শফিকুল ইসলাম: দাবীকৃত যৌতুকের টাকা দিতে না পারায় নির্যাতনের শিকার হয়ে সন্তান নিয়ে বাবার বাড়িতে আশ্রয় নিলেন সেলিনা আকতার নামের এক গৃহবধু। এঘটনায় গৃহবধু বাদী হয়ে স্বামী শাহ আলমের বিরুদ্ধে কুড়িগ্রাম বিজ্ঞ আদালতে মামলা দায়ের করলে আদালত গ্রেফতারী পরোয়ানা জারী করে। আসামী বর্তমান পলাতক রয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে কুড়িগ্রাম জেলার রৌমারী উপজেলার শৌলমারী ইউনিয়নের বোয়ালমারী গ্রামে।
পরিবার ও মামলা সুত্রে জানা গেছে, শৌলমারী ইউনিয়নের বোয়ালমারী গ্রামের আব্দুস ছালামের মেয়ে সেলিনা আক্তার (২৮)’র সাথে একই ইউনিয়নের গয়টাপাড়া গ্রামের হযরত আলীর ছেলে শাহ আলমের সাথে দেড় লক্ষ টাকা দেনমোহর ধার্য করে ১৯ জানুয়ারী ২০১৫ সালে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়। বিবাহের পর থেকে তাদের ঘর সংসার ভালোই চলছিল। তাদের ঘরে আরাফাত নামের ২ বছর বয়সী ছেলে সন্তান রয়েছে। এরই মধ্যে স্বামী শাহআলম বিদেশ যাবে বলিয়া শ্বশুরের কাছ থেকে ২ লক্ষ ৯০ হাজার টাকা নেয় এবং সে বিদেশ চলে যায়। পরবর্তীতে স্বামী বিদেশ থাকাবস্থায় তার প্ররোচনায় শ্বশুর ও শ্বাশুরী মিলে পুত্রবধুর বাবার কাছে আরো ২ লক্ষ টাকা যৌতুক দাবী করে। এতে সেলিনার বাবা যৌতুকের টাকা দিতে অস্বীকার করলে নেমে আসে তার উপর নির্মম নির্যাতন । গত ২২ মার্চ ২০১৯ সালে সকালের দিকে স্বামীর পরিবারের লোকজন মিলে পুত্রবধু সেলিনাকে বেদম মারপিট করে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেয়। পরে সে বাবার বাড়িতে আশ্রয় নেয়। সেলিনার বাবা ঘটনাটি গ্রাম্য মাতাব্বরের মাধ্যমে সামাজিক ভাবে বিষয়টি মিমাংসার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়ে সেলিনা আকতার বাদী হয়ে ২০১৮ সালের যৌতুক নিরোধ আইনে শাহআলমসহ ৫ জনকে আসামী করে কুড়িগ্রাম বিজ্ঞ আদালতে মামলা দায়ের করেন। এর প্রেক্ষিতে বিজ্ঞ আদালত যৌতুক লোভী শাহআলমের বিরুদ্ধে গ্রেফতারী পরোয়ানা জারী করেন। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত আসামী পলাতক রয়েছে।
নির্যাতনের শিকার সেলিনা আকতার সাংবাদিকে জানায়, আমার স্বামী বিদেশ যাওয়ার সময় বাবার কাছ থেকে ১ লক্ষ ৯০ হাজার টাকা নিয়ে দিয়েছি এবং সে বিদেশ চলে যায়। কিছু দিন পরে স্বামীসহ পরিবারের লোকজন আবারো ২লক্ষ টাকা যৌতুক দাবী করে। আমার বাবা গরিব অসহায়। তাই দাবীকৃত টাকা দিতে না পারায় আমার উপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করতে থাকে এবং বাড়ি থেকে বেড় করে দেয়। এলাকায় কোন বিচার না পেয়ে কুড়িগ্রাম জেলা বিজ্ঞ আদালতে মামলা করেছি। বর্তমান আমি ও আমার সন্তান নিয়ে বাবার বাড়িতে রয়েছে। আমি আদালতে ন্যায় বিচার চাই।
খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।