ফুটবল কিংবদন্তি ম্যারাডোনা মারা গেছেন

S M Ashraful Azom
0
ফুটবল কিংবদন্তি ম্যারাডোনা মারা গেছেন


সেবা ডেস্ক: আর্জেন্টিনার ফুটবল লিজেন্ড ডিয়েগো ম্যারাডোনা হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে নিজ বাসায় মারা গেছেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৬০ বছর।
এর আগে, বেশ কয়েক দিন অসুস্থ ছিলেন তিনি। তবে গত মাসে হাসপাতাল থেকে বাসায় ফিরেছিলেন ম্যারাডোনা। বুয়েনস এইরেসের হাসপাতালে তার মস্তিষ্কে জরুরি অস্ত্রোপচার করা হয়। মস্তিষ্কে জমাট বেঁধে থাকা রক্ত (ক্লট) অপসারণ করা হয়েছিল। তখন মাদকাসক্তি নিয়ে ভীষণ সমস্যায় ভুগেছেন ম্যারাডোনা। পুনর্বাসনের জন্য তাকে নেয়া হয়েছিল তিগ্রে-র একটি মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্রে।

১৯৮৬ সালের বিশ্বকাপে একক নৈপুণ্যে আর্জেন্টিনাকে বিশ্বকাপ শিরোপা জিতিয়েছিলেন ম্যারাডোনা। ১৯৯০ বিশ্বকাপেও আর্জেন্টিনাকে ফাইনালে তুলেছিলেন তিনি। সেবার জার্মানির কাছে হেরে শিরোপা হাতছাড়া করতে হয় তাকে। এছাড়া ইউরোপিয়ান ফুটবল ইতালিয়ান ক্লাব নাপোলির অবিসংবাদিত কিংবদন্তি ছিলেন তিনি।

ম্যারাডোনার শুরু থেকে শেষ

বেশ কয়েক দিন অসুস্থ ছিলেন তিনি। তবে গত মাসে হাসপাতাল থেকে বাসায় ফিরেছিলেন ম্যারাডোনা। বুয়েনস এইরেসের হাসপাতালে তার মস্তিষ্কে জরুরি অস্ত্রোপচার করা হয়। মস্তিষ্কে জমাট বেঁধে থাকা রক্ত (ক্লট) অপসারণ করা হয়েছিল। তখন মাদকাসক্তি নিয়ে ভীষণ সমস্যায় ভুগেছেন ম্যারাডোনা।

১৯৬০ সালে আর্জেন্টিনার বুয়েনেস আইরেসের লানুস জন্ম নেন এই বিস্ময় বালক। দরিদ্র পরিবারে বালকটির পড়াশোনা নয়, ফুটবলই ছিল তার নেশা। সারাক্ষণ বল নিয়ে পড়ে থাকতেন। ১০ বছর বয়সে এস্ত্রেয়া রোজার হয়ে খেলতে নামেন মাঠে।

এক নজরে ম্যারাডোনা:

