শেখ মুজিবুর রহমানকে “বঙ্গবন্ধু” উপাধি প্রদান

S M Ashraful Azom
0
শেখ মুজিবুর রহমানকে “বঙ্গবন্ধু” উপাধি প্রদান



বাঙালি জাতির ইতিহাসে ২৩ ফেব্রুয়ারি ঐতিহাসিক গুরুত্বপূর্ণ দিন। ১৯৬৯ সালের এই দিনে শেখ মুজিবের সম্মানে ঢাকার রেসকোর্স ময়দানে (বর্তমানে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) কেন্দ্রীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ এক সভার আয়োজন করে। 

লাখো জনতার এই সম্মেলনে শেখ মুজিবুর রহমান কে ‘বঙ্গবন্ধু’ উপাধি দেওয়া হয়। উপাধি ঘোষণা দিয়েছিলেন তোফায়েল আহমেদ। এর একদিন আগে ১৯৬৯ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি তিনি আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলায় কারাবন্দি থেকে মুক্তি পান।


সংগ্রাম-আন্দোলনে শেখ মুজিবুর রহমানকে দমাতে বার বার কারাগারে পাঠায় পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী।তার বিরুদ্ধে একের পর এক মিথ্যা মামলা করা হয়। তেমনই এক মামলা আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা।

 ১৯৬৮ সালের জানুয়ারি মাসের প্রথম সপ্তাহে পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় সরকার অভিযোগ আনে, শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে কয়েকজন রাজনীতিক, সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তা এবং গুটিকয় সাধারণ সৈনিক সশস্ত্র অভ্যুত্থানের মাধ্যমে পূর্ববাংলাকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠা করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত ছিলেন। 


এই মিথ্যা মামলায় শেখ মুজিবুর রহমানসহ মোট ৩৫ জনকে আসামি করা হয়। ৩৫ জন আসামির সবাইকে পাকিস্তানি সরকার গ্রেফতার করে। মিথ্যা মামলায় শেখ মুজিবুর রহমানকে সাজা দেওয়ার পরিকল্পনা টের পেয়ে বাঙালি জাতি ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে এবং স্বৈরাচারী আইয়ুবের বিরুদ্ধে গণপ্রতিরোধ গড়ে তোলে। 


ছাত্র-জনতার মিছিলে রাজপথ উত্তাল হয়ে ওঠে। গণআন্দোলনে নতিস্বীকার করে আইয়ুব খান আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা প্রত্যাহার করে শেখ মুজিবুর রহমানসহ অভিযুক্ত সব আসামিকে মুক্তি প্রদানের ঘোষণা দেন। 


২৩ ফেব্রুয়ারি কেন্দ্রীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের পক্ষ থেকে রমনার রেসকোর্স ময়দানে (বর্তমানে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) বিশাল গণসংবর্ধনার আয়োজন করা হয় এবং ওই সভায় তৎকালীন ডাকসুর সভাপতি, বঙ্গবন্ধুর একনিষ্ঠ সহচর তোফায়েল আহমেদ শেখ মুজিবুর রহমানকে ‘বঙ্গবন্ধু’ উপাধিতে ভূষিত করেন।  


বাংলার জনগণের কাছে শেখ মুজিবুর রহমান নাম ছাপিয়ে ‘বঙ্গবন্ধু’ উপাধিটি ক্রমেই জনপ্রিয় হয়ে উঠতে থাকে।


সেদিনের কথা স্মরণ করে প্রবীণ নেতা আওয়ামী লীগের তোফায়েল বলেন, ‘আমি ডাকসু ভিপি হিসাবে এই অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করি এবং বঙ্গবন্ধুর সামনে আমি ভাষণ দিই। 

আমি বলেছিলাম যে, আমরা আমাদের মহান নেতা, যিনি তার যৌবন পাকিস্তানের কারাগারে কাটিয়েছেন এবং যিনি হাসি মুখে ফাঁসির মঞ্চে মৃত্যুকে আলিঙ্গন করতে চেয়েছেন, তাঁকে বঙ্গবন্ধু উপাধি দিচ্ছি।’


সেই থেকে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি সেই খেতাব দ্বারা পরিচিত, বাংলায় যার অর্থ জনগণের বন্ধু। 


শেয়ার করুন

-সেবা হট নিউজ: সত্য প্রকাশে আপোষহীন

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0মন্তব্যসমূহ

খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)

#buttons=(Ok, Go it!) #days=(20)

Our website uses cookies to enhance your experience. Know about Cookies
Ok, Go it!
To Top