ও মেঘ দল আমার চোখে পাঠাও কিছু জল/ আমি আরেকবার কাঁদি/ বুকের ভেতর চিতা জ্বলে/ চোখে কষ্ট গাঁথা /ও মেঘ দল আমার চোখে পাঠাও কিছু জল/ আমি কষ্ট নিভাই চোখের জলে/ শ্রাবণের ধারার মতো পড়ুক ঝরে জল অবিরল। এখন শোকের মাস। এই শেষ শ্রাবণে জনককে হারানোর বেদনার্ত বুকে ঢালো শ্রান্তির জলধারা। আমাদের আকাশে ভাসছে কষ্ট নামের মেঘ, চোখে টলমল কান্না নামের বৃষ্টি, বুকের ভেতর আকুতিভরা নীল বেদনার জমাট বাঁধা তুষার পড়ুক ঝরে এই শ্রাবণে। শেষ শ্রাবণের এই লগ্নে পুরো দেশই যেন শোকে মুহ্যমান। সর্বত্র উড়ছে শোকের পতাকা। অলি-গলি পর্যন্ত ছেয়ে গেছে জনকের তরে পোস্টার প্লাকার্ডে। লাল, সাদা আর কালো কালির লেখাতে শোকবাণী ছড়াচ্ছে শোকের ছায়া। বঙ্গবন্ধু মৃত্যুঞ্জয়ী। স্বাধীনতায় বিশ্বাসী প্রতি বাঙালির হৃদয়ে তাঁর স্মৃতি যে অমলিন, শোকের মাস আগস্টে প্রতিটি স্থানে তার প্রতিফলন ঘটেছে।
শেক্সপিয়ার বলেছিলেন, এ জগতে কেউ কেউ জন্মগতভাবে মহান, কেউ মহত্বের লক্ষণ নিয়ে জন্মগ্রহণ করেন, আবার কেউ স্বীয় প্রচেষ্টায় মহানুভবতা অর্জন করেন। এই ৩টি বৈশিষ্ট্যই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য।
কিউবার প্রেসিডেন্ট বিপ্লবী ফিদেল কাস্ত্রোর কথাই ধরুন। তিনি বলেছিলেন, ‘‘আমি হিমালয় দেখিনি, আমি শেখ মুজিবকে দেখেছি।’’
ব্রিটিশ সাংবাদিক ডেভিড ফ্রস্ট (১৯৭২ সালের এক সাক্ষাৎকারে) বঙ্গবন্ধুকে জিজ্ঞাসা করেছিলেন, ‘‘আপনার শক্তি কোথায়?''
বঙ্গবন্ধু সে প্রশ্নের উত্তরে বলেছিলেন, ‘‘আমি আমার জনগণকে ভালোবাসি।” আর আপনার দুর্বল দিকটা কী? বঙ্গবন্ধুর উত্তর ছিল, “আমি আমার জনগণকে খুব বেশি ভালোবাসি।” এই হলেন বঙ্গবন্ধু।
জনগণের অন্তর্নিহিত শক্তির ওপর অপার আস্থা-বিশ্বাস, মানুষের প্রতি নিঃশর্ত ভালোবাসা, মমত্ববোধ, সহমর্মিতার বিরল দৃষ্টান্ত সমৃদ্ধ মানুষ বঙ্গবন্ধু। বাংলাদেশ, বঙ্গবন্ধু আর মুক্তিযুদ্ধ এই শব্দ তিনটি মূলত সমার্থক। এই তিনটির যে কোনো একটিকে আলাদা করে বিশ্লেষণ করার কোনো সুযোগ নেই। এই তিনটি শব্দের যে কোনো একটি যখন আক্রান্ত হয়েছে, তখনই বাঙালির জীবনে জাতীয় দুর্যোগ নেমে এসেছে।
