ইরানি ক্ষেপণাস্ত্র ইসরায়েলে আঘাত হেনেছে, বিভিন্ন স্থানে অগ্নিকাণ্ড ও হতাহতের খবর
ইরানের পাল্টা হামলায় ছোড়া ক্ষেপণাস্ত্র ইসরায়েলের বিভিন্ন স্থানে আঘাত হেনেছে, যার ফলে অগ্নিকাণ্ড ও ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছে ইসরায়েলি গণমাধ্যম। ইসরায়েলি আর্মি রেডিও জানিয়েছে, একটি ক্ষেপণাস্ত্র হাইফায় আঘাত হানে এবং তেল আবিবের পূর্বাঞ্চলে একটি ভবন লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়। ইয়েদিয়োথ আহরোনোথ পত্রিকার রিপোর্ট অনুযায়ী, উত্তর ইসরায়েলের একটি ভবনে সরাসরি ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত হেনেছে। এদিকে, ইসরায়েলি সম্প্রচার কর্তৃপক্ষ (IBA) জানিয়েছে—লাচিশ এলাকায় ৪ জন আহত হয়েছেন, হাইফায় দুটি ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, বিভিন্ন স্থানে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে, যার ভিডিও ইতিমধ্যেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। এই ঘটনায় ইসরায়েলি জনগণের মধ্যে আতঙ্ক ও উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। এর আগে, ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী জানিয়েছিল, তারা আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সক্রিয় রেখেছে, তবে এতসংখ্যক ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিহত করা সম্ভব হয়নি।
ইরানে অভিযান আরও ‘তীব্র’ করবে ইসরায়েল: সেনাপ্রধানের ঘোষণা
ইসরায়েলের সেনাপ্রধান আইয়াল জামির ঘোষণা দিয়েছেন, ইরানে চলমান সামরিক অভিযান আরও জোরদার করা হবে। তিনি এই অভিযানে ইরানের বিরুদ্ধে একটি “ঐতিহাসিক ও নজিরবিহীন অপারেশন” চালানোর কথা উল্লেখ করেছেন, যা ইসরায়েলের অস্তিত্বের জন্য হুমকি প্রতিহত করতে পরিচালিত হচ্ছে। সেনাপ্রধান জামির বলেন— “আমরা আমাদের অভিযান আরও তীব্র করবো এবং এর মাধ্যমে আগামী বহু বছর ধরে ইসরায়েলের নিরাপত্তা নিশ্চিত করবো। আমরা জানতাম এই পদক্ষেপের জন্য মূল্য দিতে হবে—এবং তাই দেরি না করে এখনই পদক্ষেপ নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।” ইসরায়েলের এই বক্তব্য মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনার মাত্রা আরও বাড়িয়ে তুলেছে। আন্তর্জাতিক মহল উদ্বিগ্ন যে, এ ধরনের ঘোষণায় পুরো অঞ্চল জুড়ে সম্পূর্ণ যুদ্ধাবস্থা সৃষ্টি হতে পারে।
ইরানের হুঁশিয়ারি: ‘গুরুত্বপূর্ণ এলাকায়’ অবস্থান না করতে ইসরায়েলিদের সতর্কবার্তা
ইসরায়েলকে লক্ষ্য করে নতুন করে ক্ষেপণাস্ত্র হামলার সময় ইরানের সশস্ত্র বাহিনী এক ভিডিও বার্তায় ইসরায়েলিদের সতর্ক করে বলেছে, তারা যেন 'জরুরি ও গুরুত্বপূর্ণ' এলাকাগুলোর কাছে অবস্থান না করে। ইরানি রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে সম্প্রচারিত ওই বার্তায় এক সেনাবাহিনীর মুখপাত্র বলেন— “আমাদের কাছে দখলকৃত ভূখণ্ডে অবস্থিত গুরুত্বপূর্ণ ও সংবেদনশীল স্থাপনার সম্পূর্ণ তথ্যভাণ্ডার রয়েছে। তাই ইসরায়েলি নাগরিকদের আহ্বান জানাই, আপনাদের যেন মানব ঢাল হিসেবে ব্যবহার না করা হয়—সে জন্য এসব এলাকাতে অবস্থান করা থেকে বিরত থাকুন।” ইরানের এই বক্তব্যকে ইসরায়েলসহ আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকরা একপ্রকার প্রত্যক্ষ হুমকি হিসেবেই দেখছেন। মধ্যপ্রাচ্যের উত্তপ্ত পরিস্থিতির মধ্যে এটি নতুন করে উদ্বেগ তৈরি করেছে।
