বিশ্ব ভোক্তা অধিকার ও পঙ্গু দিবস আজ
🕧Published on:
সেবা ডেস্ক : আজ ১৫ মার্চ, বিশ্ব ভোক্তা অধিকার ও পঙ্গু দিবস। বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও দিবস দুটিকে কেন্দ্র করে নানান কর্মসূচি পালন করা হচ্ছে।
এবার ভোক্তা অধিকার দিবসটির প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করা হয়েছে ‘মুজিব বর্ষে শপথ করি, প্লাস্টিক দূষণ রোধ করি’। দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন।
জানা যায়, বাংলাদেশে ভোক্তার স্বার্থ সংরক্ষণ ও ভোক্তা-অধিকার বিরোধী কাজ প্রতিরোধের উদ্দেশ্যে ২০০৯ সালে সরকার ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ আইন প্রণয়ন করা হয়।
এ আইন বাস্তবায়নের জন্য প্রতিষ্ঠা করা হয় জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর। প্রতিষ্ঠার পর থেকে ভোক্তা স্বার্থ রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে এ অধিদফতর। প্রতিবছর এ দিবসকে পালন করছে সরকারি এ সংস্থা।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, প্রতি বছরের মতো এবারও জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরসহ বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন নানা কর্মসূচিতে দিবসটি পালন করছে। জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর মঙ্গলবার বিকেল ৩টায় রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে এক আলোচনা সভার আয়োজন করেছে। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি।
এর আগে, ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে সামনে ওসমান গনি রোডে এক বর্ণাঢ্য র্যালির আয়োজন করা হয়েছে। রাজধানীর পাশাপাশি সারাদেশের ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের কার্যালয়ে আলোচনা সভা ও বর্ণাঢ্য র্যালি অনুষ্ঠিত হবে।
সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট জন এফ কেনেডি ১৯৬২ সালের ১৫ মার্চ কংগ্রেসে ভোক্তার স্বার্থ রক্ষার বিষয়ে বক্তৃতা দেন। ভোক্তার চারটি অধিকার সম্বন্ধে তিনি আলোকপাত করেন। এগুলো হলো- নিরাপত্তার অধিকার, তথ্যপ্রাপ্তির অধিকার, পছন্দের অধিকার এবং অভিযোগ দেওয়ার অধিকার।
পরে ১৯৮৫ সালে জাতিসংঘ কেনেডি বর্ণিত চারটি মৌলিক অধিকারকে আরো বিস্তৃত করে অতিরিক্ত আরো আটটি মৌলিক অধিকার সংযুক্ত করে। কেনেডির ভাষণের দিনকে স্মরণীয় করে রাখতে দিনটিকে বিশ্ব ভোক্তা অধিকার দিবস হিসেবে পালন করা হয়।
আজ বিশ্ব পঙ্গু দিবস
বাংলাদেশে পঙ্গুত্বের একটি বড় কারণ সড়ক দুর্ঘটনা। দেশে পঙ্গুত্ব নিয়ে সঠিক কোনো পরিসংখ্যান না থাকলেও বিশেষজ্ঞদের ধারণা অনুযায়ী, দেশে প্রতি বছর দুর্ঘটনায় আহত হয়ে অন্তত ১০ থেকে ১২ হাজার মানুষ পঙ্গুত্ব বরণ করেন। জাতীয় অর্থোপেডিক পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠানের তথ্য মতে, বিভিন্ন দুর্ঘটনায় আহত হয়ে বছরে এক লাখ ৩০ হাজার রোগী এ প্রতিষ্ঠান থেকে চিকিৎসা নেয়। এর মধ্যে ৫০ হাজার রোগী জরুরি বিভাগ থেকে সেবা নেয়। আর এসব রোগীর মধ্যে বছরে ৩৫০ থেকে ৪০০ জন পঙ্গুত্ব বরণ করে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, এসব সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণহানির চেয়ে পঙ্গুত্বের সংখ্যা দ্বিগুণের বেশি।
সড়ক দুর্ঘটনা নিয়ে গবেষণাকারী প্রতিষ্ঠান বুয়েটের অ্যাক্সিডেন্ট রিসার্চ ইনস্টিটিউট, পুলিশের সংশ্নিষ্ট পরিসংখ্যান সংস্থা ও বার্ন ইউনিট সূত্রে জানা যায়, দেশে প্রতিদিন গড়ে ৪৫ জন এবং বছরে প্রায় পাঁচ হাজার প্রাণহানি ঘটে।
দুর্ঘটনাস্থলে প্রায় ৫৫ শতাংশ ও দুর্ঘটনার পর দুই ঘণ্টার মধ্যে ৩৫ শতাংশের মৃত্যু ঘটে।
জাতীয় অর্থোপেডিক পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠান সূত্রে জানা গেছে, বিভিন্ন দুর্ঘটনায় আহত হয়ে বছরে প্রায় এক লাখ ২০ হাজার থেকে এক লাখ ৩০ হাজার রোগী এখানে চিকিৎসা নেন। প্রায় ৫০ হাজার রোগী জরুরি বিভাগ থেকে সেবা নেন। এসব রোগীর মধ্যে বছরে সাড়ে ৩০০ থেকে ৪০০ রোগী পঙ্গুত্ব বরণ করেন।
দেশে নিরাপদ সড়ক ও চালক সচেতনতা নিয়ে সরকারি ও বেসরকারি নানান উদ্যোগ, কর্মসূচি চালু রয়েছে। তবু সড়ক দূর্ঘটনার পরিমাণ হ্রাস পাচ্ছে না।
পঙ্গুত্বের অনেক কারণ রয়েছে। এই কারণগুলোকে যদি প্রধান দুই ভাগে ভাগ করা যায় তাহলে বলা যায়, জন্মগত ত্রুটি ও মনুষ্যসৃষ্ট কারণে পঙ্গুত্ব বরণ।
জন্মগত ত্রুটির কারণে পঙ্গুত্ব
বিভিন্ন ধরনের জন্মগত ত্রুটির কারণে অনেক মানুষকে পঙ্গুত্ব বরণ করে নিতে হয়। এগুলোর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে সেরিব্রাল পালসি, হাত-পায়ের ত্রুটিপূর্ণ গঠনের কারণে পঙ্গুত্ব, পক্ষাঘাতগ্রস্ত ব্যক্তি।
চিকিৎসা
পঙ্গুত্বের অত্যাধুনিক চিকিৎসার জন্য জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন কেন্দ্র রয়েছে। সঠিক সময়ে আহত ব্যক্তিদের এই প্রতিষ্ঠানে আনা হলে অনেক ক্ষেত্রেই পঙ্গুত্বের অভিশাপ থেকে রক্ষা করা সম্ভব। সঠিক চিকিৎসার মাধ্যমে ক্লাব ফুট (পায়ের পাতা ভেতরের বা বাইরের দিকে বাঁকা হওয়া), মেরুদণ্ড বাঁকা হয়ে যাওয়া, হাত ও পায়ের গঠনগত ত্রুটি সারানো সম্ভব।
0comments
মন্তব্য করুন
খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।