সেবা ডেস্ক: ভারতের সমর্থনকে কেন্দ্র করে শেখ হাসিনার ভবিষ্যত নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। ভারত কি হাসিনাকে ছেড়ে বাংলাদেশের জনগণের সাথে সম্পর্ক পুনরুদ্ধার করবে?
![]() |
দিল্লি কি শেখ হাসিনাকে ছাড়তে চলেছে ভারতের দ্বিধা |
দীর্ঘদিন ধরে ভারত সরকার শেখ হাসিনার প্রতি অকুণ্ঠ সমর্থন জানালেও, সাম্প্রতিক সময়ে ভারতীয় গণমাধ্যম এবং বিশ্লেষকদের বক্তব্যে একটি নতুন ধারা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। দ্যা প্রিন্ট, হিন্দুস্থান টাইমস এবং ইন্ডিয়া টুডে-এর মতো শীর্ষস্থানীয় সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে একটি বড় প্রশ্ন উঠেছে— দিল্লি কি শেখ হাসিনার ওপর আস্থা হারাতে চলেছে?
ভারতীয় বিশ্লেষকদের মতে, বাংলাদেশে শেখ হাসিনার জনপ্রিয়তা এখন নিম্নমুখী এবং জনগণের মধ্যে অসন্তোষ চরমে পৌঁছেছে। এ অবস্থায়, ভারতের কৌশলগত স্বার্থের জন্য শেখ হাসিনা কতটা নিরাপদ মিত্র তা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে। একসময়, দিল্লি থেকে প্রকাশিত প্রতিটি প্রতিবেদন ছিল শেখ হাসিনার পক্ষে, কিন্তু বর্তমানে পরিস্থিতি দ্রুত পরিবর্তন হচ্ছে। ভারতীয় গণমাধ্যমগুলি তার বিরোধী দল দমন, একদলীয় শাসন এবং গণতন্ত্রহীনতা নিয়ে সরাসরি সমালোচনা করছে।
দ্যা প্রিন্ট এর বিশ্লেষণে বলা হয়েছে, যদি ভারত শেখ হাসিনার প্রতি সমর্থন অব্যাহত রাখে, তবে তা তাদের নিজস্ব স্বার্থের জন্য বিপজ্জনক হয়ে উঠতে পারে, কারণ বাংলাদেশে ভারতবিরোধী মনোভাব ক্রমেই বাড়ছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় ভারতবিরোধী মন্তব্যের ঝড় চলছে এবং অনেক রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক মনে করছেন, ভারত শেখ হাসিনাকে বাঁচানোর চেষ্টা করলে পুরো বাংলাদেশকে হারানোর ঝুঁকি নিয়ে যাবে, যা দিল্লির জন্য একটি বড় সতর্কসংকেত।
এদিকে, বিজেপির জন্যও এটি নতুন চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছে। পশ্চিমবঙ্গে রাজনৈতিক ফায়দা লুটতে বিজেপি বাংলাদেশিদের পাকিস্তান-সমর্থক হিসেবে উপস্থাপন করলেও, কৌশলগত দৃষ্টিকোণ থেকে বাংলাদেশকে হারানো ভারতের জন্য আত্মঘাতী হতে পারে, বলে সতর্ক করেছেন বিশ্লেষকরা।
ভারতের নীতিনির্ধারক মহলে দ্বিধা স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। এক পক্ষ শেখ হাসিনার প্রতি সমর্থন অব্যাহত রাখতে চায়, অন্য পক্ষ বলছে, এখনই সরে যাওয়ার সময়। এক বিশ্লেষক মন্তব্য করেছেন, “শেখ হাসিনার ভারত-নির্ভরতা এখন তার রাজনৈতিক অভিশাপ হয়ে দাঁড়িয়েছে। ভারতের সমর্থন তাকে টিকিয়ে রাখতে পারবে না, বরং বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কের দীর্ঘমেয়াদী ক্ষতি ডেকে আনবে।”
বর্তমানে ভারতের সামনে দুটি পথ রয়েছে: একদিকে শেখ হাসিনাকে ছেড়ে দিয়ে বাংলাদেশের জনগণের সাথে সম্পর্ক পুনরুদ্ধার করা, অন্যদিকে হাসিনাকে টিকিয়ে রাখতে আরও গভীরভাবে জড়িয়ে পড়া, যা ভারতের জন্য দীর্ঘমেয়াদী ঝুঁকি হতে পারে।
এটি শুধুমাত্র বাংলাদেশের জন্য নয়, বরং দক্ষিণ এশিয়ার ভূরাজনীতিতে বড় পরিবর্তন আনতে পারে। শেখ হাসিনা জানেন, তার কপালের ভাঁজ আরও গভীর হতে চলেছে, এবং এখন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন হলো— দিল্লি কি সত্যিই তার বিশ্বস্ত হাসিনাকে ছেড়ে দেবে?
খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।