করোনা টিকায় অগ্রাধিকার পাবেন শিক্ষকরা

S M Ashraful Azom
0
করোনা টিকায় অগ্রাধিকার পাবেন শিক্ষকরা


সেবা ডেস্ক: করোনার কারনে বন্ধ থাকা দেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার লক্ষ্যে স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক এবং কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে করোনার টিকা দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে শেখ হাসিনার সরকার। এজন্য সারা দেশের সরকারী-বেসরকারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রায় সাড়ে সাত লাখ শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীর তালিকা পেয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।

টিকাদানে সরকারের সুরক্ষা ওয়েবসাইটে বৃহস্পতিবার থেকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের জন্য আলাদা ক্যাটাগরিতে নিবন্ধনও শুরু হয়েছে।

এর ফলে তালিকায় তথ্য থাকা চল্লিশের কম বয়সী শিক্ষক, কর্মকর্তা- কর্মচারীরাও ওয়েবসাইটে গিয়ে নিবন্ধন করে টিকা নিতে পারবেন। তবে ডেটাবেইজে তথ্য জমা না থাকলে টিকা পাওয়ার ক্ষেত্রে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর কেউ অগ্রাধিকার পাবেন না।

প্রধানমন্ত্রী সব শিক্ষককে টিকা দিতে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে নির্দেশনা দিয়েছেন বলে গত ৯ ফেব্রুয়ারি প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেন জানিয়েছিলেন।

যে কোনো সময় স্কুল খুলে দেওয়া হতে পারে জানিয়ে ওই দিন তিনি বলেছিলেন, “আমরা আজ থেকে সাত দিনের মধ্যে টিকা নেওয়া শেষ করব।”

পরে গত ২২ ফেব্রুয়ারি শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি আগামী ২৭ মে থেকে বিশ্ববিদ্যালয় খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্তের কথা জানান।শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার আগে শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের টিকা দেওয়া হবে বলেও জানিয়েছিলেন তিনি।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, দেশে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকে ৪ লাখ ৬ হাজার ৪৬৯ জন শিক্ষক এবং ১ লাখ ৬২ হাজার ৮৬১ জন কর্মচারী রয়েছেন। আর বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক রয়েছেন ১৫ হাজার ৫২৪ জন।

আর প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, প্রাথমিক পর্যায়ে শিক্ষক রয়েছেন ৬ লাখ ৮৫ হাজার ৪০০ জন।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সেন্টারের (এমআইএস) পরিচালক অধ্যাপক ডা. মিজানুর রহমান জানিয়েছেন, যেসব শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীর তথ্য তালিকায় এসেছে, তারা ওয়েবসাইটে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের আলাদা ক্যাটাগরি দিয়ে রেজিস্ট্রেশন করে টিকা নিতে পারবেন।

“শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে যে তালিকা পাঠানো হয়েছে, সেটি আমরা কমপাইল করে আইসিটি মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়ে দেই। আইসিটি সার্ভারে সেই ডেটা এন্ট্রি করে রাখে। জন্ম তারিখ ও এনআইডি নম্বর মিলে গেলে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কর্মরতরা রেজিস্ট্রেশন ও টিকা নিতে পারবেন।”

এ পর্যন্ত প্রাথমিক, মাধ্যমিক, উচ্চ-মাধ্যমিক, মাদ্রাসা, কারিগরি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় সাড়ে সাত লাখ শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীর তালিকা পেয়েছেন বলে জানান তিনি।

“শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও বিভিন্ন অধিদপ্তর থেকে আমরা যোগাযোগ করে এই তালিকা নিয়ে এসেছি, এভাবে সংগ্রহ করেছি। সংখ্যাটা আরও বাড়তে পারে।”

শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের জন্য কত টিকা বরাদ্দ রয়েছে জানতে চাইলে মিজানুর রহমান বলেন, “এটা তো একটি চলমান প্রক্রিয়া। টিকা আসবে, দিতে থাকব আমরা।

“এ পর্যন্ত আমরা পাইলট, কেবিন ক্রু, প্রাথমিক, মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিকের শিক্ষক, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, বিভিন্ন বন্দরের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ব্যাপারে নির্দেশনা পেয়েছি।”

নিবন্ধন করলেই শিক্ষকরা টিকা নিতে পারবেন বলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক নাসিমা সুলতানা জানিয়েছেন।

তিনি বলেন, “এমনিতেই তো চল্লিশ বছরের উপরের সবাই টিকা পাচ্ছেন। আমাদের কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয়ের খুব কম শিক্ষকের বয়স চল্লিশের কম, শুধুমাত্র প্রাথমিক বা মাধ্যমিক স্কুলে কিছু শিক্ষকের বয়স চল্লিশের কম।

“তারা রেজিস্ট্রেশন করবে, সেজন্য অগ্রাধিকার তালিকায় তাদের নাম আছে। তারা রেজিস্ট্রেশন করবে, টিকা নেবে।”

মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক সৈয়দ গোলাম ফারুক বলেন, “মাননীয় প্রধানমন্ত্রী তো বলেছেন, টিকার ব্যাপারে আমরা একটা অগ্রাধিকার পাবই। শিক্ষকরা আগে থেকেও টিকা পেত। এখন থেকে শিক্ষকদের ক্যাটাগরি থাকায় আরও একটু ভালোভাবে পাবে।

“আমরা একটি তালিকা দিয়েছি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে। শিক্ষকরা এখন এনআইডি কার্ড দিয়ে রেজিস্ট্রেশন করে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে টিকা নিতে পারবেন।”

তিনি বলেন, “সব শিক্ষকই টিকা পাবেন। আমরা চল্লিশ বছরের নিচের সব শিক্ষক-কর্মচারীর তালিকা দিয়েছি, মিলিয়ে মনে হয় ৫ লাখ ৩৫ হাজার আছে। সবার তালিকাই আমরা দিচ্ছি। এখনই টিকা পাচ্ছেন না শিক্ষার্থীরা

বিশ্ববিদ্যলয় খোলার আগে আবাসিক শিক্ষার্থীদেরও টিকা নেওয়ার কথা বলেছিলেন শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি। তবে বিশ্ববিদ্যালয় ও উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ের ১৮ বছরের বেশি বয়সী শিক্ষার্থীদের টিকা দেওয়ার প্রক্রিয়া এখনও শুরু হয়নি।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এমআইএসের পরিচালক মিজানুর রহমান বলেন, “শিক্ষার্থীদের ব্যাপারে এখনও কোনো নির্দেশনা আমাদের কাছে আসেনি। আসলে আমরা দিয়ে দেব।”

শিক্ষার্থীদের টিকার বিষয়ে জানতে চাইলে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক গোলাম ফারুক বলেন, “১৮ বছরের ওপরের শিক্ষার্থীদের টিকার বিষয়ে সরকার কিছু বলেনি। আমরাও এখন শিক্ষার্থীদের কথা বলছি না, শিক্ষক-কর্মচারীদের কথাই বলছি।”

শেয়ার করুন

-সেবা হট নিউজ: সত্য প্রকাশে আপোষহীন

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ

খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)

#buttons=(Ok, Go it!) #days=(20)

Our website uses cookies to enhance your experience. Know about Cookies
Ok, Go it!
To Top