গর্ভাবস্থায় যে ফলগুলো ডেকে আনবে বি প দ

S M Ashraful Azom
0
গর্ভাবস্থায় যে ফলগুলো ডেকে আনবে বি প দ


সেবা ডেস্ক: গর্ভকালীন অবস্থায় মা ও শিশুর স্বাস্থ্য ভালো রাখার জন্য পুষ্টিকর খাবার খাওয়া খুবই জরুরি। এ সময় প্রচুর শাক-সবজি, মাছ-মাংস, পাশাপাশি ফলমূল খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন চিকিৎসকরা।  

কারণ বেশিরভাগ ফলের মধ্যে গর্ভাবস্থায় আপনার দেহের জন্য প্রয়োজনীয় ভিটামিন এবং পুষ্টি থাকে, বিশেষত যখন ভ্রূণের বিকাশ বৃদ্ধি পায়। তবে এমন কিছু ফল রয়েছে, যেগুলো আপনার মধ্যে অস্বস্তি সৃষ্টি করতে পারে। আবার কিছু ফল আছে যেগুলো ভ্রূণকে প্রভাবিত করে বলে জানা গেছে, কিছু আবার গর্ভপাতও ঘটায়। তাই গর্ভাবস্থায় আপনার জন্য ক্ষতিকর হবে এমন ফলমূল এড়িয়ে চলা খুব গুরুত্বপূর্ণ।

গর্ভাবস্থায় আপনার খাওয়া উচিত নয় এমন কিছু ফল সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো-   

আনারস
প্রথম ত্রৈমাসিকের গর্ভাবস্থায় যে ফলটি এড়িয়ে চলবেন তার মধ্যে উচ্চ স্থানে আছে আনারস। কারণ আনারস খাওয়ার ফলে জরায়ুতে তীব্র সংকোচন হতে পারে, যার ফলস্বরূপ একটি গর্ভপাত ঘটতে পারে। আনারসে ব্রোমেলাইন থাকে, এটি একটি এনজাইম যা প্রোটিনকে ভেঙে দেয়। এটি জরায়ু নরম করতে পারে এবং অকাল প্রসব শ্রমের কারণ হতে পারে। এজন্য আপনার গর্ভাবস্থায় অবশ্যই আনারস খাওয়া এড়াতে হবে।

আঙুর
গর্ভাবস্থায় আঙুর এড়ানো ভালো এবং এটি সবুজ ও কালো উভয় আঙুরের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য। এছাড়া আপনার ওয়াইন পান করাও উচিত নয়। যদিও গর্ভাবস্থায় আঙুর খাওয়া সম্পর্কে মিশ্র মতামত রয়েছে, তবে এটি বিশ্বাস করা হয় যে আঙুরের মধ্যে থাকা যৌগিক রেজভেরট্রোল গর্ভবতী মহিলাদের জন্য বিষাক্ত হতে পারে। গর্ভাবস্থায়, কালো আঙুরের ত্বক হজম করতে আপনার পক্ষে অসুবিধা হতে পারে কারণ এই সময় হজম ব্যবস্থা দুর্বল থাকে। এছাড়াও প্রকৃতিতে অত্যধিক আম্লিক হওয়ায় আঙুর সকালের অসুস্থতার কারণ হতে পারে এবং ডায়রিয়া হতে পারে।

তেঁতুল
গর্ভাবস্থায় টক খাওয়ার অভ্যাস হওয়া স্বাভাবিক। আর এর জন্য তেঁতুলকেই প্রথম পছন্দ হিসেবে বেছে নেন। তবে গর্ভাবস্থায় তেঁতুল খাওয়া ভালো হওয়ার চেয়ে বেশি ক্ষতিকারক। তেঁতুল দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থতা এবং বমি বমি ভাবের প্রতিষেধক হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। কিন্তু তেঁতুলের মধ্যে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি থাকায়, যদি এটি অতিরিক্ত পরিমাণে খাওয়া হয় তবে এটি আপনার দেহে প্রোজেস্টেরনের উৎপাদনকে দমন করতে পারে। প্রজেস্টেরনের এই নিম্ন স্তরের ফলে গর্ভপাত হতে পারে, অকাল প্রসব হতে পারে এবং এমনকি ভ্রূণের কোষের ক্ষতি হতে পারে। তাই গর্ভাবস্থায় বিশেষত প্রথম ত্রৈমাসিকের সময় খুব বেশি তেঁতুল খাবেন না।

