সেবা ডেস্ক: অর্থনৈতিক বিকাশে’র বর্তমান ধারা অব্যাহত থাকলে বাংলাদেশ ২০৩৬ সাল নাগাদ বিশ্বে’র ২৪তম বৃহৎ অর্থনীতি হবে। যুক্তরাজ্যে’র অর্থনৈতিক গবেষণা সংস্থা সেন্টা’র ফ’র ইকোনমিক্স অ্যান্ড বিজনেস রিসার্চে’র (সিইবিআ’র) সর্বশেষ প্রতিবেদনে এ পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে।
‘ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক লিগ টেবিল ২০২২’ শীর্ষক প্রতিবেদনটি শনিবা’র রাতে প্রকাশিত হয়।
এতে
মূলত সামনে’র বছ’র এবং আগামী
১৫ বছরে বিশ্বে’র কোন
দেশে’র অর্থনীতি কী হারে বাড়বে,
এ’রই পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। সিইবিআ’র প্রতিবছ’র এই রিপোর্ট প্রকাশ
করে। এটি সংস্থাটি’র ১৩তম
প্রতিবেদন। প্রতিবেদন অনুযায়ী, আ’র মাত্র ৮
বছ’র পরেই চীন হবে
বিশ্বে’র বৃহত্তম অর্থনীতি। ২০৩১ সালে ভা’রত
হবে তৃতীয়। আ’র এ সময়
দ্বিতীয় হবে যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানি
চতুর্থ ও জাপান পঞ্চম।
২০২২ সালে প্রথমবারে’র মতো
বিশ্ব অর্থনীতি ডলারে একশ ট্রিলিয়ন ছাড়িয়ে
যাবে।
সিইবিআ’র
বলছে, বাংলাদেশ এখন বিশ্বে’র ৪২তম
বৃহৎ অর্থনীতি’র দেশ। ২০২২ সালে
বাংলাদেশে’র অবস্থান হবে ৪১তম, ২০২৬
সালে ৩৪তম ও ২০৩১
সালে ২৯তম। ২০৩৬ সাল নাগাদ
১৯৩টি দেশে’র মধ্যে বাংলাদেশে’র অবস্থান বহু ধাপ ওপরে
উঠে হবে ২৪তম অর্থনৈতিক
শক্তি। অর্থাৎ আগামী ১৫ বছরে বাংলাদেশে’র
অর্থনীতি ১৮ ধাপ এগিয়ে
যাবে।
প্রতিবেদনে
বলা হয়েছে, বাংলাদেশ করোনাভাইরাসে’র মধ্যেও কিছুটা অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ধরে রাখতে পেরেছে,
সামনে’র বছ’রগুলোয় বাংলাদেশে ধারাবাহিক এবং জোরালো অর্থনৈতিক
প্রবৃদ্ধি অর্জন হবে বলে জানিয়েছে
সিইবিআ’র।
সংস্থাটি
বলছে, কোভিড-১৯ মহামারি শুরু’র
আগে’র বছ’রগুলোয় বাংলাদেশে জিডিপি’র প্রবৃদ্ধি ছিল বেশ ভালো।
বিশ্বে’র অন্যান্য দেশে কোভিড-১৯
যেভাবে ছড়িয়েছে, সে তুলনায় বাংলাদেশে
সংক্রমণ অনেক সীমিত রাখা
গেছে। চলতি ডিসেম্বরে’র মাঝামাঝি
পর্যন্ত বাংলাদেশে করোনাভাইরাসে মারা গেছে প্রতি
১ লাখে ১৭ জন।
মহামারি’র কা’রণে বাংলাদেশে’র জনস্বাস্থ্যে’র ওপ’র প্রভাব কিছুটা
কম থাকা সত্ত্বেও অর্থনীতি’র
উল্লেখযোগ্য ক্ষতি হয়েছে। কিন্তু অন্য অনেক দেশে
অর্থনৈতিক মন্দা দেখা দিলেও বাংলাদেশ
তা এড়াতে পেরেছে। ২০২০ সালে বাংলাদেশে’র
অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ৩ দশমিক ৫
শতাংশ হয়েছে, যা অন্তর্জাতিক মানদণ্ডে
একটি বড় অর্জন। ২০১৯
সালে বাংলাদেশে’র প্রবৃদ্ধি হয়েছিল ৮ দশমিক ২
শতাংশ। আ’র ২০২১ সালে
প্রবৃদ্ধি হবে ৪ দশমিক
৬ শতাংশ। দেশটিতে জনসংখ্যা বৃদ্ধি অব্যাহত থাকা সত্ত্বেও প্রবৃদ্ধি
অব্যাহতভাবে বেড়েছে। পাঁচ বছ’র ধরে
বাংলাদেশে’র জনসংখ্যা বাড়ছে গড়ে ১ শতাংশ
হারে। ধারাবাহিক প্রবৃদ্ধি অর্জনে মূল চালিকাশক্তি ছিল
প্রবাসী আয় ও ‘রপ্তানি
প্রবৃদ্ধি।
সিইবিআ’র
বলছে, এক দশক ধরে
বাংলাদেশ বিশ্বে অন্যতম দ্রুত বর্ধনশীল অর্থনীতি’র দেশ। এ’র পেছনে
কয়েকটি বিষয় কাজ করেছে।
এ’র মধ্যে ‘রয়েছে ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ট, পোশাক খাতে’র মাধ্যমে ব্যাপক ‘রপ্তানি আয় বৃদ্ধি, স্থিতিশীল
ক্ষুদ্র ও মাঝারি অর্থনীতি,
চীনসহ বিভিন্ন দেশে’র বিনিয়োগ ও তথ্যপ্রযুক্তি খাতে
উন্নয়ন।
সিইবিআ’র বলছে, ২০২১ সালে বাংলাদেশে’র মানুষে’র মাথাপিছু আয় দাঁড়িয়েছে ৫ হাজা’র ৭৩৩ ডলা’র। এই হিসাবটা পিপিপি বা পা’রচেজিং পাওয়া’র (ক্রয়ক্ষমতা) প্যারিটিকে হিসাবে নিয়ে করা। বাংলাদেশকে এখন একটি নিুমধ্যম আয়ে’র দেশ বলে গণ্য করা হয়। ২০৩৬ সাল নাগাদ বিশ্বে’র প্রথম ২৫টি দেশে’র তালিকায় যুক্ত হবে তিনটি নতুন দেশ: ভিয়েতনাম, ফিলিপাইন ও বাংলাদেশ। এ’র মধ্যে ভিয়েতনামে’র অবস্থান হবে ২০, বাংলাদেশে’র ২৪ ও ফিলিপাইনে’র ২৫। এ সময় যেসব অর্থনীতিকে বাংলাদেশ ছাড়িয়ে যাবে তা’র মধ্যে ‘রয়েছে মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপু’র, ডেনমার্ক, হংকং, সংযুক্ত আ’রব আমিরাত, মিস’র, ন’রওয়ে, আর্জেন্টিনা, ইসরাইল, আয়া’রল্যান্ড, অস্ট্রিয়া, বেলজিয়াম, সুইডেন ও তাইওয়ান। বর্তমান বিশ্ব সূচকে এই দেশগুলো বাংলাদেশে’র ওপরে, কা’রণ তাদে’র অর্থনীতি বাংলাদেশে’র চেয়ে বড়।
খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।