
শফিকুল ইসলাম: ব্রহ্মপুত্রের পূর্বতীরে একাত্তরের মুক্তাঞ্চল খ্যাত রৌমারী ও রাজিবপুর উপজেলা থেকে চিলমারী নৌ-রুটে অস্বাভাবিক হারে ভাড়া বৃদ্ধি ও যাত্রী হয়রানীর অভিযোগ উঠেছে। অপর দিকে নৌকার মাঝিদের আচার আচরনে অতিষ্ট হয়ে পড়েছে যাত্রীরা। এ ঘটনায় উপজেলা নির্বাহী অফিসারসহ বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন এলাকাবাসি। ৫ সেপ্টেম্বর (শনিবার) সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে এসব চিত্র।
সাধারন মানুষের অভিযোগ, প্রতিনিয়ত জেলায় দাপ্তরিক কাজসহ কোর্ট-কাচারী, ব্যবসা-বানিজ্য ও মুমূর্ষ রোগীদের চিকিৎসার জন্য এই দুই উপজেলা বাসিকে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ব্রহ্মপুত্র নদ পার হয়ে সার্বক্ষণিক আসা যাওয়া করতে হয়। গত দুই বছর থেকে তেল ও মবিলের দাম বৃদ্ধি না পেলেও দফায় দফায় বেড়েছে নৌকা ভাড়া। কোন কারন ছাড়াই যাত্রী প্রতি ৩০ টাকা ও মোটরসাইকেল ৭০ টাকা বেশি ভাড়া নেওয়া হচ্ছে বলে জানা গেছে। তাছাড়াও নৌকা ঘাটে যাত্রীদের সুবিধার্থে নেই টয়লেট ও টিউবওয়েল।
কুড়িগ্রাম জেলার চিলমারী নৌকাঘাট, রৌমারীর ফলুয়ারচর, বলদমারা, কর্তিমারী ও রাজিবপুরসহ বিভিন্ন নৌকা ঘাট কুড়িগ্রাম জেলা পরিষদ থেকে ১ বছরের জন্য ইজারা নেন ফিরোজ নামের এক ব্যক্তি। তিনি রৌমারীর ফলুয়ারচর ও বলদমারা নৌকাঘাট দুটি ভাড়া আদায়ের জন্য বিভিন্ন খাতেঁ ৪১ লক্ষ টাকা খরচের মাধ্যমে রৌমারীর নাসির উদ্দিন খাঁন নামের এক ব্যক্তির কাছে দায়িত্ব দেন গত মার্চ মাসে। তার আগে করোনার অজুহাত দেখিয়ে যাত্রীদের কাছ থেকে জনপ্রতি ২’শ থেকে ৩’শত টাকা পর্যন্ত আদায় করা হতো । নৌকা ঘাটের মালিক সমিতির একক সিদ্ধান্তে পূর্বের ৭০ টাকার পরিবর্তে ১ ’শত টাকা জনপ্রতি যাত্রীদের কাছ থেকে নৌকা ভাড়া আদায় করা হচ্ছে।
জেলার উলিপুর থেকে নৌকা যোগে রৌমারীতে পার হয়ে আসা আবুল হোসেন নামের এক যাত্রী বলেন, নৌকা ভাড়াতো ৭০ টাকা, কিন্তু আমাদের কাছ থেকে ১’শত টাকা করে নিয়েছে। নৌকা ভাড়া কমানোর জন্য স্থানীয় প্রশাসনের কাছে দাবি জানাই।
চিলমারী থেকে রৌমারীতে ঘুরতে আসা আজগর আলী জানান, সরকারতো সর্বক্ষেত্রে ভাড়া কমিয়ে পূর্বের ভাড়া নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। তবে নৌকার মাঝিরা এ নির্দেশ অমান্য করে ভাড়া বেশি নিচ্ছে।
নৌকার মাঝি ফারুক মিয়া জানায়, করোনার কারনে যাত্রী অনেক কমে গেছে। পাশাপাশি নৌকার মালিক সমিতির সিদ্ধান্ত মতে ভাড়া একটু বেশি নিতেছি।
রৌমারীর নৌকা ঘাট পরিচালক রফিকুল ইসলাম বলেন,যাত্রী কমে যাওয়া ও উপরের সিদ্ধান্তে আগের ভাড়ার চেয়ে ৩০ টাকা বেশি নেওয়া হচ্ছে।
রৌমারীর নৌকা ঘাটের সাব-ইজারাদার নাসির উদ্দিন খাঁন বলেন, নৌকা ঘাটের মালিক সমিতির পক্ষ থেকে ভাড়া বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সেই জন্য আমরা ভাড়া বেশি নিই। তবে আমরা শুধু ভাড়া আদায়কারি হিসেবে কাজ করি। ভাড়া কমানো আমার কোন ক্ষমতা নাই
চিলমারী, রৌমারী ও রাজিবপুর নৌকাঘাট ইজারাদার ফিরোজ মিয়ার সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি কোন তথ্য না দিয়ে পাশ কাটিয়ে যান।
এব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার আল ইমরান বলেন, অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের অভিযোগ পেয়েছি। খোঁজ খবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
-সেবা হট নিউজ: সত্য প্রকাশে আপোষহীন
খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।