স্বাধীনতা তো দিলেন, কিন্তু আসলে কী চেয়েছিলেন বাংলাদেশের এই বন্ধু? কেমন বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখেছিলেন তিনি? গড়তে চেয়েছিলেন কোন বাংলাদেশ? আমার মতে, বঙ্গবন্ধু চেয়েছিলেন তাঁরই উদ্ভাবিত দেশের মাটি থেকে উত্থিত অথবা স্বদেশজাত উন্নয়নের দর্শনের ওপর ভিত্তি করে এমন এক বাংলাদেশ বিনির্মাণ করতে, যে বাংলাদেশ হবে সোনার বাংলা; যে বাংলাদেশে দুঃখী মানুষের মুখে হাসি হবে চিরস্থায়ী; যে বাংলাদেশ হবে চিরতরে ক্ষুধামুক্ত-শোষণমুক্ত, যে বাংলাদেশে মানব-মুক্তি নিশ্চিত হবে; যে বাংলাদেশে নিশ্চিত হবে মানুষের সুযোগের সমতা; যে বাংলাদেশ হবে বঞ্চনামুক্ত-শোষণমুক্ত-বৈষম্যমুক্ত-সমতাভিত্তিক-অসা¤প্রদায়িক দেশ; যে বাংলাদেশ হবে সুস্থ-সবল-জ্ঞান-চেতনাসমৃদ্ধ দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ মানুষের দেশ।
বঙ্গবন্ধু বরাবরই সকল মানুষের কথা ভাবতেন। তিনি ব্যক্তি হিসেবে বাংলার সংখ্যাগরিষ্ঠ খেটে খাওয়া মানুষের প্রতিনিধি ছিলেন।
উপমহাদেশের রাজনীতির নিয়ন্ত্রণে সুদীর্ঘকাল যে নবাব বংশের সন্তান, বিলাত ফেরত ব্যারিস্টার ও গজদন্তমিনারবাসী উচ্চবিত্তের আধিপত্য ছিল বঙ্গবন্ধু তার উজ্জ্বলতম ব্যতিক্রম।
সপ্তদশ শতকের ইংল্যান্ডে রাজতন্ত্রের উৎখাতে যে বিপ্লব সাধিত হয় তাকে পার্লামেন্টারি ডেমোক্রেসির একটি গুরুত্বপূর্ণ পদেক্ষপ বিবেচনা করা যেতে পারে। কিন্তু অন্য অনেক বিপ্লবের মতোই এটিও ছিল একটি অসম্পূর্ণ খÐিত ঘটনা।
ক্রমওয়েল রাষ্ট্রের নেতৃত্ব দিতে চেয়েছিলেন বহুবিত্তশালী বণিক শ্রেণিকে, লিলবার্ন শহরবাসী স্বল্পবিত্ত বা মধ্যবিত্ত শ্রেণিকে, উইনস্ট্যানলি ভ‚মিহীন জনতাকে। তাই গণতন্ত্রের ইতিহাসে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের মতো এরকম সকল স¤প্রদায়ের মানুষের একযোগে অংশগ্রহণ কোনো বিপ্লবের তুলনা পাওয়া যাবে না।
গান্ধিজী যখন অহিংস অসহযোগের ডাক দিয়েছিলেন তখন এইচ আর এ-এর মতো র্যাডিক্যাল গ্রæপের সদস্যরা জঙ্গি আন্দোলন চালিয়েছিলেন, শহীদ হয়েছিলেন ভগত সিংহের মতো নেতারা। নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বসু হংকংয়ে সশস্ত্র বাহিনী গড়ে তুলেছিলেন।
কিন্তু একাত্তরে বাঙালি জাতির মধ্যে নীতি বা নেতৃত্বের কোনো সংকটই উপস্থিত হয়নি কেবল শেখ মুজিবের মতো ক্যারিশমাটিক নেতার উপস্থিতির কারণে।
বাঙালি, বাংলাদেশ আর বঙ্গবন্ধুকে আলাদা করে দেখা যাবে না। বাংলাদেশ নামক যে রাষ্ট্র তার ভৌগোলিক উপস্থিতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের জীবনব্যাপী সাধনারই ফল। প্রকৃত অর্থে বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় অস্তিত্ব একাত্তরের পূর্বে কখনো প্রতিষ্ঠা পায়নি।
