স্ত্রী হত্যা মামলায় ১১ বছর আত্মগোপনে থাকা ঘাতক স্বামী আটক

🕧Published on:

: শেরপুরের শ্রীবরদী উপজেলার স্ত্রী হত্যা মামলায় ১১ বছর আত্মগোপনে থাকা মৃত্যুদন্ড প্রাপ্ত ঘাতক স্বামীকে আটক করেছে র‌্যাব-১৪, জামালপুর।

স্ত্রী হত্যা মামলায় ১১ বছর আত্মগোপনে থাকা ঘাতক স্বামী আটক



 র‌্যাবের প্রেস বিজ্ঞপ্তি ও মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, ভিকটিম মোছাঃ জহুরা বেগম, পিতা- মৃত জব্বার আলী, সাং- বড় ঘেরামারা, থানা-শ্রীবর্দী, জেলা- শেরপুর এর সহিত মোঃ ফুরকান আলী (৩৫), পিতা- মোঃ ময়দান আলী, সাং- কেল্লাকান্দি, থানা-শ্রীবর্দী, জেলা- শেরপুর এর ইসলামী শরিয়ত মোতাবেক অনুমান ০৬ বছর পূর্বে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়। আসামী মোঃ ফুরকান আলী (৩৫) জুয়া খেলায় আসক্ত হয়ে পড়লে ভিটিমের উপর বিভিন্ন সময় মারপিটসহ শারিরীক ও মানষিকভাবে নির্যাতন ও নিপিড়ন করতে থাকে। আসামী ভিকটিমের নিকট যৌতুকের টাকা দাবী করিলে যৌতুকের টাকা দিতে না পারায় নির্যাতনের মাত্রা বেরে যায় এবং একপর্যায়ে গত ০২/০৭/২০১১ ইং তারিখ ভোর অনুমান ০৬:০০ ঘটিকার সময় আসামী মোঃ ফোরকান আলী (৩৫) ভিকটিমের ভাই অর্থ্যাৎ এজাহারকারীকে মোবাইল ফোনে জানান যে, ভিকটিম মোছাঃ জহুরা বেগম ঘরে গলায় ফাঁস টানিয়ে মারা গিয়েছে। উক্ত সংবাদের ভিত্তিতে এজাহারকারী তার বাবা মাসহ বাড়ীর লোকজন ভিকটিমের স্বামীর বাড়ীতে যান এবং বাড়ীতে পৌছানোর পর বাড়ীর কোন ব্যক্তিকে দেখতে পান নাই ও আশেপাশের লোকজন ঘটনাস্থলে ভীড় দেখেন। ভিকটিমের  লাশ পশ্চিম দুয়ারী দোচালা টিনের ঘরের মধ্যে বাশেঁর ধরনার সহিত গলায় রশি লাগানো অবস্থায় দেখতে পান এবং ভিকটিমের গলা ও স্তনসহ শরীরের বিভিন্ন অঙ্গে জখমের চিহ্ন দেখা যায়। অতঃপর এজাহারকারী স্থানীয় লোকজনদের জিজ্ঞাসাবাদ করলে জানতে পারেন যে, গত ০১/০৭/২০১১ ইং তারিখ রাত অনুমান ০০:৪৫ ঘাটিকায় ভিকটিমের চিৎকার শুনতে পায় এবং ভোর বেলায় আসামীর ঘরে ভিকটিমের ঝুলন্ত লাশ দেখতে পায়। আসামীরা পরস্পর যোগসাজসে ভিকটিমকে মারপিটের পর হত্যা করে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে রেখে ভিকটিম আত্মহত্যা করেছে মর্মে প্রকাশ করে আসামীরা বাড়ী হতে পালিয়ে যায়। এজাহারকারী থানায় সংবাদ দিলে থানা কর্তৃপক্ষ এসে ভিকটিমের লাশ আসামীর ঘরের ধরনা হতে গলায় রশি লাগানো অবস্থায় লাশের সুরতাল প্রস্তুত পূর্বক পোষ্টমর্টেম করার জন্য শেরপুর হাসপাতালের মর্গে লাশ প্রেরণ করেন। পরবর্তীতে ভিকটিমের ভাই মোঃ ফজলুল হক শ্রীবর্দী থানায় হাজির হয়ে অভিযোগ দায়ের করেন। পরবর্তীতে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০ (সংশোধন-২০২০), ১১(ক)/৩০, অনুযায়ী যৌতুকের দাবীতে গুরুত্বর মারপিট করে হত্যা ও সহায়তা করে মৃত্যু ঘটানোর অপরাধে শ্রীবর্দী থানার মামলা নং-০১, তারিখ-০৩/০৭/২০১১ ইং এবং জিআর নং- ১০৬/২০১১ রজু করা হয়। উক্ত হত্যাকান্ডের পর হতে আসামী মোঃ ফুরকান আলী (৩৫) আত্মগোপনে চলে যায়। দীর্ঘ বিগত ১০ বছর যাবৎ সে দেশের বিভিন্ন স্থানের বিভিন্ন পরিচয়ে কখনও অটোচালক, শ্রমিক, দিনমজুর, বাসের হেলপার ইত্যাদি পেশায় বসবাস করে আসছিল। পরবর্তীতে বিজ্ঞ বিচারক (জেলা ও দায়রা জজ) নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল, শেরপুর মহোদয় গত ১০/০৫/২০২২ ইং তারিখ ও বাংলা ২৭ বৈশাখ ১৪২৯ বঙ্গাব্দে আসামী মোঃ ফুরকান আলী (৩৫), পিতা- মোঃ ময়দান আলী, সাং-কেল্লাকান্দি, থানা শ্রীবর্দী, জেলা- শেরপুর-এর বিরুদ্ধে আনীত নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০এর ১১(ক) ধারার অপরাধ সন্দেহাতীতভাবে প্রমানিত হওয়ায় মৃত্যুদন্ড ও ৫,০০০/- (পাঁচ হাজার) টাকা অর্থদন্ডে দন্ডিত করা হয়। পক্ষান্তরে অন্যান্য আসামীদের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০এর ১১(ক)/৩০ ধারার সন্দেহাতীতভাবে অপরাধ প্রমানিত না হওয়ায় অভিযোগের দায় হতে খালাস প্রদান করা হয়। অতঃপর বিভিন্ন তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ ও বিশ্লেষণের মাধ্যমে আসামীর অবস্থান নিশ্চিত করে অদ্য ১৪/১১/২০২২ ইং তারিখ রাত অনুমান ০১:৩০ ঘটিকায় র‌্যাব-১৪, সিপিসি-১, জামালপুর ক্যাম্পের একটি অভিযানিক দল জামালপুর জেলার সদর থানাধীন নান্দিনা এলাকায় আতœগোপনে থাকা মৃত্যুদন্ড প্রাপ্ত আসামী মোঃ ফুরকান আলী (৩৫) কে তার আত্বীয়ের বাড়ী হতে আটক করে। ধৃত আসামীকে শ্রীবর্দী থানার মামলা নং-০১, তারিখ-০৩/০৭/২০১১ ইং, জিআর নং- ১০৬/২০১১ মূলে সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে

এ ধরণের অপরাধের বিরুদ্ধে র‌্যাবের অভিযান অব্যাহত থাকবে।



শেয়ার করুন

সেবা হট নিউজ: সত্য প্রকাশে আপোষহীন

0comments

মন্তব্য করুন

খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।