১৯৬০: ৩০ অক্টোবর বুয়েনস আইরেস প্রদেশের লেনাস জেলায় জন্ম।
১৯৭৬: স্থানীয় ক্লাবের হয়ে খেলোয়াড়ি জীবনের অভিষেক।
১৯৭৭: ২৭ ফেব্রুয়ারি আর্জেন্টিনার সর্বকনিষ্ঠ খেলোয়াড় হিসেবে হাঙ্গেরির বিরুদ্ধে মাঠে নামেন। তখন তার বয়স ১৬ বছর ১২০ দিন।
১৯৭৮: বয়সে কম হওয়ার কারণে বিশ্বকাপ দল থেকে বাদ পড়েন।
১৯৭৯: ২ জুন, জাপানে অনুষ্ঠিত যুব বিশ্বকাপে জীবনের প্রথম আন্তর্জাতিক গোল করেন। অধিনায়ক হিসেবে শিরোপাও জয় করেন।
১৯৮২: ২১ বছর বয়সে দলের সঙ্গে ইউরোপে পাড়ি জমান স্পেনে বিশ্বকাপ খেলার জন্য। ব্রাজিলের কাছে ৩-১ গোলে হেরে আর্জেন্টিনা বিদায় নেয়।
১৯৮৪: ইতালীয় ক্লাব নেপোলিতে যোগ দিলেন। ৪.৬৮ মিলিয়ন পাউন্ডের বিনিময়ে।
১৯৮৬: ঈশ্বরের হাতের খ্যাতি আর সঙ্গে সঙ্গে অসাধারণ নৈপুণ্য দেখিয়ে আর্জেন্টিনাকে এনে দিলেন বিশ্বকাপ। ওই বছরই ইউরোপের সেরা ফুটবলারের পুরস্কার পান।
১৯৮৭: নেপোলিকে জেতান ইতালীয় ফুটবলের শিরোপা।
১৯৯০: সন্তানের পিতৃত্ব সংক্রান্ত মামলায় জরিমানা। বিশ্বকাপ ফাইনালে জার্মানির কাছে ০-১ গোলে হেরে যায় আর্জেন্টিনা।
১৯৯১: ড্রাগ টেস্টে পজিটিভ হওয়ার কারণে ইতালি ত্যাগ করতে হয়। কোকেন গ্রহণের অভিযোগে আর্জেন্টিনায় গ্রেফতার হন।
১৯৯২ : স্প্যানিশ ক্লাব সেভিয়াট ফুটবল ক্লাবে যোগ দিলেন। কিন্তু আশানুরূপ ক্রীড়া নৈপুণ্য দেখাতে পারেননি। 
১৯৯৩ : সেভিইয়া ছেড়ে আবারও আর্জেন্টিনায় ফিরে এলেন। যোগ দিলেন স্থানীয় নোয়েল ওল্ড বয়েজ দলে।
১৯৯৪ : আবার ড্রাগ টেস্টে ব্যর্থ হলে এক ম্যাচ পরেই বিশ্বকাপ থেকে বাদ পড়লেন। এরপর আর জাতীয় দলে খেলেননি।
১৯৯৬ : মাদকাসক্তি থেকে মুক্তিলাভের জন্য ক্লিনিকে ভর্তি হলেন।
১৯৯৭ : ৩৭ বছর বয়সে অবসর নিলেন।
২০০০ : হৃদযন্ত্রের সমস্যায় উরুগুয়ের এক হাসপাতালে ভর্তি হলেন।
২০০২ : মাদকাসক্তি থেকে মুক্তি লাভের আশায় কিউবাতে চলে গেলেন।
২০০৩ : ম্যারাডোনা তার ছেলের সঙ্গে দেখা করলেন প্রথমবারের মতো। এর আগে তিনি সবসময় তাকে পুত্র হিসেবে অস্বীকার করে আসছিলেন।
২০০৪ : ১৯ এপ্রিল আরেকবার গুরুতর অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলো তাকে।
২০০৮ : আর্জেন্টিনা ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন ঘোষণা করে ডিসেম্বর ২০১০ থেকে আর্জেন্টিনার জাতীয় ফুটবল দলের কোচ ম্যারাডোনা।
২০১০ : জাতীয় ফুটবল দলের কোচ হিসেবে পদত্যাগ করেন।
২০১১ : আরব আমিরাতের আল ওয়াসেল ফুটবল দলের কোচের দায়িত্ব গ্রহণ করেন।
২০২০: আর্জেন্টিনায়  ৬০ বছর বয়সে চিরবিদায়।


শেয়ার করুন

-সেবা হট নিউজ: সত্য প্রকাশে আপোষহীন

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0মন্তব্যসমূহ

খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)

#buttons=(Ok, Go it!) #days=(20)

Our website uses cookies to enhance your experience. Know about Cookies
Ok, Go it!
To Top