দেশে কম দামে পাওয়া যাচ্ছে পাম অয়েল

🕧Published on:

দেশে কম দামে পাওয়া যাচ্ছে পাম অয়েল



: তেল সংকটে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় খোলা পাম তেলের সর্বশেষ দর নির্ধারণ করেছে ৬৯৫০ টাকা মণ। কিন্তু খাতুনগঞ্জের পাইকারি বাজারে এখন পাম তেল বিক্রি হচ্ছে ৬০২০ থেকে ৬৪৭০ টাকায়। নগদে কিনলে ৫০০ টাকা এবং এক সপ্তাহ দেরিতে ডেলিভারি নিলে ৯০০ টাকা পর্যন্ত কমে পাওয়া যাচ্ছে এই পাম তেল। গত ৫ মে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় দর নির্ধারণের পর থেকেই সরকারি দরের কমে পাওয়া যাচ্ছে এই পাম তেল।


যদিও সয়াবিন তেলের ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম।

পাইকারি বাজারে পাম তেলের দাম নির্ধারণের মূল কারণ ছিল ইন্দোনেশিয়ার রপ্তানি নিষেধাজ্ঞা এবং আন্তর্জাতিক বাজারে বুকিং বেড়ে যাওয়া। এখন গত ২৩ মে থেকে ইন্দোনেশিয়া রপ্তানি নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করেছে; ফলে আবার রপ্তানি শুরু হয়েছে। এর প্রভাবে আন্তর্জাতিক বাজারে পাম তেলের বুকিং দর অনেক কমেছে। আরো ক্রমাগত কমছে। ইন্দোনেশিয়ার রপ্তানি নিষেধাজ্ঞার খবরে গত ২৯ এপ্রিল টনপ্রতি অপরিশোধিত পাম তেলের দাম বেড়ে ৭১০৪ মালয়েশিয়ান রিংগিতে পৌঁছে। গত ২৫ মে সেটি কমে ৬৪৮২ রিংগিতে নেমে আসে। সে হিসাবে ৬২২ রিংগিত কমেছে। এক মালয়েশিয়ান রিংগিত বাংলাদেশি টাকায় ১৯ টাকা ৮৯ পয়সা হিসাবে দাম টনে ১২ হাজার টাকার বেশি কমেছে। ইন্দোনেশিয়া তেল রপ্তানি পুরোদমে শুরুর পর চলতি সপ্তাহে দাম আরো কমবে বলে আশা করছেন ব্যবসায়ীরা।


ইন্দোনেশিয়ার রপ্তানি শুরু ঘোষণার অনেক আগেই অর্থাৎ গত ঈদুল ফিতরের পর থেকেই দেশের পাইকারি বাজারে খোলা পাম তেলের দর কম ছিল। শুধু তাই-ই নয়, সরকার নির্ধারিত দরের চেয়ে কেজিতে ৩০ টাকা কমে বিক্রি হচ্ছে খোলা পাম তেল। ইন্দোনেশিয়ার তেল আসা শুরু হলে দাম আরো কমবে। এই অবস্থায় পাম তেলের দর সমন্বয় করে পুনর্নির্ধারণের দাবি উঠেছে।


কনজিউমার্স অ্যাসোসিয়েশন, চট্টগ্রাম-এর সভাপতি এস এম নাজের হোসাইন বলেন, ‘বিশ্ববাজারে বাড়লে দিনে দিনেই দেশের বাজারে ভোগ্যপণ্যের দাম বেড়ে যায়। পাম তেলের দাম যেহেতু আন্তর্জাতিক বাজারে কমেছে, তাই দেশেও দ্রুত কমাতে হবে। সরকারের উচিত ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বসে দাম কমিয়ে পুনর্নির্ধারণ করা। ’


জাতীয় ভোক্তা অধিদপ্তরের চট্টগ্রাম বিভাগের উপপরিচালক ফয়েজ উল্যাহ বলেন, ‘দাম সমন্বয় করা হবে কি না সেটি বাণিজ্য মন্ত্রণালয় বলতে পারবে। তবে আমরা চাই সরকারি দামের বেশি যাতে কেউ বিক্রি না করে। আর সেটা তদারকিতে আমরা সব সময়ই বাজারে আছি। সামনে ঈদুল আজহা, তাই সেই চাহিদা মাথায় রেখে যেকোনো মূল্যে সরবরাহ স্বাভাবিক রাখাই আমাদের এখন প্রধান কাজ। ’


খাতুনগঞ্জে ভোজ্য তেলের ব্যবসায়ী এ এম এন্টারপ্রাইজের কর্ণধার মাহমুদুল আলম লিটন বলেন, ‘পাম তেলে তো ঈদের পর থেকেই দাম কমেছে, এখনো কমছে। খোলা পাম তেল সরকার নির্ধারিত দর মণপ্রতি ৬৯৫০ টাকার চেয়ে নগদে ৫০০ টাকা কমে বিক্রি হচ্ছে। আর ডেলিভারি যদি দেরিতে নেন, তাহলে দাম মণপ্রতি ৯০০ টাকা কমে বিক্রি হচ্ছে। পাম তেলের দাম কমার কিছুটা প্রভাব সয়াবিন তেলেও পড়েছে; সরবরাহ সংকট কাটলে সয়াবিন তেলেও দাম কমবে। ’


বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনের (বিটিটিসি) হিসাবে, সয়াবিন, পাম, সরিষা ও রাইস ব্রান তেল মিলিয়ে দেশে প্রায় ২০ লাখ টন ভোজ্য তেলের চাহিদা রয়েছে। চাহিদার বেশির ভাগ ১৩ লাখ টনই পাম তেল এবং পাঁচ লাখ টন সয়াবিন। বাকিটা সরিষা, রাইস ব্রানসহ অন্য তেল।


নতুন করে কবে নাগাদ ইন্দোনেশিয়া থেকে তেল আসতে শুরু করবে জানতে চাইলে এস আলম গ্রুপের সিনিয়র মহাব্যবস্থাপক কাজী সালাহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘আগে থেকে বুকিং করা পাম তেল দেশে আসতে শুরু করবে। সেগুলো বিক্রির পরই নতুন তেল দেশে আসবে। আমদানি হয়ে নতুন তেল বাজারে পৌঁছতে ১৫ থেকে ২০ দিন সময় লাগবে। ’


শেয়ার করুন

সেবা হট নিউজ: সত্য প্রকাশে আপোষহীন

,

0comments

মন্তব্য করুন

খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।