নিজের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে দিনরাত কাজ করছেন প্রধানমন্ত্রী

S M Ashraful Azom
0
নিজের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে দিনরাত কাজ করছেন প্রধানমন্ত্রী


সেবা ডেস্ক: নিজের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে প্রাণঘাতি ভাইরাস করোনা মহামারীর মধ্যেও দেশ ও মানুষের জন্য দিনরাত নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন বাংলাদেশ সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গত কয়েক মাসে শুধু কোভিড-১৯ মোকাবেলায় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ বাস্তবায়নে সরকার যেসব নির্দেশনা জারি করেছে সেগুলো পর্যালোচনা করলে এবং পরিমাণ বিবেচনা নিলেই কিছুটা অনুমান করা যায় জনগণের জীবন ও জীবিকা নিশ্চিত করতে দিন-রাত কতটা পরিশ্রম করে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী। নিজের জীবনের চেয়ে দেশ ও দেশের জনগণকে বড় মনে করেন সরকারপ্রধান শেখ হাসিনা। তাই ঝুঁকি থাকা সত্ত্বেও তিনি নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন।

প্রধানমন্ত্রীর প্রেস উইং থেকে জানানো হয়, শুধু কোভিড-১৯ মোকাবেলায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনা বাস্তবায়নে জানুয়ারি থেকে জুন মাস পর্যন্ত সরকারের বিভিন্ন বিভাগ ও মন্ত্রণালয় যেসব নির্দেশনা জারি করেছে তার পরিমাণ ১ হাজার ৯৭৬ পৃষ্ঠা। ভবিষ্যতে করোনা মহামারীর মতো দুর্যোগ মোকাবেলার কথা চিন্তা করে এসব নির্দেশনা সংরক্ষণের উদ্যোগ নিয়েছে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়। এসব নির্দেশনা বই আকারে ৫টি ভলিউমে সংরক্ষণ করা হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব মোঃ তোফাজ্জল হোসেন মিয়ার তত্ত্বাবধায়নে করোনা মোকাবেলায় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা বাস্তবায়নে সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগ থেকে জারি করা এসব প্রজ্ঞাপন সংকলন করা হয়।

এ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব তোফাজ্জল হোসেন মিয়া বলেন, কোভিড-১৯ মোকাবেলায় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ বাস্তবায়নে সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগ যেসব নির্দেশনা জারি করেছে তার পরিমাণ দেখলে কিছুটা অনুমান করা যায় এই করোনার মধ্যেও ঝুঁকি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী দিনরাত কতটা পরিশ্রম করে যাচ্ছেন।

তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রতিটি বিষয়ের সার্বক্ষণিক খোঁজখবর রাখছেন এবং সে অনুযায়ী প্রতিনিয়ত বিভিন্ন নির্দেশনা দিচ্ছেন। করোনা মোকাবেলায় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ বাস্তবায়নে সরকারের জারি করা নির্দেশনাগুলো সংরক্ষণ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, করোনা মোকাবেলায় সরকারের অভিজ্ঞতা ভবিষ্যতে কাজে লাগবে। ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে এসব নির্দেশনা সংরক্ষণের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।

এ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম বলেন, এই করোনা মহামারীর মধ্যেও নিজের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে জনগণের জীবন-জীবিকা নিশ্চিত করতে দিনরাত কাজ করে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। স্বাস্থ্যবিধি মেনে তিনি প্রতিটি বিষয়, প্রতিটি মুহূর্ত মনিটর করছেন এবং প্রয়োজনীয় দিক নির্দেশনা দিয়ে যাচ্ছেন। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী নিজের জীবনের চেয়ে দেশ ও দেশের জনগণকে বড় মনে করেন। তাই ঝুঁকি থাকা সত্ত্বেও তিনি নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। করোনা মহামারী থেকে মানুষের জীবন বাঁচাতে স্বাস্থ্য সুরক্ষা ও চিকিৎসার ব্যবস্থা, জনগণকে সচেতন করা এবং ক্ষতিগ্রস্ত মানুষকে অর্থ ও খাদ্য সহায়তার পাশাপাশি কর্মসংস্থান সৃষ্টি, ব্যবসা-বাণিজ্য, অর্থনীতি চাঙ্গা রাখতে বিভিন্ন পদক্ষেপ নেয় সরকার। গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন নির্দেশনার পাশাপাশি কোভিড-১৯ মহামারী থেকে মানুষের জীবন বাঁচাতে এবং জীবিকা নিশ্চিত করতে এখন পর্যন্ত মোট ১ লাখ ১২ হাজার ৬৩৩ কোটি টাকার (জিডিপির ৪ দশমিক ৩ শতাংশ) ২১টি প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার।