সিরাজউদ্দৌলাকে বলা হয় বাংলার শেষ স্বাধীন নবাব। কিন্তু তিনি জনগণকে তাঁর রাজনৈতিক কর্মকাÐে অন্তর্ভুক্ত করতে পারেননি। বলা হয়ে থাকে পলাশীর প্রান্তরের চারপাশের প্রত্যেকটি লোক যদি একটি করে ইটও ছুড়ত তাহলে লর্ড ক্লাইভের দখলদার বাহিনীর পক্ষে জয়লাভ করা সম্ভব হতো না।
তাই, যে বাংলাদেশ জনগণের রাজনৈতিক সচেতনার ওপর ভিত্তি করে পৃথিবীর মানচিত্রে প্রতিষ্ঠা পেয়েছে তাঁর রূপকার জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব। মুজিব হচ্ছে সেই সোনার কাঠি যা বাঙালি নামক ঘুমন্ত জাতিকে জাগিয়েছিল। তাই বঙ্গবন্ধু হত্যা সেই জাতিকে ঘুম পাড়ানোর ঘৃণ্য অপচেষ্টা। কোনো জাতিকে যদি শৈশবেই দাবিয়ে রাখা হয় তাহলে পরিণত অবস্থায় সে জাতি ক্ষতধারা হবে এটাই স্বাভাবিক।
পনেরই আগস্ট বঙ্গবন্ধু হত্যার মাধ্যমেই মৃত্যু ঘটে বাঙালি জাতির উচ্চাক্ঙাক্ষা ও স্বপ্নের। ঘাতকদের হাতে বড়ই নির্মমভাবে সপরিবারে নিহত হয়েছিলেন জাতির জনক। বাঙালির স্বাধীনতার অন্যতম তীর্থস্থান ধানমন্ডির ৩২ নাম্বার সড়কের ৬৭৭ নাম্বার বাড়িতে যেখানে সে রাতে আগামী দিনের কর্মস‚চি দেখে ক্লান্ত বঙ্গবন্ধু ঘুমিয়ে ছিলেন।
হঠাৎই একদল বিপথগামী তরুণ সেনা ট্যাঙ্ক দিয়ে ঘিরে ফেলে বাড়িটি। যে বাড়ি একদিন একই পথে নিয়ে এসেছিল বাঙালী জাতিকে, সেই বাড়িটিই বাঙালীকে কাঁদালো অঝোর ধারায়। বাড়িটির ব্যালকনিতে দাঁড়ানো দৃঢ়চেতা যে নেতার অঙ্গুলি হেলনে বুকের ভেতর জ্বলতো মুক্তির দ্রোহ, ঘাতক নরপিশাচদের কারণে সেই পিতাই মুখথুবড়ে পড়লেন সেই বাড়ির মেঝেতেই। সিঁড়িতে গড়িয়ে গেল রক্তের ধারা। একে একে নিহত হন বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্য নিবেদিত প্রাণ এক পরিবারের সদস্যরা। সুবহে সাদেকের সময় পবিত্র আজানের ধ্বনিকে বিদীর্ণ করে ঘাতকদের মেশিনগানের ঝাঁক ঝাঁক গুলি। বাড়িটির প্রতিটি তলায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে মানুষের রক্ত, মগজ, শরীরের ছিন্ন অংশ! জানালার কাঁচ, ঘরের ছাদ-দেয়াল, রক্তচ্ছটায় রক্তিমবর্ণ! গুলির আঘাতে বাড়ীর দেয়ালগুলো ঝাঁঝরা, আসবাবপত্রগুলো যেন রক্ত সাগরে ভাসছে, সমগ্র বাড়িটিই যেন এক রক্তগঙ্গা, দোতলা থেকে সিড়ি বেয়ে নেমে আসছে রক্তের স্রোতধারা! সে রক্ত কার? সিড়ির উপর নিথর পড়ে আছেন স্বাধীনতার সংগ্রামের মহানায়ক, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। ঘাতকের বুলেটে তাঁর বুক ও তলপেট ঝাঁঝরা! তাঁর চেক লুঙ্গি ও সাদা পাঞ্জাবীটি রক্তে রঞ্জিত!
