মধুপুরে চার খুনের রহস্য!

S M Ashraful Azom
0
মধুপুরে চার খুনের রহস্য

সেবা ডেস্ক: টাঙ্গাইলের মধুপুরে চাঞ্চল্যকর চার খুনের কূলকিনারা পাওয়া যায়নি। মধুপুর থানা পুলিশের পাশাপাশি সিআইডি, ডিবি এবং র‍্যাব পৃথকভাবে ছায়া তদন্ত করছে। তবে তদন্তসংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানিয়েছে, সুদের ব্যবসা নিয়ে লেনদেন সংক্রান্ত বিরোধ থেকে এই নৃশংস হত্যার ঘটনা ঘটতে পারে।

এদিকে এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় গত শুক্রবার রাতে মধুপুর থানায় হত্যা মামলা করেছেন নিহত আব্দুল গনির বড় মেয়ে সোনিয়া বেগম। এতে অজ্ঞাতনামাদের আসামি করা হয়েছে। পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদের জন্য চার জনকে আটক করেছে।

শুক্রবার বিকেলে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তিনজনকে আটক করেছে পুলিশ। আটককৃত হলেন, মধুপুর পৌরসভার মাস্টারবাড়ি এলাকার আবু তাহেরের ছেলে জামাল (৩৫), সালাম (২৭) ও সাইফুল (২৩)।

মামলার আর্জিতে বাদী বলেন, বুধবার গভীর রাতে দুর্বৃত্তরা পরস্পর যোগসাজশে পরিকল্পিতভাবে তার বাবা আব্দুল গনি ওরফে ওসমান গনি (৪০), মা কাজিরন বেগম (৩৫), ভাই তাইজুল ইসলাম (১৭) এবং বোন সাদিয়াকে (৭) নৃশংসভাবে খুন করে।

খুনের পর দুর্বৃত্তরা লোহার আলমিরা কুড়াল দিয়ে ভাঙার চেষ্টা করে।

তদন্ত কর্মকর্তা মধুপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) ছানোয়ার হোসেন মামলার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, তদন্ত চলছে, এখনি কিছু বলা যাচ্ছে না।

সোনিয়া সংবাদকর্মীদের জানান, ঘটনার দুই দিন আগে তিনি স্বামীর বাড়ি রামকৃষ্ণবাড়ী থেকে মাস্টারপাড়া বাবার বাসায় বেড়াতে আসেন। মঙ্গলবার রাতে তিনি চলে যান। মাত্র একদিন বাবার বাসায় অপেক্ষা করলে তাকেও খুনের শিকার হতে হতো।

নিহত আব্দুল গনির খালাতো ভাই আজিজ হোসেন জানান, গনি এক সময়ে রিকশা ভ্যান চালাত। কয়েক বছর ধরে সে অজ্ঞাত সোর্স থেকে বেশ কিছু টাকা পায়। সেই টাকায় সুদের ব্যবসা শুরু করে। মধুপুর পৌর শহরে জমি কিনে বাড়ি করে। সুদের টাকা নিয়ে অনেকের সঙ্গে তার মন কষাকষি ছিল বলে শোনা গেছে।

সুদের ব্যবসার বিষয়টির সত্যতা স্বীকার করে মধুপুর থানার ওসি তারিক কামাল জানান, তিনটি বিষয় নিয়ে তদন্ত আগাচ্ছে, তার প্রথমটি হলো সুদ ব্যবসা। সুদের দেনাপাওনা নিয়ে বিরোধ থেকে এ মর্মান্তিক হত্যাকাণ্ড ঘটেছে বলে মনে হচ্ছে।

এর সঙ্গে জমির মালিকানা নিয়ে ঝামেলা এবং মাদকসেবীদের দ্বারা খুনখারাবির বিষয়টিও মাথায় রেখে কাজ চলছে।

তিনি আরো জানান, দুর্বৃত্তরা পরিবারটির পরিচিত ছিল। তাই সহজেই বাসায় প্রবেশ করেছিল। অনেকক্ষণ বাসার ভেতরে তারা অবস্থানও করে। সম্ভবত ঘুমের ওষুধ মিশ্রিত কিছু খাইয়ে বাসার সকলকে অজ্ঞান করে কার্যসিদ্ধি করতে চেয়েছিল খুনিরা। কিন্তু সেটি সম্ভব না হওয়ায় তারা গনিকে হাত-পা বেঁধে প্রথম জবাই করে হত্যা করে। বিষয়টি দেখে ফেলায় অথবা বাধা দেওয়ায় অন্যদের হত্যা করা হয়।

মধুপুর পৌর এলাকার ১ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মঈন খান বলেন, নিহত গণি মিয়ার আরো দুই ভাই আছেন। এদের মধ্যে আব্দুর রশিদ নামের একভাই মারা গেছেন আর আব্দুল লতিফ নামের আরেক ভাই এখনও গ্রামের বাড়িতে বসবাস করেন। গত সপ্তাহে আব্দুল লতিফের সাথে মৃত. আব্দুর রশিদের ছেলেদের সাথে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। এ নিয়ে তাকে শালিসের কথা বলা হয়েছিল। তবে করোনার কারণে তিনি শালিস বৈঠকের আয়োজন করেননি।

এদিকে খুনের ঘটনায় মধুপুর পৌরশহর জুড়ে থমথমে পরিবেশ বিরাজ করছে। গতকাল শনিবার টাঙ্গাইল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ময়নাতদন্ত শেষে বাবা, মা, মেয়ে ও ছেলের লাশ পোদ্দারবাড়ী গ্রামের পারিবারিক কবরস্থানে পাশাপাশি চারটি কবরে দাফন করা হয়।

অ্যাম্বুলেন্স থেকে লাশ নামানোর পর আত্মীয়স্বজন ও পাড়াপড়শিরা একনজর দেখার জন্য সেখানে ভিড় জমায়। তাদের কান্নায় এক হূদয়বিদারক দৃশ্যের সূচনা হয়।

ভিডিও নিউজ


-সেবা হট নিউজ: সত্য প্রকাশে আপোষহীন


ট্যাগস

Post a Comment

0Comments

খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।

Post a Comment (0)

#buttons=(Ok, Go it!) #days=(20)

Our website uses cookies to enhance your experience. Know about Cookies
Ok, Go it!
To Top