সেবা ডেস্ক: বাংলাদেশের আয়নাঘর নিয়ে ভয়াবহ তথ্য প্রকাশ, যেখানে সারাক্ষণ ফ্যান চলত নির্যাতনের শব্দ ঢাকতে। ফ্যান বন্ধ হলেই শোনা যেত কান্না আর গোঙানির আওয়াজ।
![]() |
আয়নাঘরে সারাক্ষণ ফ্যান চলতো, বন্ধ হলে কান্না আর গোঙানির আওয়াজ পাওয়া যেত |
বাংলাদেশে গুম ও গোপন বন্দিশালা নিয়ে সাম্প্রতিক সময়ে প্রকাশিত নানা তথ্যের মধ্যে উঠে এসেছে ভয়াবহ নির্যাতনের বিবরণ। প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম তাঁর ব্যক্তিগত ফেসবুক অ্যাকাউন্টে একটি পোস্ট শেয়ার করেছেন, যেখানে তিনি এক ভয়ঙ্কর সত্য উন্মোচন করেছেন।
ইলেকট্রিক শকের জন্য বিশেষ চেয়ার প্রেস সচিব শফিকুল আলমের পোস্টে উল্লেখ করা হয়েছে, আগারগাঁও অঞ্চলের একটি আয়নাঘরে ব্যবহৃত বিশেষ একটি চেয়ারের কথা। তিনি বলেন, "এই চেয়ারটা দেখে রাখা জরুরি। ফ্যাসিবাদের জননী শেখ হাসিনার আয়নাঘরের একটি কক্ষে রাখা এই চেয়ার।"
তিনি আরও জানান, এই চেয়ারটি মূলত ‘হাই ভ্যালু’ বন্দিদের ইলেকট্রিক শক দেওয়ার জন্য ব্যবহার করা হতো। ডিজিএফআই-এর বিশেষ শাখা কাউন্টার টেরোরিজম ইন্টেলিজেন্স ব্যুরো (সিটিআইবি) এই আয়নাঘরের দায়িত্বে ছিল।
নির্যাতনের বিভীষিকা আয়নাঘরে বন্দিদের ওপর যে অমানবিক নির্যাতন চালানো হতো, তা নিয়ে শফিকুল আলম আরও বলেন, "সারাক্ষণ একজস্ট ফ্যান চলত এই ঘরগুলিতে, যাতে নির্যাতনের শব্দ বাইরে না যায়। তবে ফ্যান বন্ধ হলেই স্পষ্ট শোনা যেত বন্দিদের কান্না আর গোঙানির শব্দ।"
এছাড়া, আয়নাঘরের অন্য বন্দিরা যারা এখন মুক্ত হয়ে এসেছেন, তারাও একই ধরনের ভয়াবহ অভিজ্ঞতা বর্ণনা করেছেন। কয়েক বছর আগে গুম হওয়া মেহেদি হাসান মুরাদ তাঁর ফেসবুক পোস্টে জানান, তাঁরা যেখানে বন্দি ছিলেন, সেখানে আলাদা টয়লেটের ব্যবস্থা ছিল না। ‘‘কোনো পর্দাও ছিল না, বদনা দিয়ে লজ্জাস্থান ঢাকতাম কোনোরকম।’’ তিনি আরও জানান, ফ্লোরের জায়গা এতটাই সংকীর্ণ ছিল যে কেউ শুয়ে থাকতে পারত না।
গুমের শিকার ব্যক্তিদের জন্য আন্তর্জাতিক তদন্তের আহ্বান এই ধরনের নির্যাতনের তথ্য সামনে আসার পর আন্তর্জাতিক মহলেও প্রতিক্রিয়া দেখা যাচ্ছে। জাতিসংঘের মানবাধিকার সংস্থা ইতোমধ্যে আয়নাঘরের সংখ্যা ও সেখানে সংঘটিত মানবাধিকার লঙ্ঘনের তদন্ত শুরু করেছে। প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস জানিয়েছেন, দেশের প্রতিটি আয়নাঘর চিহ্নিত করে সেখানে কী ঘটেছে, তার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত হবে।
মানবাধিকার সংগঠনগুলোর দাবি, বাংলাদেশে ৭০০ থেকে ৮০০ আয়নাঘর থাকতে পারে এবং প্রতিটি গুম ও নির্যাতনের ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত হওয়া প্রয়োজন।
খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।