উল্লাপাড়া প্রতিনিধি: প্রশাসনকে বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া উপজেলায় করতোয়া নদী থেকে দীর্ঘদিন ধরে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে চলেছে গোলাম কিবরিয়া আলম নামের এক প্রভাবশালী আওয়ামী কৃষকলীগ নেতা। তিনি স্থানীয় সলপ ইউনিয়ন আওয়ামী কৃষকলীগের সভাপতি। সরকারের কোন রকম অনুমতি ছাড়াই অবাধে নদী থেকে বালু ও মাটি উত্তোলন করে বিক্রি করে চলেছে এই ক্ষমতাসীন নেতা।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উল্লাপাড়া উপজেলা শহর থেকে জেলা শহরের সাথে যোগাযোগের জন্য স্থানীয় সরকার বিভাগ বহমান করতোয়া নদীর উপর নির্মাণ করেছেন সোনতলা সড়ক সেতু। সেতুর পূর্ব পাশে সোনতলা ও পশ্চিম পাশে খান সোনতলা গ্রাম। সেতুর দক্ষিণে অদুরেই তারাবাড়িয়া গ্রামের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ২০০ মিটার দুরে বেকো বসিয়ে নদীর পার ও নদীর গভীর থেকে লক্ষ লক্ষ টাকার বালু ও মাটি উত্তোলন করে অবাধে বিক্রি করা হচ্ছে। প্রতিদিন উপজেলার বিভিন্ন জায়গায় ১০০ থেকে ১৫০ ট্রাক বালু বিক্রি করা হয়। প্রতি ট্রাক বালু ১২০০ থেকে ১৬০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এ যেন দেখার কেউ নেই। এই প্রভাবশালী নেতার ভয়ে কেউ মুখ খুলতে নারাজ।
২০১০ সালে বাংলাদেশ সরকারের স্থানীয় সরকার বিভাগ থেকে করতোয়া নদীর উপর ১০৬ কোটি টাকা ব্যয়ে ৮ টি পিলার সমম্বয়ে সোনতলা সড়ক সেতু নির্মাণ করা হয়। সরকারের প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা সেতুটি উদ্বোধন করেন। পাবনা-ঢাকাগামী গণপরিবহনগুলি যাতে করে উল্লাপাড়া উপজেলার পাইকপাড়া ঢালু হয়ে সরাসরি সিরাজগঞ্জ কড্ডার মোড়ে উঠে স্বল্প সময়ের মধ্যে ঢাকা পৌছিতে পারেন মুলত সে কারণেই সেতুটি নির্মাণ করা হয়েছিল। কিন্তু যাতায়াতের রাস্তাটির প্রশস্তা কম বলে ছোট ছোট কার ও মাইক্রোবাসগুলো এই পথে যাতায়াত করে থাকে প্রতিনিয়ত। এভাবে এই করতোয়া নদীতে বালু উত্তোলনের কাজ চলমান থাকলে সংলগ্ন স্কুল, বসতবাড়ি, ফসলিজমি, সড়কসহ সেতু ধ্বংসের আশংকা করছে এলাকবাসি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন এলাকাবাসি জানান, নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনকারি জনৈক ব্যক্তি ক্ষমতাসীন দলের প্রভাবশালী নেতা হওয়ায় তার বিরুদ্ধে কোন ব্যক্তি কথা বলতে সাহস করেন না। সংশ্লিষ্ট কর্তাব্যক্তিদের সাথে যোগসাজস করে দীর্ঘ দিন ধরে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে চলেছেন আলম নামের এই প্রভাবশালী নেতা।
বালু উত্তোলনকারি গোলাম কিবরিয়া আলম জানান, প্রায় ৪ বছর ধরে করতোয়া নদী থেকে বালু উত্তোলন করে আসছি। কিসের আবার অনুমতি লাগবে। নদী থেকে বালু উত্তোলন করলে কোন অনুমতির দরকার হয় না। তিনি আরো জানান, বালু উত্তোলনে সেতুর কোন ক্ষতি হওয়ার সম্ভবনা নেই। আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আমি চেয়ারম্যান পদে প্রার্থীতা ঘোষনা করায় এলাকার কিছু অসাধু ব্যক্তি আমার বিরুদ্ধে নানা ষড়যন্ত্রে মেতে উঠেছে।
উল্লাপাড়া সহকারি কমিশনার (ভুমি) নাহিদ হাসান খান জানান, সরেজমিনে তদন্ত করে বালু উত্তোলন কাজে নিয়োজিত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।