মোঃ ফয়জুর রহমান, কালিয়াকৈর (গাজীপুর) প্রতিনিধি: গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার সফিপুর আইডিয়াল পাবলিক স্কুলে ২০২০ সালের জানুয়ারি মাসে প্লে শ্রেণিতে ভর্তি হয় তাসকিয়া বিনতে কায়েস। ভর্তির পর স্কুলের শ্রেণিকক্ষে ক্লাস করার সুযোগ হয়নি এই ছোট্ট শিশুর। অনলাইনেই শুরু হলো কোমলমতি এরকম হাজারো শিশুর শিক্ষা জীবন।
করোনার প্রকোপে ১৭ মার্চ, ২০২০ খ্রিঃ থেকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। দীর্ঘ এ বন্ধে তাসকিয়ার মতো সকল শিশুর প্রশ্ন "পড়ালেখা কি মোবাইলেই হয় আম্মু। আমাদের কি স্কুলে যেতে হবে না কোনোদিন। মোবাইলে পড়া শিখতে ভালো লাগে না। মোবাইলে শুধু কার্টুন দেখতে ও গেইম খেলতে ভালো লাগে।" তাসকিয়া অনলাইনে শেখার সুযোগ পেলেও নানা প্রতিকূলতার কারণে সেটাও আবার পাচ্ছে না দেশের বেশিরভাগ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা। সেসব বাচ্চাদের নিয়ে দুশ্চিন্তায় ভুগছেন তাদের অভিভাবক।
শিশুকাল হচ্ছে তাদের আগামী দিনের জন্য সুযোগ্য করে গড়ে তোলার উৎকৃষ্ট সময়। তারা কাদামাটির মতো, তাদের যেভাবে গড়ে তোলা যাবে তারা সেভাবেই গড়ে উঠবে। শিশুদের তৈরি করার জন্য এ সময়ের শিক্ষার ভূমিকা সবচেয়ে বেশি। বর্ণমালা থেকে শুরু করে পরবর্তী ধাপে যে শিক্ষা, সেটার ভিত যদি মজবুত হয় তাহলে শিক্ষার্থীর পরবর্তী জীবন স্বচ্ছ হয়। কোমলমতি ছোট্ট শিশুদের অনলাইনে শুরু হওয়া শিক্ষা কার্যক্রম তাদের শিক্ষা জীবনে কী প্রভাব ফেলবে এ ব্যাপারে নানা প্রশ্ন জনমনে।
সফিপুর আইডিয়াল পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজের প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান মোঃ হাবিবুর রহমান বলেন, 'শিশুদের নৈতিক শিক্ষা ও আদর্শ মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার বিকল্প নেই। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান দীর্ঘদিন বন্ধ থাকায় বাচ্চাদের উপর অনেকটাই প্রভাব ফেলবে। প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার অভাবে শিশুদের আচরণগত পরিবর্তনও লক্ষ্য করা যাচ্ছে। শিশুকে সুশিক্ষায় শিক্ষিত করে গড়ে তুলতে শ্রেণিকক্ষের পাঠদানের ভুমিকা অনস্বীকার্য।' জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু সরকারি হাই স্কুলের সিনিয়র শিক্ষক মোঃ বশির উদ্দিন বলেন, 'অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রমে শিক্ষার্থীরা পাঠ্যবই মুখস্থ করে নির্দিষ্ট সিলেবাস শেষ করে মাত্র কিন্তু শিশুর পারিপার্শ্বিক অন্যান্য যে জ্ঞান অর্জন দরকার সেটা বাকি থেকে যায়। যেসব শিশুর শিক্ষা জীবন একেবারে শুরুর দিকে তাদের বেলায় নেতিবাচক প্রভাব একটু বেশি পড়বে বলে মনে করা হচ্ছে।'
শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বন্ধ আর না বাড়িয়ে 'স্বাস্থ্যবিধি মেনে অবিলম্বে খুলে দেওয়ার জোড়ালো দাবি জানান কালিয়াকৈর উপজেলার শিক্ষক, শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও সচেতন মহল। শিক্ষার্থীদের কোলাহলে উজ্জীবিত হোক সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, শিক্ষার্থীদের মাঝে অতিসত্বর ফিরে আসুক শ্রেণি শিক্ষার প্রতিযোগিতা এমনটাই প্রত্যাশা করেন সর্বস্তরের জনগণ।
খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।