
রফিকুল আলম,ধুনট (বগুড়া): বগুড়ার ধুনট পৌর স্বেচ্ছাসেবক দলের সাংগঠনিক সম্পাদক রাজিবুজ্জামান রাজিব। ২০১১ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর এই কমিটির অনুমোদন হয়। বিএনপি ক্ষমতায় না থাকায় সাংগঠনিক কার্যক্রম থেকে রাজিব নিজেকে গুটিয়ে নেন। গত ২০১৫ সালের ১৪মে তিনি ডিগবাজী দিয়ে উপজেলা যুবলীগের সদস্য পদ বাগিয়ে নেন। সক্রিয় হয়ে ওঠেন দলের নানা কর্মসূচিতেও। সখ্যতা গড়ে তোলের দলের শীর্ষ নেতাদের সাথে। তাদের আর্শিবাদে তিনি বনে যান যুবলীগের দাপটে নেতা। এলাকায় কায়েম করেন ত্রাসের রাজত্ব। তার বিরুদ্ধে ৬টি মামলা রয়েছে।
রাজিব ধুনট পৌর এলাকার সদরপাড়ার আমিনুল ইসলামের ছেলে। বিএনপি ঘরনার রাজিব যুবলীগে অনুপ্রবেশ করেই বেপরোয়া হয়ে ওঠেন। যুবলীগের নাম ভাঙ্গিয়ে তিনি নীরব চাঁদাবাজি, জমিদখল ও অর্থ আত্মসাতসহ সন্ত্রাসী কর্মকান্ডে লিপ্ত রয়েছেন। এলাকায় নানা অপকর্মের সাথে জড়িত থাকলেও তার বিরুদ্ধে কেউ মুখ খোলার সাহস পাচ্ছেন না। তবে তার এসব অপকর্মে নিজ দলের নেতাকর্মীদের মাঝে চরম অসন্তোষ বিরাজ করছে। উপজেলার এলাঙ্গী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়য়ামী লীগের সভাপতি এমএ তারেক হেলাল এবং উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শরিফুল ইসলাম খানকে কুপিয়ে আহত করেন রাজিব ও তার লোকজন। গত ২০০৫ সাল থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত তার বিরুদ্ধে থানায় ৬টি মামলা দায়ের হয়।
এদিকে সম্প্রতি উপজেলা আওয়ামী লীগের এক শীর্ষ নেতার বিরুদ্ধে রাজিব তার ফেসবুক পেজে কুটুক্তি করেন। এতে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা কর্মীরা রাজিবের প্রতি ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন। এক পর্যায়ে রাজিবের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য উপজেলা যুবলীগের সভাপতি ভিপি শেখ মতিউর রহমান বগুড়া জেলা যুবলীগ ও কেন্দ্রীয় যুবলীগের নিকট প্রস্তাব করেছেন।
রাজিবুজ্জামান রাজিব নিজেকে বঙ্গবন্ধুর আদর্শের সৈনিক দাবী করে বলেন, পৌর স্বেচ্ছাসেবক দলের কমিটিতে যে রাজিবের নাম লেখা আছে, সেটা আমি না। ফেসবুকে মাদক বিরোধী মন্তব্য লিখে দলের কতিপয় নেতার রোষানলে পড়েছি। তবে দলের কোন নেতাকে উদ্দ্যেশ করে আমি এই মন্তব্য করিনি। তারপরও রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার হয়েছি। রাজনৈতিকভাবে হেয় করতেই আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে।
ধুনট পৌর স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি মিনজাহ উদ্দিন মিঠু ও সাধারণ সম্পাদক কেএম শাহিদুর রহমান স¤্রাট দাবী করেন রাজিবুজ্জামান রাজিব তাদের কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক। রাজিব তাদের সাথে দলীয় কর্মকান্ডে অংশ নিয়েছেন। বিএনপির বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগের দায়েরকৃত রাজনৈতিক মামলার আসামীও রাজিব। সেখান থেকে তিনি যুবলীগে অনুপ্রবেশ করেছেন।
ধুনট উপজেলা যুবলীগের সভাপতি ভিপি শেখ মতিউর রহমান জানান, সেচ্ছাসেবক দলের পরিচয় গোপন করে রাজিবুজ্জামান রাজিব যুবলীগে অনুপ্রবেশ করেন। এরপর যুবলীগের নাম ভাঙ্গিয়ে সন্ত্রাসী ও চাঁদাবাজিসহ সংগঠন বিরোধী নানা কার্যকলাপে জড়িয়ে পড়েন। একারনে তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য বগুড়া জেলা ও কেন্দ্রীয় যুবলীগের নেতাদের নিকট প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে।
ধুনট থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) কৃপা সিন্ধু বালা বলেন, রাজিবুজ্জামান রাজিবের বিরুদ্ধে থানায় ৬টি মামলা রেকর্ড করা হয়েছে। তবে তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারী পরোয়ানা আছে কিনা খতিয়ে দেখা হবে।
ধুনট উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি টিআইএম নূরুন্নবী তারিক বলেন, রাজিবুজ্জামান রাজিব কি ভাবে স্বেচ্ছাসেবক দল থেকে যুবলীগে অনুপ্রবেশ করেছে তা জানা নেই। তবে সংগঠন বিরোধী তার কর্মকান্ডে দলের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হচ্ছে।
খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।