কাজিপুর(সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি: আসছে পবিত্র ঈদুল আযহা। কোরবানীর জন্যে প্রয়োজনীয় দা কুড়াল, বটি, চাকু ছুরি তৈরির কারিগরদের(যাদের কামার বলা হয়) এখন চলছে দারুণ কদর।
![]() |
ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে কাজিপুরে ব্যস্ত সময় পার করছেন হাটুরে কামারগণ |
নিজেদের বাড়ির আঙিনা ছেড়ে এবার নতুন করে কাজের সন্ধানে তারা কাজিপুরের অনেক হাটে গিয়েও মানুষের প্রয়োজনীয় কোরবানীর সরঞ্জামাদি তৈরি করে দিচ্ছেন। আর এতে করে অন্য সময়ের চেয়ে নিচ্ছেন কিছু বাড়তি অর্থও। এমনি দৃশ্য এখন কাজিপুরের নাটুয়ারপাড়া হাটে দেখা গেছে।
হাটের অস্খায়ী দোকানগুলো থেকে অনরবত ভেসে আসে টুংটাং শব্দ। খাওয়া দাওয়ার সময়টুকু বাদ দিয়ে বেশ খানিকটা রাত অবধি অবিরাম কাজ করছেন তারা।
আগুনের শিখায় লোহা পুড়িয়ে তৈরি করা হয় এসব ছুরি, দা, বঁটি, চাপাতি। পশু কোরবানির পাশাপাশি মাংস কাটার জন্য। এসব কিনতে কামারের দোকানে ভিড় জমাচ্ছেন সাধারণ মানুষ।
আরও পড়ুন:
ক্রেতারা জানিয়েছেন, এবছর কোরবানীর মাংস কাটার সরঞ্জামের দাম অনেক বেশি রাখা হচ্ছে। কামারদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এ শিল্পের প্রধান উপকরণ লোহা,ইস্পাত ও কয়লার দাম বেড়ে গেছে। তাছাড়া ঈদের সামনে একটু বেশি সবাই নেয়।
সরেজমিনে উপজেলার বিখ্যাত নাটুয়ারপাড়া হাটে দিয়ে শোনা গেছে হাপরের হাঁসফাঁস আর হাতুড়ি পেটার শব্দ। লোহার হাতুড়ি পেটায় ছড়াচ্ছে সফুলিঙ্গ। এখানে সাপ্তাহিক দুই দিন শনিবার এবং বুধবার অবিরাম চলছে কাজ আর কাজ।
কামাররা জানান, বছরের এগারো মাসে তাদের ব্যবসা হয় এক রকম আর কোরবানীর ঈদের আগের এক মাসে ব্যবসা হয় আরেক রকম। তারা একমাস আগে থেকেই এই হাটে জায়গা করে নিয়ে কাজ করছেন। হাটে অস্থায়ী দোকান খুলে বসা রহিম কামার জানান, স্প্রিং লোহা {পাকা লোহা) ও কাঁচা লোহা সাধারণত এ দুই ধরণের লোহা ব্যবহার করে এসব উপকরণ তৈরি করা হয়।
স্প্রিং লোহা দিয়ে তৈরি উপকরণের মান ভালো,দাম ও বেশি। আর কাঁচা লোহার তৈরি উপকরণগুলোর দাম তুলনামুলক ভাবে কম। অনেকে এ্যাঙ্গেল, রড,স্টিং, রেলরাইনের লোহা,গাড়ির পাত ইত্যাদি কামাদের কাছে এনে বিভিন্ন জিনিস তৈরি করে। এর মজুরিও লোহা ভেদে নির্ধারণ করা হয়।
বেশির ভাগ কামারদের কাছ থেকেই লোহা কিনে বিভিন্ন জিনিস তৈরি করে বা রেডিমেট বানানো জিনিস নিয়ে যায়।
হাটের আরেক কামার মিয়াজান মিয়া জানান, লোহা পিটিয়ে বিভিন্ন জিনিস তৈরি করা আমার পেশা।বাপ দাদার পৈত্রিক সূত্রে আমি এই পেশায় জড়িত। একটি মাঝাড়ি ধরণের দা ও কাটারি ওজন অনুযায়ী ৩শ থেকে ৪শ টাকা পর্যন্ত বিক্রি।
সারাদিন হাড় ভাঙ্গা পরিশ্রম করে যে কয়টি জিনিস তৈরি করি তা বিক্রয় করে খুব বেশি লাভ হয়না। ঈদের মধ্যে একটু বাড়তি কাজ ও টাকা পাই। পরিবার-পরিজন নিয়ে ডাল-ভাত খেয়ে বেঁচে থাকার স্বার্থে এই পেশা আমি ধরে রেখেছি।
খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।