কাজিপুর (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি : আজ ৩ ডিসেম্বর। সিরাজগঞ্জের কাজিপুর উপজেলা হানাদার মুক্ত দিবস। ১৯৭১ সালের এইদিনে স্থানীয় বীর মুক্তিযোদ্ধাদের প্রবল প্রতিবাদের মুখে পাক হানাদার বাহিনী কাজিপুর ছাড়তে বাধ্য হয়।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে কাজিপুর উপজেলায় কয়েকটি স্থানে পাকহানাদার বাহিনীর সাথে মুক্তিযোদ্ধারা যুদ্ধ করে। ২ ডিসেম্বর বরইতলার যুদ্ধ ছিল সবচেয়ে ভয়াবহ। এই যুদ্ধে হানাদার বাহিনীর ৩ জন সদস্য আহত হলে তারা ক্ষুদ্ধ হয়ে ব্যাপক গুলিবর্ষণ শুরু করে। বরইতলায় মুক্তিযোদ্ধাদের ক্যাম্পের কথা জানতে পেরে পাকহানাদার বাহিনী ওই গ্রামের ঘরবাড়িতে আগুন দেয়। চালায় নারকীয় হত্যাযজ্ঞ। মুক্তিযোদ্ধাসহ নিরীহ সাধারণ মানুষের উপর তারা হামলা চালায়। এমনকি মসজিদে ইত্তেকাফরত ৩০ জন মুসল্লীকে পিঠমোড়া করে বেঁধে গ্রামের উত্তর পার্শ্বে সারিবদ্ধ করে ব্রাশ ফায়ারে হত্যা করে।
সকাল থেকে বেলা ৩টা পর্যন্ত অবিরাম যুদ্ধ চলে। এতে প্রায় দু’হাজার গ্রামবাসী ঘর ছেড়ে অন্যত্র চলে যায়। অনেকে দ্রæত স্থান ত্যাগ করতে গিয়ে আহত হয়। যুদ্ধ শেষে পাকবাহিনী চলে গেলে স্থানীয়রা সেখান থেকে ১০৪ জনের মৃতদেহ পায় । এর মধ্যে ৭৬ জনের নাম বরইতলা শহিদস্মৃতি সৌধ ফলকের গায়ে লেখা রয়েছে। অজ্ঞাত রয়েছে ২৮ জনের নাম। এ যুদ্ধে হানাদার বাহিনীর ৬ সেনা এবং বাবু নামে এক স্থানীয় রাজাকার নিহত হয়। মুক্তিযোদ্ধাদের প্রবল প্রতিরোধের মুখে হানাদার বাহিনী তাদের ৬ সেনার লাশ রেখে কাজিপুর থানায় আশ্রয় নেয়। অবস্থা বেগতিক বুঝে ৩ ডিসেম্বর কাকডাকা ভোরে তারা কাজিপুর ছাড়তে বাধ্য হয়। শত্রæমুক্ত হয় কাজিপুর।


খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।