টাইগারদের কাছে অস্ট্রেলিয়ার হার

S M Ashraful Azom
0
টাইগারদের কাছে অস্ট্রেলিয়ার হার



সেবা ডেস্ক: বাংলাদেশের মাঠে খেলার ব্যাপারে বরাবরই অনাগ্রহ প্রকাশ করেছে অস্ট্রেলিয়া। টি-২০ শুরুর প্রায় দেড় দশক পর প্রথমবার এই বাংলাদেশে দ্বিপাক্ষিক সিরিজ খেলতে এসেছে অজিরা। দুই দলের লড়াইয়ে এর আগে প্রতিবারই জয় নিয়ে মাঠ ছেড়েছিল ক্যাঙ্গারুরা। কিন্তু এবার সাবেক বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের সব দম্ভ চূর্ণ করে স্মরণীয় এক জয় তুলে নিয়েছে টাইগাররা।

পাঁচ ম্যাচ সিরিজের প্রথম টি-২০ ম্যাচটি ২৩ রানে জিতেছে বাংলাদেশ। টাইগারদের করা ১৩১ রানের জবাবে ইনিংসের শেষ বলে ১০৮ রানে অল আউট হয়েছে অস্ট্রেলিয়া। এর আগের চার দেখায় প্রতিবারই জয় নিয়ে মাঠ ছেড়েছিল অজিরা। ইতিহাসে এবারই প্রথম টি-২০তে তাদের হারালো টাইগাররা।

সফরকারী অস্ট্রেলিয়ার হয়ে রান তাড়া করতে নামেন অ্যালেক্স ক্যারি ও জশ ফিলিপ। ইনিংসের প্রথম বলেই ক্যারিকে বোল্ড করে ডায়মন্ড ডাকের স্বাদ দেন মাহেদী হাসান। পরের ওভারে ৯ রান করা ফিলিপকে স্ট্যাম্পিংয়ের ফাঁদে ফেলেন নাসুম আহমেদ। 

বিপাকে পড়া অস্ট্রেলিয়াকে আরো চেপে ধরেন সাকিব আল হাসান। নিজের করা প্রথম বলেই ময়জেস হেনরিক্সকে বোল্ড করেন তিনি। এরপর দলের হাল ধরেন মিচেল মার্শ ও ম্যাথু ওয়েড। ধীরস্থিরভাবে খেলে ৩৮ রানের জুটি গড়েন দুজন। যখন অজিরা ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নেয়ার অপেক্ষায়, তখনই আঘাট হানেন নাসুম। অবশ্য উইকেট পাওয়ার ক্ষেত্রে তার কৃতিত্বের চেয়ে ওয়েডের ব্যর্থতাই বেশি।

ওয়াইড লাইনেরও অনেক বাইরের বল তাড়া করে খেলেন ওয়েড। শর্ট ফাইন লেগে দুর্দান্ত ক্যাচের মাধ্যমে তাকে হতাশ করেন মুস্তাফিজুর রহমান। এর আগে অজি অধিনায়ক করেন ২৩ বলে ১৩ রান। ওয়েডের বিদায়ের পর আর কেউই উইকেটে টিকে থাকতে পারেননি। দুর্ভাগ্যজনকভাবে হিট উইকেট হন অ্যাস্টন অ্যাগার। অ্যাস্টন টার্নার ফেরেন ৮ রানে। 

একপ্রান্ত ধরে খেলে টাইগার শিবিরে অস্বস্তি বাড়িয়ে যাচ্ছিলেন মিচেল মার্শ। শরিফুল ইসলামের দুর্দান্ত ক্যাচে পরিণত হওয়ার আগে ৪৫ বলে ৪৫ রান করেন এই ব্যাটসম্যান। তাকে আউট করে নিজের ক্যারিয়ার সেরা বোলিংয়ের রেকর্ড গড়েন নাসুম আহমেদ। ম্যাচে চার উইকেট শিকার করেন এই বাঁহাতি বোলার। 

