সেবা ডেস্ক: ১৯৭৫ সালের ১৪ জুন যুদ্ধ বিধ্বস্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি ও জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নিজ হাতে উদ্বোধন করেছিলেন বেতবুনিয়া ভূ-উপগ্রহ কেন্দ্রটি। সে সময় একটি সদ্য স্বাধীন প্রাপ্ত দেশের তথ্য প্রযুক্তি উন্নয়ন এবং স্বাধীন দেশে স্বাধীনভাবে তথ্য প্রযুক্তির উন্নত যোগাযোগ স্থাপনের জন্য চালু করা হয় দেশের প্রথম এই ভূ-উপগ্রহ কেন্দ্রটির।
ইতিহাসের প্রেক্ষাপট থেকে জানা যায়, বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের মিত্র শক্তি ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী জাতির জনককে ভারতের ভূ-উপগ্রহ কেন্দ্র ব্যবহারের মাধ্যমে তথ্য প্রযুক্তির কাজ সম্পাদনের কথা বললেও সেই সময় জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এই আহবান বিনয়ের সাথে প্রত্যাখ্যান করে নিজ দেশে স্বাধীনভাবে তথ্য প্রযুক্তির উন্নয়নের সুদূর প্রসারী চিন্তা ভাবনার মাধ্যমেই স্বাধীন দেশে এই ভূ-উপগ্রহ কেন্দ্রটি চালু করেন।
প্রায় ১২৮ একরের জায়গার ওপর স্থাপিত এই কেন্দ্রটি, ঊর্ধকাশে স্থাপিত কৃত্রিম উপগ্রহের মাধ্যমে যোগাযোগ রক্ষা করার ব্যবস্থা সচল হয়েছিল। এই কেন্দ্রের মাধ্যমে ১১টি দেশের সঙ্গে টেলিফোন ডাটা কমিউনিকেশন, ফ্যাক্স, টেলেক্স ইত্যাদি আদান-প্রদান করা হয়। প্রায় ৩৫ হাজার ৯০০ কিলোমিটার ঊর্ধ্বাকাশে অবস্থিত কৃত্রিম উপগ্রহের মাধ্যমে শক্তিশালী অ্যান্টেনা দিয়ে বার্তা/তথ্য আদান-প্রদানের কাজ সম্পাদিত হয়।
পরবর্তী দীর্ঘ সময়ে এর উন্নয়নের আর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয় নি। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির জনককে সপরিবারের নৃশংসভাবে হত্যার পর ক্ষমতায় আসীন পরবর্তী স্বৈরাচারী সরকার এবং ১৯৯০-এর পরবর্তীতে দু’দফায় দেশ পরিচালনায় এসে বিএনপি-জামাত জোট সরকার বঙ্গবন্ধুর স্মৃতি বিজড়িত এই ভূ-উপগ্রহ কেন্দ্রটিকে কার্যত অচল করে দেয় বলে অভিযোগ করেছেন এই কেন্দ্রের সিবিএ নেতৃবৃন্দ।
২০১৮ খ্রিষ্টাব্দে বাংলাদেশের নিজস্ব ভূ-উপগ্রহ 'বঙ্গবন্ধু কৃত্রিম উপগ্রহ' ঊর্ধ্বাকাশে স্থাপনের পর, বেতবুনিয়া ভূ-উপগ্রহ কেন্দ্রকে দ্বিতীয় স্টেশন হিসেবে নির্ধারণ করা হয়েছে।
ফলে জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন বর্তমান সরকারের আমলেই ভূ-উপগ্রহটি নুতন করে প্রাণ সঞ্চার ফিরে পেয়েছে।
খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।