
রাজু আহমেদ সাহান - উল্লাপাড়া প্রতিনিধি: উল্লাপাড়ার মৌসুমী ব্যবসায়ীরা কোরবানির চামড়া নিয়ে চরম বিপাকে পড়েছেন। প্রান্তিক এসব ব্যবসায়ীরা তাদের ক্রয়কৃত চামড়া বিক্রি নিয়ে অনিশ্চিতার মধ্যে দিনাতিপাত করছেন। চামড়াগুলো প্রাথমিক প্রক্রিয়াকরণ শেষে দুই সপ্তাহ ধরে জড়ো করে রাখা হয়েছে। কিন্তু মিলছে না ক্রেতা। এসব ব্যবসায়ী স্বল্প পুঁজি নিয়ে এই মৌসুমী চামড়ার ব্যবসায় বিনিয়োগ করে এখন তারা লোকসানের মুখে পড়েছেন।
এবার কোরবানী ঈদে চামড়ার দাম খুবই কম ছিল। বিশেষ করে গরুর চামড়া দাম থাকলেও ছাগলের চামড়া কেনার কোন গ্রাহক পাওয়া যায়নি। অনেক ছাগল মালিক বিনামূল্যে চামড়াগুলো ব্যবসায়ীদেরকে দিয়েছেন। আবার অনেকে ছাগলের চামড়া বন্যার পানিতে ফেলে দিয়েছেন।
স্থানীয় প্রান্তিক চামড়ার ব্যবসায়ী শিবু দাস, সাখাওয়াত, মহব্বত মিয়া, মঈনুদ্দিন জানান, ঈদের দিন থেকে গরুর চামড়া ছোট বড় ভেদে ৩৫০ টাকা থেকে ৫০০ টাকা করে কিনেছেন। অনেকেই প্রাথমিক প্রক্রিয়ার আগেই ছোট চামড়াগুলো অল্প লাভে এলাকার ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রি করে দিয়েছেন। অন্যদিকে বড় গরুর চামড়াগুলো প্রাথমিক প্রক্রিয়া শেষে বিক্রির জন্য এখন মজুদ করে রাখা হয়েছে। এসব চামড়া প্রক্রিয়ার পর ৬০০ টাকা থেকে ৭০০ টাকা করে প্রতিটির দাম পড়েছে।
মৌসুমী এসব ব্যবসায়ীরা আরো জানান, তারা এসব চামড়া থেকে একটু বেশি লাভের আশা নিয়ে এখন বসে আছেন। প্রতিবছর এসব চামড়া নাটোরের ব্যবসায়ী এবং ঢাকার ট্যানারী মালিকদের নিকট ভালো দামেই বিক্রি করে থাকেন। কিন্তু এবছর ইদের পর ১৫ দিন পার হয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত চামড়াগুলো অবিক্রিতই রয়ে গেছে। দুই একজন ক্রেতা বাইরে থেকে আসলেও তারা যে দাম বলছেন তাতে ব্যবসায়ীদের লাভ তো দুরের কথা চালানের টাকাই উঠবে না। এসব ব্যবসায়ীর পুঁজি কম। তার উপর চামড়ায় বিনিয়োগ করে তারা এখন রীতিমতো ব্যবসায়িক ক্ষতির মুখে পড়েছেন।
নাটোরের চামড়ার বড় আড়ৎদার পারভেজ আহমেদ ও আবু সাইদ মিয়া জানান, গেল বছর ট্যানারি মালিকদের কাছে চামড়া বিক্রি করে এখন পর্যন্তও তারা তাদের পাওনা টাকা পাননি। কতদিনে তারা এসব টাকা পরিশোধ করবে তাও অনিশ্চিত। ফলে তারা এবছর টাকার অভাবে নতুন করে চামড়া কেনার উদ্যোগ নিতে পারছেন না বলে উল্লেখ করেন।
এ ব্যাপারে ঢাকার নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ট্যানারি মালিক জানান, সরকার চামড়া কেনার সুবিধার জন্য ট্যানারি মালিকদেরকে প্রতি বছর ঋণ প্রদান করে থাকেন। কোরবানি ইদের আগেই ঋনের এসব অর্থ ট্যানারি মালিকরা কম বেশি পেয়ে থাকেন। কিন্তু এবছর করোনাসহ নানা প্রতিকূল অবস্থার কারণে এখন পর্যন্ত চামড়া কেনার সরকারি ঋণের অর্থ তারা পাননি। ফলে তারা চামড়া কিনতে আগ্রহ প্রকাশ করছেন না। নানাবিধ কারণে বিপাকে পড়েছেন মৌসুমি চামড়া ব্যবসায়িরা।
-সেবা হট নিউজ: সত্য প্রকাশে আপোষহীন
খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।