পেঁপে
পেঁপেতে প্রচুর পরিমাণে পুষ্টি এবং ভিটামিন থাকলেও গর্ভবতী মহিলাদের জন্য এটি মোটেও উপযুক্ত নয়। পেঁপে আপনার দেহের তাপমাত্রা বাড়িয়ে তুলতে পারে, যা আপনার অস্বস্তির কারণ হয়ে দাঁড়াবে। এছাড়াও ফলটি ল্যাটেক্স সমৃদ্ধ যা জরায়ুর সংকোচন, রক্তপাত এবং এমনকি গর্ভপাত ঘটাতে পারে। এটি ভ্রূণের বিকাশকেও বাধাগ্রস্ত করতে পারে। তাই গর্ভাবস্থায় পেঁপে খাওয়া উচিত নয়।  

কলা
কি কলার নাম দেখে অবাক হচ্ছে? অবাক হলেও এই তথ্য সঠিক। যদিও গর্ভাবস্থায় কলা খাওয়া নিরাপদ হিসেবে বিবেচিত হয়, তবে কিছু ক্ষেত্রে এই ফলটি এড়ানো উচিত। যেসব মহিলারা অ্যালার্জিতে আক্রান্ত হন এবং ডায়াবেটিস বা গর্ভকালীন ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হন তাদের কলা না খাওয়ার পরামর্শ দেয়া হয়। কলাতে চিটিনেস থাকে, একটি ল্যাটেক্স জাতীয় উপাদান যা একটি পরিচিত অ্যালার্জেন। এটি শরীরের উত্তাপ বাড়ায়। তাই চিটিনেসে অ্যালার্জিযুক্ত মহিলাদের কলা থেকে দূরে থাকা উচিত। এছাড়াও, কলাগুলোর মধ্যে প্রচুর পরিমাণে চিনি থাকে, তাই ডায়াবেটিস রোগীদের কলা আরিয়ে চলা উচিত।

তরমুজ
তরমুজ মানবদেহের জন্য দারুণ উপকারী একটি ফল। কারণ এটি হাইড্রেশন নিয়ন্ত্রণ করার পাশাপাশি দেহ থেকে সমস্ত বিষাক্ত পদার্থ বের করে দিতে সক্ষম। গর্ভবতী মায়েদে জন্যও তরমুজ খাওয়া ভালো। তবে এটির কিছু ক্ষতিকর দিকও রয়েছে। যদি আপনি তরমুজ অতিরিক্ত খান তবে এতে থাকা চিনিযুক্ত উপাদানগুলো আপনার রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা বাড়িয়ে তুলতে পারে। কখনো কখনো তরমুজের মূত্রবর্ধক বৈশিষ্ট্যগুলো আপনার শরীর থেকে টক্সিনের সঙ্গে প্রয়োজনীয় পুষ্টিগুলোও বের করে দিতে পারে। এছাড়াও এটি খেলে ঠাণ্ডা লাগার ভয় থাকে। এজন্যই গর্ভাবস্থায় তরমুজ না খাওয়ার পরামর্শ দেয়া হয়।

খেজুর
খেজুর ভিটামিন এবং প্রয়োজনীয় পুষ্টি সমৃদ্ধ একটি ফল। তবে গর্ভবতী মহিলাদের প্রায়শই খেজুর না খাওয়ার পরামর্শ দেয়া হয়। কারণ খেজুর আপনার শরীরকে উত্তপ্ত করে তোলে এবং জরায়ুর পেশীগুললোকে নিয়ন্ত্রণ করে। এর ফলে জরায়ুতে সংকোচন হতে পারে। তাই প্রতিদিন এক বা দুইটি খেজুর খাওয়ায় সঠিক, এর বেশি খেলে কিছু জটিলতা হতে পারে।

হিমায়িত বেরি
গর্ভবতী মহিলাদের হিমায়িত বেরি বা এমন কিছু এড়ানো উচিত, যা দীর্ঘ সময় ধরে শুকনো বা হিমায়িত হয়েছে। এর বিকল্প হিসেবে তাজা ফল খাওয়া ভালো। কারণ হিমায়িত করার ফলে বেরিগুলোর মূল স্বাদ ও পুষ্টি নষ্ট হয়ে যায়। ফলে এমন খাবার খাওয়া আপনার ও আপনার সন্তান উভয়ের পক্ষেই বিষাক্ত হতে পারে।  

ক্যানড টমেটো
গর্ভাবস্থায় টিনজাত খাবার এড়িয়ে চলা ভালো। এক্ষেত্রে ক্যানড টমেটোও এড়িয়ে চলতে হবে। কারণ এই ধরণের খাবার আপনার ও আপনার শিশু উভয়ের পক্ষেই বিষাক্ত এবং সেগুলো খেলে নানান জটিলতা দেখা দিতে পারে।   



শেয়ার করুন

-সেবা হট নিউজ: সত্য প্রকাশে আপোষহীন
ট্যাগস

Post a Comment

0Comments

খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।

Post a Comment (0)

#buttons=(Ok, Go it!) #days=(20)

Our website uses cookies to enhance your experience. Know about Cookies
Ok, Go it!
To Top