অ্যান্ড্রু টাই ও অ্যাডাম জাম্পাকে রানের খাতাই খুলতে দেননি শরিফুল। মিচেল স্টার্ককে বোল্ড করার মাধ্যমে অস্ট্রেলিয়াকে গুটিয়ে দেন মুস্তাফিজুর রহমান। অজিদের ইতিহাসে এটাই তাদের সর্বনিম্ন স্কোর। 

নাসুমের চার উইকেটের পাশাপাশি দুটি করে উইকেট নেন মুস্তাফিজুর রহমান ও শরিফুল ইসলাম। এছাড়া সাকিব ও মাহেদী একটি করে উইকেট ভাগাভাগি করে নেন। 

এর আগে মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস জিতে ফিল্ডিং করার সিদ্ধান্ত নেন অস্ট্রেলিয়া অধিনায়ক ম্যাথু ওয়েড। বাংলাদেশের হয়ে ইনিংস উদ্বোধনে নামেন মোহাম্মদ নাইম ও সৌম্য সরকার। 

মিচেল স্টার্কের করা প্রথম ওভারে একটি ছক্কা হাঁকালেও বাকি বলগুলো ঠিকভাবে ব্যাটেই লাগাতে পারেননি নাইম। অন্যপ্রান্তে হ্যাজেলউডের বলে বেশ ভুগছিলেন সৌম্য। তবে প্রথম তিন ওভারে দলকে কোনো উইকেট হারাতে দেননি তারা।

কিন্তু চতুর্থ ওভারে এসেই ছন্দপতন। জশ হ্যাজেলউডের করা ডেলিভারি পেছনে কাট খেলতে গিয়ে বোল্ড হন সৌম্য। এর আগে করেন ৯ বলে ২ রান। 

অ্যাডাম জাম্পার বলে রিভার্স সুইপ করতে গিয়ে ৩০ রানে বোল্ড হন নাইম শেখ। রানের দিক থেকে ইনিংস বড় হলেও তার অ্যাপ্রোচ ছিল জঘন্য। ৩০ রানের মাঝে ২০ রানই চার-ছয় থেকে করেছেন তিনি। বাকি ১০ রান করতে খেলেছেন ২৫ বল, যা টি-২০র যুগে বড্ড বেমানান। এমনকি তার আউট হওয়ার ধরণও ছিল দৃষ্টিকটু।

নাইমের বিদায়ের পর দলের হাল ধরেন সাকিব ও রিয়াদ। তবে রান তুলতে গিয়ে রিয়াদ অনেক বেশি ধীর খেলতে থাকেন। পরে বল আর রানের ব্যবধান কমাতে গিয়ে হ্যাজলউডের দ্বিতীয় শিকারে পরিণত হন তিনি। টাইগার অধিনায়ক ২০ বলে ২০ রান করেন। 

এরপর থেকে নিয়মিত বিরতিতে আসা যাওয়া করতে থাকেন টাইগার ব্যাটসম্যানরা। দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৩৬ রান করেন সাকিব। এছাড়া নুরুল হাসান সোহান ৩, শামীম পাটোয়ারী ৪ রানে আউট হন। 

শেষ দিকে আফিফ হোসেনের ২৩ রানের ক্যামিওতে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৭ উইকেটে ১৩১ রান করে বাংলাদেশ। অস্ট্রেলিয়ার হয়ে একাই তিন উইকেট নেন জশ হ্যাজেলউড। এছাড়া মিচেল স্টার্ক দুটি এবং অ্যান্ড্রু টাই ও অ্যাডাম জাম্পা একটি করে উইকেট নেন।

সিরিজের দ্বিতীয় টি-২০তে আগামীকাল মুখোমুখি হবে দুই দল। খেলা শুরু হবে বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা ছয়টায়।  

শেয়ার করুন

-সেবা হট নিউজ: সত্য প্রকাশে আপোষহীন

Post a Comment

0Comments

খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।

Post a Comment (0)

#buttons=(Ok, Go it!) #days=(20)

Our website uses cookies to enhance your experience. Know about Cookies
Ok, Go it!
To Top