রিজার্ভ ব্যাংক অব
ইন্ডিয়ার গভর্নর রঘুরাম রাজন সম্প্রতি সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, বিশ্ব
অর্থনীতি ধীরে ধীরে মহামন্দার দিকে পতিত হচ্ছে। উন্নত দেশগুলোর কেন্দ্রীয়
ব্যাংকগুলোর সুদ হার শূন্যে নামিয়ে আনার ফল হিসেবে এ মহামন্দা হতে পারে। যা
১৯৩০ সালের মহামন্দার মতো হবে। এ সমস্যা শুধু উন্নত দেশেই নয় ছড়িয়ে যেতে
পারে অনেক দেশেই। এ অবস্থায় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নরদের সম্মিলিত প্রয়াসে
উপায় বের করা প্রয়োজন। লন্ডন বিজনেস স্কুলে এক বক্তব্যে তিনি এসব কথা
বলেন।
এদিকে
রঘুরাম রাজনের বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে আইএমএফের পক্ষ থেকে একটি গবেষণা
করা হয়েছে। যা ব্যাংক অব ইংল্যান্ডের অর্থনীতিবিদ অ্যামব্রোগিও সিসা
বিয়ানচি ও জন হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের আলেসান্দ্র রেবুসি পরিচালনা করেছেন।
গবেষণা প্রতিবেদনে রঘুরামের বক্তব্যের প্রেক্ষাপটে বলা হয়েছে, বিশ্ব
অর্থনীতি মন্দার দিকে যাওয়ার ক্ষেত্রে শুধু মুদ্রানীতির সম্প্রসারণই দায়ী
নয়। এমনকি সম্প্রতি ঘটে যাওয়া মন্দার ক্ষেত্রেও নয়। বরং আর্থিক স্থিতিশীলতা
বজায় রাখতে কার্যকরী নিয়ন্ত্রণ কাঠামোর অভাবই মন্দার কারণ। তাই মুদ্রানীতি
সম্প্রসারণ নয় বরং আর্থিক বিষয়াবলী নিয়ন্ত্রণে রাখতে কি করা যেতে পারে তা
নিয়ে ভাবা উচিত। যেন ফের অর্থনৈতিক মন্দার ঘটনা না ঘটতে পারে।
এদিকে
প্রায় এক দশক আগে আন্তর্জাতিক মুদ্রা সংস্থার (আইএমএফ) প্রধান অর্থনীতিবিদ
থাকা অবস্থায় রঘুরাম রাজন বিশ্ব অর্থনীতি মন্দার দিকে যাওয়ার পূর্বাভাস
দিয়েছিলেন। তখন অনেকেই তার এ কথাকে পাত্তা দেননি। বরং তাকে লাডাইটের সঙ্গে
তুলনা করেন। লাডাইট এমন একটি শ্রমিক সংঘ যারা ১৮১১-১৬ সালে বেকারত্বের
আশঙ্কায় অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতি ও প্রযুক্তি ধ্বংস করতে উদ্যত হয়েছিল। তবে
পরবর্তীতে ২০০৭ সালে এসে রঘুরামের কথাই সত্য প্রমাণিত হতে শুরু করে।
বিশ্বের উন্নত দেশগুলো মন্দায় পতিত হয়। তাই এবারও তার মহামন্দার আশঙ্কা
প্রকাশ করে বক্তব্য প্রদানে অনেকেই চিন্তিত হয়ে পড়েছেন।