শফিকুল ইসলাম: কন্যাসন্তান জন্ম নেওয়ায় শ্বশুর বাড়িতে উপহার হিসেবে মিষ্টির প্যাকেটে মাটি ও ইটের গুঁড়া উপহার দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে জামাই মোকছেদুল ইসলাম এর বিরুদ্ধে।
![]() |
রৌমারীতে কন্যা সন্তান জন্ম হওয়ায় মিষ্টির প্যাকেটে মাটি-ইটের গুঁড়া উপহার দিলেন জামাই মোকছেদুল ইসলাম |
ঘটনা ঘটেছে রবিবার (১১ জুন) বিকালের দিকে কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলার দাঁতভাঙ্গা ইউনিয়নের কাজাইকাটা গ্রামে। ১৪ জুন ঘটনাটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে ছড়িয়ে পড়লে এলাকায় ব্যাপক আলোচনা সমালোচনার ঝড় ওঠে।
পরিবার ও স্থানীয়রা সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার দাঁতভাঙ্গা ইউনিয়নের বড় ধনতোলা এলাকার সাহেব আলী ওরফে সবদুল হকের পুত্র মোকছেদুল ইসলাম এর সাথে একই ইউনিয়নের কাজাইকাটা গ্রামের আফতার আলীর কন্যা আছমা খাতুনের বিয়ে হয়। বিয়ের এক বছর পর তাদের ঘরে ফুটফুটে একটি কন্যা সন্তানের জন্ম হয়।
আরও পড়ুন:
কন্যা সন্তানের জন্মের খবর পেয়ে স্বামী মোকছেদুল ইসলাম গত বুধবার (১১ জুন) সকাল সাড়ে ৮টার দিকে শ্বশুর বাড়িতে যান। এ সময় বাজার থেকে শাশুড়ির জন্য একটি মিষ্টির প্যাকেট নিয়ে যান। পরে মিষ্টি খাওয়ার জন্য শাশুড়ি প্যাকেট খুলে দেখতে পায় সেখানে মিষ্টির বদলে মাটি ও ইটের গুঁড়া রয়েছে।
এ বিষয়ে কন্যা সন্তানের মা আছমা আক্তার বলেন, বিয়ের পর থেকে আমার স্বামী আমাকে যৌতুকের জন্য শারিরীক ও মানষিক ভাবে নির্যাতন করতেন। বিভিন্ন সময়ে আমার পরিবারের কাছে টাকা চাইতেন আমার স্বামী। আমরা গরিব, তাই টাকা দিতে পারি নাই। আমার গর্ভে সন্তান এসেছে, এ খবর জানার পর আমার ওপর আরও নির্যাতন করেন। স্বামী আমাকে বলতেন, মেয়ে হলে তোর কপালে দুঃখ আছে।
আছমা আরও বলেন, পরে আমার মেয়ে সন্তান জন্ম হয়। খবর পেয়ে আমার স্বামী আমাদের বাড়িতে মিষ্টির প্যাকেট নিয়ে আসেন। বাড়ির লোকজনকে মিষ্টি দিতে গিয়ে প্যাকেট খুলে দেখা যায় মাটি ও ইটের গুঁড়া।
এ বিষয়ে কন্যা সন্তানের বাবা মোকছেদুল ইসলাম বলেন, আমার কন্যাসন্তান জন্ম হওয়ার কথা শুনে আনন্দে শ্বশুরবাড়িতে এক কেজি মিষ্টি ও মেয়ের জন্য কিছু পোশাক নিয়ে যাই। এখন শ্বশুরবাড়ির লোকজন মিষ্টির কার্টনে নাকি মাটি-ইটের গুঁড়া দেখছে। এগুলো সব সাজানো ও মিথ্যা। তিনি আরও বলেন, আমার স্ত্রীকে আমি কখনো কোনো নির্যাতন করিনি। যারা আমার স্ত্রীকে দিয়ে এসব করাচ্ছে তাদের বিচার আল্লাহ করবে।
দাঁতভাঙ্গা ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডে ইউপি সদস্য আবু সাঈদ বলেন, এ বিষয়ে আমার কিছুই জানা নেই। এলাকার মানুষের কাছে আমি শুনেছি তবে খোঁজখবর নিয়ে জানা যাবে আসলে ঘটনাটি কি ঘটেছিল।
রৌমারী থানার অফিসার ইনচার্জ লুৎফর রহমান জানান, এবিষয়টি আমি জানিনা,তবে খোজখবর নেওয়া হচ্ছে।
খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।