ইসরায়েলের হামলায় দুই দিনে ইরানে নিহত ১২৮ জন: ইরানি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়
ইসরায়েলের টানা দুই দিনের হামলায় ইরানে অন্তত ১২৮ জন নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। স্থানীয় গণমাধ্যম এতেমাদ ডেইলি এই তথ্য প্রকাশ করেছে। শুক্রবার ও শনিবার ইরানের বিভিন্ন শহরে চালানো এই হামলায় প্রায় ৯০০ জন আহত হয়েছেন এবং তাদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, নিহতদের মধ্যে কমপক্ষে ৪০ জন নারী এবং একাধিক শিশু রয়েছে। এই হামলাগুলো ইরান-ইসরায়েল চলমান সংঘাতকে আরও সহিংস ও প্রাণঘাতী করে তুলছে। আন্তর্জাতিক মহল এখনো পর্যন্ত কার্যকর কোনো শান্তিপূর্ণ সমাধানে পৌঁছাতে পারেনি।
আবারো ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলা, ইসরায়েলে জরুরি সাইরেন—নাগরিকদের আশ্রয়কেন্দ্রে যাওয়ার নির্দেশ
ইরান আবারও ইসরায়েলের দিকে ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে। সিএনএন-এর রিপোর্ট অনুযায়ী, ইসরায়েলি সেনাবাহিনী নতুন করে ইরানি ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ শনাক্ত করেছে। এর পরপরই ইসরায়েলজুড়ে জরুরি সাইরেন বাজানো হয় এবং নাগরিকদের আশ্রয়কেন্দ্রে চলে যেতে বলা হয়। সিএনএনের সংবাদকর্মীরা জানান, তেল আবিবে বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে। ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী (IDF) জানিয়েছে— “আমাদের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সক্রিয় রয়েছে এবং ইরানের আক্রমণ প্রতিহত করতে সর্বাত্মক চেষ্টা চলছে।” অন্যদিকে, আল–জাজিরা জানিয়েছে, পরিস্থিতির মারাত্মক অবনতি হওয়ায় ইসরায়েল সকল বিমানবন্দর ও আকাশসীমা সম্পূর্ণরূপে বন্ধ ঘোষণা করেছে। এটি ইরান-ইসরায়েল উত্তেজনার আরেকটি বড় ধাক্কা হিসেবে দেখা হচ্ছে, যা গোটা মধ্যপ্রাচ্য জুড়েই অনিশ্চয়তা বাড়িয়ে দিয়েছে।
ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ইসরায়েলের হাইফায় চারজন আহত
ইরানের চালানো ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ইসরায়েলের উত্তরাঞ্চলীয় শহর হাইফায় কমপক্ষে চারজন আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে ইসরায়েলের ন্যাশনাল ইমার্জেন্সি সার্ভিস। এছাড়াও, রয়টার্স জানিয়েছে—হাইফা শহরে একাধিক ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত হানে এবং তীব্র বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে। হামলার ফলে স্থানীয় জনগণের মাঝে চরম আতঙ্ক বিরাজ করছে। হাইফার বিভিন্ন অংশে জরুরি সেবা বাহিনী কাজ করছে এবং আহতদের হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। এই হামলার ঘটনা ইরান ও ইসরায়েলের চলমান উত্তেজনাপূর্ণ পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলেছে।
খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।