বাংলাদেশে
বৈদেশিক বিনিয়োগ কমেছে। ২০১৩ সালে দেশে নিট বিনিয়োগ আসে ১৫৯ কোটি ৯১ লাখ
ডলার। আর ২০১৪ সালে তা কমে দাঁড়ায় ১৫২ কোটি ৬৭ লাখ ডলার। আগের বছরের তুলনায়
সরাসরি বৈদেশিক বিনিয়োগ (এফডিআই) কমেছে চার দশমিক ৭৪ শতাংশ। অন্য দিকে,
২০১৪ সালে দেশে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ মিলিয়ে মোট বৈদেশিক বিনিয়োগ আসে ২০৫
কোটি ৫৮ লাখ ডলার। জাতিসংঘের অঙ্গ সংস্থা ইউনাইটেড ন্যাশনস কনফারেন্স অন
ট্রেড এন্ড ডেভেলপমেন্টের (আঙ্কটাড) বিশ্ব বিনিয়োগ প্রতিবেদন-২০১৫-তে এ সব
তথ্য উঠে এসেছে।
বুধবার
রাজধানীর মতিঝিলে বাংলাদেশ বিনিয়োগ বোর্ডের অফিসে এ প্রতিবেদন প্রকাশ করা
হয়। মূল প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি
বিভাগের অধ্যাপক এম ইসমাইল হোসেন। তবে বিশেষজ্ঞরা প্রতিবেদনটিকে
ভ্রান্তিমূলক ও মারাত্মক দুর্বল বলে আখ্যা দেয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি
ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর বিদ্যুত্ ও জ্বালানী বিষয়ক উপদেষ্টা ড. তৌফিক-ই-এলাহী
চৌধুরী। বিনিয়োগ বোর্ডের নির্বাহী চেয়ারম্যান এস এ সামাদের সভাপতিত্বে
সরকারী হিসাব সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ড. মহিউদ্দিন খান
আলমগীর, বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর নাজনীন সুলতানা, ফরেন ইনভেস্টরস
চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (ফিকি) সভাপতি রূপালী চৌধুরী
বক্তব্য দেন।
আঙ্কটাডের
ওই রিপোর্টে বলা হয়—২০১৪ সালে সবচেয়ে বেশি বিনিয়োগ আসে ম্যানুফ্যাকচারিং
খাতে। আর এ খাতে মোট বিনিয়োগের পরিমাণ ছিল ৭২ কোটি ২৮ লাখ ৮০ হাজার ডলার।
বৈদেশিক বিনিয়োগে পরের স্থানেই রয়েছে ট্রেড অ্যান্ড কমার্স খাত। এ খাতে
বিনিয়োগ আসে ৩৬ কোটি ৬৭ লাখ ডলার। এর পরে ২৩ কোটি ৫০ লাখ ডলার বিনিয়োগ
এসেছে ট্রান্সপোর্ট, স্টোরেজ অ্যান্ড কমিউনিকেশন খাতে।
আরো
বলা হয়—একক খাত হিসেবে সবচেয়ে বেশি বিনিয়োগ আসে বস্ত্র ও পোশাক খাতে। পরের
স্থানেই রয়েছে ব্যাংকিং খাত, এ খাতে বিনিয়োগ আসে ৩১ কোটি ১৮ লাখ ৭০ হাজার
ডলার। তবে ব্যাংকিং খাতে আগের বছরের তুলনায় বিনিয়োগ কমেছে। এসব বিনিয়োগের
মধ্যে সবচেয়ে বেশি বিনিয়োগ হয়েছে বিদেশি প্রতিষ্ঠানগুলোর বাংলাদেশে
উপার্জিত আয়কে পুনঃ বিনিয়োগ করার মাধ্যমে। এ পুনঃ বিনিয়োগের মাধ্যমে
বিনিয়োগ হয়েছে ৯৮ কোটি ৮৭ লাখ ৯০ হাজার ডলার। এ ছাড়া, ইক্যুইটি বা নিজস্ব
মূলধন এসেছে ২৮ কোটি ৩ লাখ ১০ হাজার ডলারের।
অনুষ্ঠানে
প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রীর জ্বালানি উপদেষ্টা তৌফিক ই এলাহী
চৌধুরী বলেন, ‘এ প্রতিবেদনের মাধ্যমে বিনিয়োগের পুরো চিত্র যথাযথভাবে ফুটে
ওঠেনি। বাংলাদেশের এফডিআই গণনায় সব তথ্য এখানে সন্নিবেশিত হয়নি। এখানে যেসব
সূচক ধরে এফডিআই হিসাব করা হয়েছে এর বাইরেও অনেক বিনিয়োগ রয়েছে। রিপোর্টটি
ভ্রান্তিমূলক, এর অনেক দুর্বলতা রয়েছে। মাত্র ৬ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হারেও
বাংলাদেশ বহু সূচকে উন্নয়ন করেছে, যা ১০ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হারেও সম্ভব নয়।
শান্তি ও শৃঙ্খলা অব্যাহত থাকলে বাংলাদেশে বিনিয়োগ আরো বৃদ্ধি পাবে।’
বিশেষ
অতিথির বক্তব্যে সরকারি হিসাব সংক্রান্ত সংসদীয় কমিটির চেয়ারম্যান
মহিউদ্দীন খান আলমগীর বলেন, ‘বিনিয়োগ বাড়ে বাজারের আয়তনের ওপর, আমাদের
অভ্যন্তরীণ বাজার বিস্তৃত হচ্ছে। বিদেশি বিনিয়োগের সাথে সাথে দেশীয় বিনিয়োগ
বাড়ানোর লক্ষ্যে কাজ করতে হবে।