাছে গিয়ে তাদের খোঁজ-খবর নিচ্ছি। বিশুদ্ধ পানি ও পয়ঃনিষ্কাশন সমস্যার সমাধানের জন্য দ্রুত ব্যবস্থা করা হচ্ছে। কেউ যাতে খাদ্য সংকটে না পড়েন এবং যাদের নিরাপদে সড়িয়ে নেওয়া দরকার তাদের পাশে প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিরা প্রত্যন্ত এলাকায় থেকে কাজ করছেন।
বগুড়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী মাহবুবুর রহমান বলেন, যমুনা নদীর পানি বৃদ্ধির গতীবেগ অনেক কমে এসেছে। গত ১২ ঘন্টার মাত্র ৩ সেন্টিমিটার পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। উজানে নতুন করে আর ঢল না হলে দুই একদিনের মধ্যে যমুনা নদীর পানি কমতে পারে।
খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।