১৫ আগস্টের সেই কালো রাতে তিনটি গবির্ত পরিবারের প্রতিটি লোককে হত্যা করা হয়েছিলো। এত খুন, এত রক্তপাত, এত লাশ, পৃথিবীর ইতিহাসে নারকীয়তার এমন নজির আর আছে কিনা, জানা নেই আমার। ঘটনার আকস্মিকতা ও বীভৎশতায় বিদীর্ণ হৃদয় জনগণ স্তম্ভিত, হতবাক হয়ে পড়েছিল; ভীত কম্পিত শিশু রাসেল।
বাড়ির লোকদের বুকে মুখ লুকিয়ে অস্ফুট স্বরে বলেছিল- ‘ওরা কি আমাকেও মেরে ফেলবে?’ বাড়ির স্বজনদের মিথ্যে আশ্বাস ছিল- ‘না না, তোমার কিছু হবে না’। পরক্ষণেই ন্যূনতম মনুষ্যত্বহীন ঘাতকের আগ্রাসী গুলিতে নিরপরাধ রাসেলের প্রাণহীন কচি দেহ লুটিয়ে পড়েছিল মাটিতে। সেই অন্তিম মুহ‚র্তে ঘাতকদের শিশু সন্তানরা কি কেঁদে উঠেছিল নিহত রাসেলের এমন অপমৃত্যু দেখে? কী আক্রোশে তারা এমন উন্মত্ত হয়েছিল যে, নিষ্পাপ-নির্দোষ শিশু হত্যায় একবারও কেঁপে ওঠেনি তাদের হাত? মনুষ্যত্ব, মানবতাবোধ, মানসিক ভারসাম্য সম্পূর্ণরুপে তিরোহিত না হলে এমন আসুরিক উন্মাদনা এবং এরূপ গণহত্যা, নারী ও শিশু নিধন শয়তানের বিকৃত কল্পনাতেও সম্ভব কি না তা আজ ভাবতে হবে। রাসেলের মৃত্যু এখনো আমাদের নিয়ে যায় অদ্ভুত অপরাধবোধের অমানিশায়; আবার ফিরে আসি অবোধ শিশুর সকরুণ গোঙানির কাছে; এই যে এত জল বয়ে যায়, গঙ্গোত্রী থেকে পদ্মা হয়ে বঙ্গোপসাগরে, সেই স্রোতধারা কি পেরেছে আকাশদীর্ঘ সেই কালিমাকে মুছে দিতে? রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশ আজও কি সেই অশনি পিশাচের করাল থেকে সম্পূর্ণ মুক্ত? স্বাধীনতার এতো বছর পরেও কি আমাদের রাসেলরা লাল-সবুজের অভয়ারণ্যে মুক্ত বিহঙ্গের মতো উড়ে বেড়াতে পারছে? যদি দৃষ্টির মহাকাশ খোলা থাকে, যদি বীক্ষণের দিগন্ত থাকে উন্মীলিত, তবে দেখতে পাবো নররূপী শ্বাপদের বীভৎস উল্লাস কালো মেঘ হয়ে যেন শাসিয়ে রাখতে চায় বাংলাদেশ ও নিষ্কলঙ্ক রাসেলদের।
জুডাস তার প্রভু যিশুখ্রিস্টের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছিল; ব্রæটাস হত্যা করেছিল তার পরম হিতৈষী জুলিয়াস সিজারকে। জন উইলকিন বুথ কেড়ে নিয়েছিল এব্রাহাম লিঙ্কনের প্রাণ। লী হার্ভে অসওয়াল্ড গুলি করে হত্যা করেছিল জন এফ কেনেডিকে।
