ধুনটে মৃৎশিল্পীদের জীবনে জাঁকিয়ে বসেছে অন্ধকার

S M Ashraful Azom
0
ধুনটে মৃৎশিল্পীদের জীবনে জাঁকিয়ে বসেছে অন্ধকার


রফিকুল আলম, ধুনট (বগুড়া): বগুড়ার ধুনট উপজেলায় গ্রামের মানুষ এক সময়ে মাটির তৈরি হাঁড়ি, বাসন, কলস, বদনা, মুড়ি ভাজার খোলাসহ বিভিন্ন সামগ্রী ব্যবহার করতেন গৃহস্থালির কাজে।

 এসব পণ্য সুনিপুণ হাতে তৈরি হতো কুমারপল্লীতে। নানা সমস্যা সংকটের পরও যারা এখনো এ পেশার সঙ্গে রয়েছেন তাদের মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা হয়ে দাঁড়িয়েছে করোনাভাইরাস। 

করোনা সংক্রমণ ও লকডাউনের প্রভাবে মৃৎশিল্পীদের জীবনে জমাটবাঁধা অন্ধকার আরো জাঁকিয়ে বসেছে।

সরেজমিন দেখা গেছে, উপজেলার বিলকাজিুলী ও পেঁচিবাড়ি গ্রামে পাল সম্প্রদায়ভুক্ত প্রায় ৫০০ পরিবারের বসবাস। একসময় তাদের জীবন কাটতো মৃৎশিল্পকে ঘিরে। পরিবারের সবাই মিলে গৃহস্থালী নানা সামগ্রী তৈরি করে সেগুলো হাট-বাজার ও গ্রামে বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করতেন। যুগের পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে মৃৎ-সামগ্রীর চাহিদা ক্রমান্বয়ে কমতে থাকায় জীবনযুদ্ধে টিকে থাকতে তাদের অনেকেই পৈতৃক পেশা ছেড়ে দিতে বাধ্য হচ্ছেন। এরপরেও যারা বংশগত ঐতিহ্য রক্ষায় মনের টানে এই পেশাতেই নিজেদের সম্পৃক্ত রেখেছেন, বৈশ্বিক মহামারি করোনার কারণে তারা নিতান্তই বিপাকে পড়েছেন।

চৈত্রসংক্রান্তি, পহেলা বৈশাখকে ঘিরেই মূলত মৃৎ সামগ্রীর উল্লেখযোগ্য বেচাকেনা হয়। বছরের বেশির ভাগ আয় আসে সে সময়েই। কিন্তু, এ বছর করোনা রোধে গ্রামীণ ঐতিহ্যবাহী সব অনুষ্ঠান বিশেষ করে চৈত্রসংক্রান্তি, বৈশাখী মেলা অনুষ্ঠিত না হওয়ায় বিক্রি তো হয়নি। এক বছর ধরে করোনায় দোকানপাট বন্ধ থাকায় হাঁড়ি-পাতিল বিক্রি করতে না পাড়ায় বিপাকে পড়েছে এই শিল্পের সাথে জড়িতরা। কারখানায় ছাঁচদানির চাকা ঘুরছে না। রঙ তুলির ছোঁয়াও নেই। ভাটির (আগুনে পোড়ানোর চুলা) আগুন বন্ধ হয়েছে আরো আগে। সব মিলিয়ে কষ্টে দিনাতিপাত করছেন পাল সম্প্রদায়ের লোকজন।

বিলকাজুলী পাল পাড়ার মাখন চন্দ্র জানান, এই কাজ করে জীবন অতিবাহিত করা কঠিন হয়ে পড়েছে। সম্প্রদায়ের অনেকেই বাধ্য হয়ে এই পেশা ছেড়ে অন্য পেশায় চলে যাচ্ছেন। বিশেষ করে তরুণরা এই শিল্পকর্মে আগ্রহ বোধ করছে না। আর্থিকভাবে তেমন লাভবান হওয়ার সুযোগ নেই, তাই। কয়েক বছর আগেও মৃৎ সামগ্রীর চাহিদা ভালো ছিল বলে বর্ষার সময়টা ছাড়া সারা বছরই ব্যস্ত সময় কাটাতে হতো। কিন্তু করোনা পরিস্থিতির কারণে চরম প্রতিকূল সময়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। আয় রোজগারের পথ একরকম বন্ধই হয়ে গেছে। করোনার প্রাদুর্ভাবে কর্মহীন হয়ে পড়লেও সরকারি প্রণোদনা কিংবা অন্যান্য সহায়তা মেলেনি বলেও জানান তিনি।  



শেয়ার করুন

-সেবা হট নিউজ: সত্য প্রকাশে আপোষহীন
ট্যাগস

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0মন্তব্যসমূহ

খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)

#buttons=(Ok, Go it!) #days=(20)

Our website uses cookies to enhance your experience. Know about Cookies
Ok, Go it!
To Top