ধুনটে প্রতিশোধ নিতেই তাবাচ্ছুমকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের পর হত্যা

S M Ashraful Azom
0
ধুনটে প্রতিশোধ নিতেই তাবাচ্ছুমকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের পর হত্যা


রফিকুল আলম,ধুনট (বগুড়া): প্রতিশোধ নিতেই বগুড়ার ধুনট উপজেলায় তাফসীরুল কোরআন মাহফিলে আসা মাহি উম্মে তাবাচ্ছুম (৮) নামে এক শিক্ষার্থীকে বাদাম কিনে দেওয়ার লোভ দেখিয়ে স্থানীয় কলেজ মাঠে নিয়ে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের পর শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনার সাথে জড়িত চার আসামীকে গ্রেপ্তারের পর জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশের কাছে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ ও হত্যার দায় স্বীকার করেছে। শনিবার দুপুরের দিকে বগুড়ার পুলিশ সুপার আলী আশরাফ ভূঞা এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলো, উপজেলার চৌকিবাড়ি ইউনিয়নের নসরতপুর গ্রামের তোজাম্মেল হকের ছেলে বাপ্পি আহম্মেদ (২২), দলিল উদ্দিন তালুকদারের ছেলে কামাল পাশা (৩৪), সানোয়ার হোসেনের ছেলে শামীম রেজা (২২) ও সাহেব আলীর ছেলে লাবলু সেখ (২১)। নিহত মাহি উম্মে তাবাচ্ছুম নসরতপুর গ্রামের বেলাল হোসেন খোকনের মেয়ে এবং পাঁচথুপি-নসরতপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় শ্রেণীর শিক্ষার্থী ছিল।

আসামীরা জানায়, প্রায় ৫ বছর আগে বাপ্পি আহম্মেদের আপন বোন ও  চাচাতো বোনকে শ্লিলতাহানীর চেষ্টা করে নিহত তাবাচ্ছুমের বাবা বেলাল হোসেন খোকন। ওই সময় এসব ঘটনা স্থানীয় ভাবে মিমাংসা করা হয়েছে। কিন্ত তখন থেকেই প্রতিশোধের নেশা চেপে বসে বাপ্পির মাথায়। পর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী ১৪ ডিসেম্বর ওয়াজ মাহফিল অনুষ্ঠান এলাকায় তাবাচ্ছুমকে বাদাম কিনে দেওয়ার লোভ দেখিয়ে বাপ্পি ও তার সহযোগীরা পাশ্ববর্তী হাজী কাজেম জোবেদা টেকনিক্যাল কলেজ মাঠে নিয়ে যায়। সেখানে তারা সংঘবদ্ধ ধর্ষণের পর তাবাচ্ছুমকে শ্বাসরোধে হত্যা করে তার হাত-পায়ের আঙ্গুল প্লাস দিয়ে কেটে বিবস্ত্র লাশ বাঁশঝাড়ের ভেতর ফেলে দেয় ঘাতক চক্র।

মামলা সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার নসরতপুর গ্রামে জান্নাতুল ফেরদৌস কবরস্থানে দুই দিন ব্যাপী তাফসীরুল কোরআন মাহফিল অনুষ্ঠানের আয়োজন করে কবরস্থান কমিটির লোকজন। প্রথম দিন ১৪ ডিসেম্বর রাতে তাবাচ্ছুম দাদা-দাদির সাথে তাফসীর মাহফিল অনুষ্ঠানে যায়। সেখানে দাদা-দাদির সাথে মঞ্চের সামনে বসে তাফসীর মাহফিল শুনতে থাকে। ওই রাত ১০টার দিকে শিশুটি তার দাদার কাছ থেকে ১০টাকা নিয়ে চিপস কেনার জন্য মঞ্চের সামিয়ানার বাইরে গিয়ে নিখোঁজ হয়।

পরে অনেক খোঁজা-খুঁজির এক পর্যায়ে রাত ১টার দিকে তাফসীর মাহফিলের স্থান থেকে প্রায় ২০০ মিটার দুরে একটি বাঁশঝাড়ের ভেতর বিবস্ত্র অবস্থায় শিশুটির মৃতদেহ পাওয়া যায়। স্কুলছাত্রীর মৃতদেহের পাশেই পড়ে ছিল তার পরনের কাপড়। এ ঘটনায় ১৫ডিসেম্বর নিহত তাবাচ্ছুমের বাবা বেলাল হোসেন খোকন ধুনট থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করে। কিন্ত ওই মামলায় কোন আসামীর নাম উল্লেখ ছিল না।

এ অবস্থায় পুলিশ অভিযান চালিয়ে শুক্রবার রাতে নসরতপুর গ্রাম থেকে বাপ্পি আহম্মেদ, কামাল পাশা, শামীম রেজা ও লাবলুকে গ্রেপ্তার করে। এরপর জিজ্ঞাসাবাদে তারা তাবাচ্ছুমকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের পর হত্যার দায় স্বীকার করেছে। আসামীদের বগুড়া আদালতে পাঠানো হয়েছে।

শেয়ার করুন

-সেবা হট নিউজ: সত্য প্রকাশে আপোষহীন
ট্যাগস

Post a Comment

0Comments

খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।

Post a Comment (0)

#buttons=(Ok, Go it!) #days=(20)

Our website uses cookies to enhance your experience. Know about Cookies
Ok, Go it!
To Top