গোঁড়া হিন্দু নাথুরাম গডসে খুন করেছিল মহাত্মা গান্ধীকে; মীরজাফরের বিশ্বাসঘাতকতা বাংলার শেষ স্বাধীন নবাব সিরাজউদ্দৌলার পরাজয় ও মৃত্যুর কারণ হয়েছিল। কিন্তু বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারীরা বহু হত্যার জন্য দায়ী। শৈশবেই জীবনের অনন্ত তৃষা থেকে বিদায় নিতে চায়নি যে উৎসুক শিশু, সদ্য বিবাহিত দুই নববধূর মেহেদী রাঙানো চারটি হাত বুলেটবিদ্ধ রক্তাক্ত হয়ে যেন আদিগন্ত প্রসারিত হতে হতে জানতে চেয়েছিল- আমাদের কেন? কী আমাদের অপরাধ? এ সব নিরপরাধ অরাজনৈতিক আবাল-বৃদ্ধ-বনিতা হত্যা করা হয়েছিলো ক্ষমতার মসনদ দখল করার জন্য।
শতাব্দীর কিংবা তারও অনেক আগের ইতিহাসে এমন ভয়াবহ, নিমর্ম রাজনৈতিক হত্যাকান্ড কারবালায় হৃদয়বিদারক ঘটনাকেই মনে করিয়ে দেয়। ঘাতকের হাতে নিহত হন বেগম ফজিলাতুননেছা, পুত্র শেখ কামাল, শেখ জামাল, শেখ রাসেল, শেখ কামালের স্ত্রী সুলতানা কামাল, জামালের স্ত্রী রোজী জামাল, বঙ্গবন্ধুর ভাই শেখ নাসের, এসবি অফিসার সিদ্দিকুর রহমান, কর্ণেল জামিল, সেনা সদস্য সৈয়দ মাহবুবুল হক, প্রায় একই সময়ে ঘাতকরা বঙ্গবন্ধুর ভাগ্নে যুবলীগ নেতা শেখ ফজলুল হক মণির বাসায় হামলা চালিয়ে শেখ ফজলুল হক মণি, তার অন্ত:সত্তা স্ত্রী আরজু মণি, বঙ্গবন্ধুর ভগ্নিপতি আবদুর রব সেরনিয়াতের বাসায় হামলা করে সেরনিয়াবাত ও তার কন্যা বেবী, পুত্র আরিফ সেরনিয়াবাত, নাতি সুকান্ত বাবু, আবদুর রব সেরনিয়াবাতের বড় ভাইয়ের ছেলে সজীব সেরনিয়াবাত এবং এক আত্মীয় বেন্টু খান।
এ যেন আরেক কারবালা! ঘাতকের বুলেট বিদ্ধ করল কালজয়ী মানুষ বঙ্গবন্ধুকে। বিদ্ধ হলো গোটা বাঙালী, স্বাধীন বাংলাদেশ। রচিত হলো পৃথিবীর এ যাবতকালের সবচেয়ে ঘৃণ্য ও জঘন্যতম ইতিহাস। এই স্মৃতি অত্যন্ত বেদনাদায়ক। তাই প্রতিবছর শোকাবহ সে দিনটি সামনে এলেই মোচড় দিয়ে ওঠে বাঙালীর বুকের ভেতরটা। ১৯৭৫ এর ১৫ই আগষ্ট ছিল আমাদের সব হারানোর একটি দিন।
এ দিনটি সত্যিই আমাদের কান্নার দিন। এদিনে বাংলার পাখিরা গাইবে সব হারানোর গান, বাশরীয়া তার বাঁশীতে তুলবে সকরুণ সুর, আকাশে ঝরবে চোখের জলের বৃষ্টি, বাতাসের মর্মর ধ্বনিতে বাজবে বেদনার করুণ রাগিনী! স্মৃতির উঠোনে গল্প বুনে যাবে সব বেদনার।
লেখক:
কথাসাহিত্যিক ও সংগঠক
খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।