ঘূর্ণিঝড়ে ঘাটাইলের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ ৫ শতাধিক ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত

🕧Published on:

ঘূর্ণিঝড়ে ঘাটাইলের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ ৫ শতাধিক ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত



 : টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলার চারটি ইউনিয়নে ঘূর্ণিঝড়ের আঘাতে একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, মসজিদসহ পাঁচশতাধিক কাঁচা ও আধা-পাকা ঘরবাড়ি বিধবস্ত হয়েছে। ঘূর্ণিঝড়ের আঘাতে অনেক গাছপালা উপড়ে পড়েছে। 

গাছের চাপায় স্কুল ছাত্রীসহ একই পরিবারের তিন জন আহত হয়েছে। আহতরা হলেন, উত্তর খিলগাতি গ্রামের আতাউর রহমান খান (৭০), তার ছেলে মো. রফিকুল ইসলাম (৪৫) এবং নাতনি এম.কে.ডি.আর উচ্চ বিদ্যালয়ের ৭ম শ্রেনির ছাত্রী রিয়া(১৩)। বয়ে যাওয়া ঝড়ে বিদ্যুতের তার ও খুটি লন্ডভন্ড হওয়ায় সকাল থেকেই ওই চার ইউনিয়নে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। 

শনিবার (২১ মে)ভোর সাড়ে ৫টার দিকে ঘূর্ণিঝড়টি আঘাত হানে এ উপজেলার ৪টি ইউনিয়নে।

স্থানীয়রা জানান, শনিবার ভোর সাড়ে ৫টার দিকে উত্তর- পূর্ব দিক থেকে হঠাৎ করে প্রচন্ড বেগে আসা ঘূর্ণিঝড়টি উপজেলার দেউলাবাড়ি ইনিয়নের দেউলাবাড়ি, উত্তর খিলগাতি ও মূখ্য গাংগাইর, সংগ্রামপুর ইইনয়নের বোয়ালী হাটবাড়ি, চাপড়ী, দেওজানা, খুপিবাড়ী ও লাহেড়ীবড়ি । রসুলপুর ইউনিয়নের রসুলপুর, ঘোনার দেওলী,মোমিনপুর, সিংহের চালা, শালিয়াবহ। লক্ষীন্দর ইউনিয়নের লক্ষীন্দর, মুরাইদ, চারিয়াবাইদ ও ফৈটামাড়িতে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। 

ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্থ ও শারীরিকভাবে কাজে অক্ষম সামাদ আকন্দ বলেন, আমার স্ত্রী সালেহা অন্যের বাড়িতে কাজ করে দিন যা আনে তাই দিয়েই আমার সংসার চলে। আমার একটি প্রতিবন্ধী মেয়ে রয়েছে। অনেক কষ্ট করে মাথা গোজার ঠাই করে ছিলাম কিন্তু  সর্বনাশা ঝড়ে সব কেড়ে নিয়ে গেছে। সরকারের সহযোগিতা ছাড়া আমার রাতে থাকার ঠাইও মিলবে না। 

রসুলপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান এমদাদ হোসেন জানান, মেম্বারদের নিয়ে ক্ষতিগ্রস্তদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে তালিকা প্রস্তুত করছি। স্থানীয় প্রশাসনকে অবহিত করেছি। ঘূর্ণিঝড়ে এ ইউনিয়নের ব্যাপক ক্ষতি সাধিত হয়েছে বলে জানান তিনি। 

দেউলাবাড়ি ইউনিয়নের এম.কে.ডি. আর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক (ভারপ্রাপ্ত) মো. হায়দার আলী বলেন, ৭০ হাত করে ২টি টিনসেড বিল্ডিং সম্পুর্ণ ভাবে বিধ্বস্ত ও আরেকটি ঘর আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত  হয়েছে। বিল্ডিংয়ের দেয়াল ভেঙ্গে লন্ডভন্ড হয়েছে। ঘূর্ণিঝড়ে বিদ্যালয়টির প্রায় ৪০ লাখ টাকার সম্পদ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বিদ্যালয়ের ঘর ভেঙ্গে যাওয়ায় পাঁচ শতাধিক শিক্ষার্থীদের লেখাপড়া মারাত্মক হুমকির মধ্যে পড়েছে। শিক্ষার্থীদের ক্লাশে আসন দিতে না পাড়ায় খোলা আকাশের নিচে পাঠদান করানো হচ্ছে। ঘূর্ণিঝড়ে বিদ্যালয় ক্ষতিগ্রস্তের বিষয়টি স্থানীয় প্রশাসনকে জানানো হয়েছে। পাঠদান কার্যক্রম অব্যাহত রাখতে দ্রæত বিদ্যালয়টি মেরামত প্রয়োজন।

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবয়ন কর্মকর্তা মো. এনামুল হক জানান, ঘূর্ণিঝড়ে উপজেলার ৪টি ইউনিয়নে ক্ষতিগ্রস্তদের নামের তালিকা ইউপি চেয়ারম্যানদের প্রস্তুত করার কথা বলেছি। সে মোতাবেক ওনারা কাজ করছেন। ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় দ্রæত পরিদর্শনে যাচ্ছি বলেও জানান তিনি। 

এ বিষয়ে ঘাটাইল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মনিয়া চৌধুরী জানান, উপজেলার সহকারি কমিশনার (ভূমি)এসিল্যান্ড ও প্রকল্প বাস্তবয়ন কর্মকর্তা ঘূর্ণিঝড় কবলিত এলাকাগুলো পরিদর্শনে আছেন। এছাড়াও ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানদের ক্ষতিগ্রস্থদের তালিকা করতে বলা হয়েছে। তালিকা পেলে পরবর্তী ব্যবস্থ গ্রহণ করা হবে।



শেয়ার করুন

সেবা হট নিউজ: সত্য প্রকাশে আপোষহীন

0comments

মন্তব্য করুন

খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।