তিনবার তারিখ ঘোষণা দিয়েও কলেজে
ভর্তির ফল প্রকাশ করতে পারেনি ঢাকা শিক্ষাবোর্ড। এ কারণে উদ্বেগ উত্কণ্ঠায়
প্রায় ১২ লাখ শিক্ষার্থী, যারা বিভিন্ন কলেজে ভর্তি হওয়ার জন্য অনলাইনে
আবেদন করেছে।
রাতভর
কম্পিটারের সামনে বসে থেকে, মোবাইল এসএমএসের দিকে নজর দিয়েও ফল প্রকাশের
খবর জানতে পারেনি। উদ্বিগ্ন অভিভাবক-শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন গণমাধ্যমের অফিসে
ফোন দিয়ে এ বিষয়ে তথ্য জানতে চেয়েছে।
শিক্ষাসচিব
মো. নজরুল ইসলাম খান বলেছেন, দুবারের ব্যর্থতার পর এবার আরো সতর্ক ও
ভর্তিচ্ছুদের ভোগান্তি কমাতে রবিবার ফল প্রকাশ করাই যুক্তিযুক্ত হবে।
তৃতীয়বার ভুল হলে বুয়েট ও শিক্ষাবোর্ড কারোরই মুখ রক্ষা হবে না।
ঢাকা
বোর্ড জানিয়েছে, বুয়েটের ৫ সদস্য বিশিষ্ট একটি টিম একাদশ শ্রেণীতে ভর্তির
ফল প্রস্তুত করার দায়িত্ব নেন। কিন্তু কারিগরি ত্রুটির যথসময়ে ফল প্রকাশ
করতে পারেনি,তারা বার বার সময় নেন। বোর্ডের কর্মকর্তারা এ বিষয় তাকিয়ে
ছিলেন বুয়েটের ওই টিমের দিকে। কিন্তু তারা পুরোপুরে ফল প্রস্তুত করতে
ব্যর্থ হন।
শনিবার
সকালে পুনরায় বুয়েটের কম্পিউটার বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক মো. কায়কোবাদের
নেতৃত্বে আরো ৬ সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি কাজের দায়িত্ব নেন। তারা বোর্ডকে
আশ্বস্ত করেন দ্রুত ফল প্রকাশ করা সম্ভব হবে।
বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১১টায় একাদশ শ্রেণীতে ফল প্রকাশের কথা ছিল। রাতভর অপেক্ষা করে সময় পার করেছে শিক্ষার্থীরা।
এরপর
শুক্রবার রাত সাড়ে ১১ টায় মেধা তালিকার প্রকাশের সময় নির্ধারণ করে বোর্ড।
কিন্তু এ সময়ও ফল প্রকাশে ব্যর্থ হয় বোর্ড। পরে জানা যায়, শনিবার সকাল ৮
টায় ফল প্রকাশ হবে। কিন্তু তাও হয়নি। সর্বশেষ ঢাকা বোর্ড থেকে রবিবার সকালে
ফল প্রকাশের কথা জানানো হয়। তবে এ বিষয়ে ওয়েবসাইটে কিছুই উল্লেখ নেই।
যে
ঠিকানায় ফল পাওয়া যাবে, সেখানে ‘২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষে একাদশ শ্রেণিতে
ভর্তিচ্ছুক শিক্ষার্থী ও সংশ্লিষ্টদের জানানো যাচ্ছে যে, ভর্তির ফলাফল
প্রক্রিয়াকরনের কাজ চলছে, ফলাফল প্রকাশের সময় শীঘ্রই জানিয়ে দেয়া হবে।’
উল্লেখ করা আছে।
ভর্তি
নীতিমালা অনুযায়ী, গত ৬ জুন একাদশ শ্রেণীতে অনলাইন ও এসএমএসে ভর্তির আবেদন
শুরু হয়। পূর্বঘোষিত সূচি অনুযায়ী যার শেষ সময় ছিল ১৮ জুন। তবে
শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি ও একাধিক কলেজ কর্তৃপক্ষের আবেদনের প্রেক্ষিতে
আবেদনের শেষ সময় ১৮ জুন থেকে বাড়িয়ে ২১ জুন করা হয়। কোন শিক্ষার্থী আবেদন
বাতিল করে পুনরায় আবেদন প্রেরণ করলে সেক্ষত্রে শেষ সময় ছিল ১৫ জুন। ১ জুলাই
একাদশ শ্রেণীতে ক্লাস শুরু হওয়ার কথা। আর বিলম্ব ফি ছাড়া ভর্তির শেষ
তারিখ ৩০ জুন।
ফল
প্রকাশে বিলম্ব হওয়ায় ভর্তির সময় বাড়ানো হবে কীনা এমন প্রশ্নের জবাবে ঢাকা
বোর্ডের চেয়ারম্যান বলেন, এখনও ফল প্রকাশ করতে পারিনি। ভর্তির সময় বাড়ানোর
নিয়ে এখনও ভাবিনি। যে সময় আছে তার মধ্যে ভর্তি করা সম্ভব হবে। তবে কলেজ
কর্তৃপক্ষ আবেদন করলে সময় বাড়ানোর চিন্তাভাবনা করা যেতে পারে।
২০১৫-১৬
শিক্ষাবর্ষে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির জন্য ১১ লাখ ৫৬ হাজার শিক্ষার্থী আবেদন
করে। এর মধ্যে শুধু ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের
কলেজগুলোতে ভর্তির জন্য আবেদন করেছে ৩ লাখ ৬৯ হাজার।