প্রধানমন্ত্রীর প্রেস উইং পাঠানো তথ্য অনুযায়ী এক নজরে সরকার ঘোষিত ২১টি প্রণোদনা প্যাকেজের মধ্যে রয়েছে- ১. রফতানিমুখী শিল্প প্রতিষ্ঠানের জন্য বিশেষ তহবিল (মোট বরাদ্দ ৫ হাজার কোটি টাকা), ২. ক্ষতিগ্রস্ত শিল্প ও সার্ভিস সেক্টরের প্রতিষ্ঠানের জন্য ওয়ার্কিং ক্যাপিটাল সুবিধায় (মোট বরাদ্দ ৩৩ হাজার কোটি টাকা), ৩. ক্ষুদ্র (কুটির শিল্পসহ) ও মাঝারি শিল্প প্রতিষ্ঠানের ওয়ার্কিং ক্যাপিটাল সুবিধা (মোট বরাদ্দ ২০ হাজার কোটি টাকা), ৪. বাংলাদেশ ব্যাংক প্রবর্তিত ইডিএফের সুবিধা বাড়ানো (মোট বরাদ্দ ১২ হাজার ৭৫০ কোটি টাকা), ৫. প্রি-শিপমেন্ট ক্রেডিট রি-ফাইন্যান্স স্কিম (মোট বরাদ্দ ৫ হাজার কোটি টাকা)।

এছাড়াও ৬. চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীদের বিশেষ সম্মানী (১শ’ কোটি টাকা), ৭. করোনাভাইরাসে আক্রান্ত অথবা মৃত্যুর ক্ষেত্রে ক্ষতিপূরণ (সাড়ে ৭শ’ কোটি টাকা), ৮. বিনামূল্যে খাদ্যসামগ্রী বিতরণ (মোট বরাদ্দ ২ হাজার ৫০৩ কোটি টাকা), ৯. ১০ টাকা কেজি দরে চাউল বিক্রি (মোট বরাদ্দ ২৫১ কোটি টাকা), ১০. লক্ষ্যভিত্তিক জনগোষ্ঠীর মধ্যে নগদ অর্থ বিতরণ (মোট বরাদ্দ ১২শ’ ৫৮ কোটি টাকা), ১১. ভাতা কর্মসূচীর আওতা বাড়াতে (মোট বরাদ্দ ৮১৫ কোটি টাকা), ১২. গৃহহীন মানুষদের জন্য গৃহনির্মাণ (মোট বরাদ্দ ২১শ’ ৩০ কোটি টাকা), ১৩. বোরো ধান/চাল ক্রয় কার্যক্রম (মোট বরাদ্দ ৮৬০ কোটি টাকা), ১৪. কৃষিকাজ যান্ত্রিকীকরণ (৩ হাজার ২২০ কোটি টাকা), ১৫. কৃষি ভর্তুকি (সাড়ে ৯ হাজার কোটি টাকা), ১৬. কৃষি পুনর্অর্থায়ন স্কিম (মোট বরাদ্দ ৫ হাজার কোটি টাকা), ১৭. নি¤œ আয়ের পেশাজীবী কৃষক/ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের জন্য পুনর্অর্থায়ন স্কিম (মোট বরাদ্দ ৩ হাজার কোটি টাকা), ১৮. কর্মসৃজন কার্যক্রম (পল্লী সঞ্চয় ব্যাংক, কর্মসংস্থান ব্যাংক, প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক এবং পিকেএসএফের মাধ্যমে ২ হাজার কোটি টাকা), ১৯. বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর এপ্রিল-মে/২০২০ মাসে স্থগিত করা ঋণের আংশিক সুদ মওকুফ বাবদ সরকারের ভর্তুকি (২ হাজার কোটি টাকা), ২০. ক্রেডিট রিক্স শেয়ারিং স্কিম (সিআরএস) ফর এসএমই সেক্টর (২ হাজার কোটি টাকা) এবং ২১. রফতানিমুখী তৈরি পোশাক, চামড়াজাত পণ্য ও পাদুকাশিল্পের দুস্থ শ্রমিকদের জন্য সামাজিক সুরক্ষা কার্যক্রম প্রবর্তন (১১শ’ ৩২ কোটি টাকা)।

-সেবা হট নিউজ: সত্য প্রকাশে আপোষহীন

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ

খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)

#buttons=(Ok, Go it!) #days=(20)

Our website uses cookies to enhance your experience. Know about Cookies
Ok, Go it!
To Top