একনেক
সভায় বৃহস্পতিবার ২ হাজার ৩ কোটি টাকা ব্যয়ে মোট ৭টি প্রকল্পের অনুমোদন
দেয়া হয়। মোট ব্যয়ের মধ্যে সরকারি অর্থায়ন ৬৫৩ কোটি টাকা, প্রকল্প সাহায্য
১৩৩২ কোটি টাকা এবং বাকি ১৮ কোটি টাকা সংস্থার নিজস্ব অর্থায়ন। অনুমোদিত
৭টি প্রকল্পই নতুন।
ঢাকা,
গাজীপুর, নারায়ণগজ্ঞ ও সিলেট শহরে ভূমিকম্পের মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগের
প্রভাব ও ক্ষয়ক্ষতি কমাতে একনেক সভায় ১৩৮১ কোটি টাকার একটি প্রকল্পের
অনুমোদন দেয়া হয়। অনুমোদিত এ প্রকল্পটির নাম আরবান রেজিল্যান্স প্রজেক্ট।
সভা
শেষে জানানো হয়—রাজউক, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা
অধিদপ্তর ও পরিকল্পনা কমিশন যৌথভাবে ২০২০ সালের জুন নাগাদ প্রকল্পটি
বাস্তবায়ন করবে। প্রকল্পের আওতায় রাজউক ঝুঁকি-সংবেদনশীল ভূমি ব্যবহার
পরিকল্পনা প্রণয়ন করবে। এর আওতায় প্রতিষ্ঠানটি এ সব শহরের ভূমি জোনিং করে
ঠিক করে দেবে কোন এলাকায় সর্বোচ্চ কত তলার ভবন তৈরি করা যাবে। সেই সাথে
এটাও নিশ্চিত করবে, যাতে করে এ সব শহরে নতুন করে পুকুর ভরাট করে আর বিল্ডিং
তৈরি করা না হয়। বিল্ডিং তৈরিতে যেসব উপাদান ব্যবহূত হবে তা ভূমিকম্প
সহনশীল কি না, রাজউক তাও পরীক্ষা করে দেখবে। অপর দিকে, ঢাকা উত্তর সিটি
করপোরেশন স্যাটেলাইট ও কন্ট্রোল অফিস নির্মাণসহ হুইল ড্রেজার, এক্সাভেটর,
ক্রেন, মোবাইল জেনারেটরের মতো ভারী যন্ত্রপাতি কিনবে। আর দুর্যোগ
ব্যবস্থাপনা বিভাগ এ সংক্রান্ত ইনস্টিটিউট স্থাপনসহ প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি
কিনবে। প্রকল্পের আওতায় এ তিনটি প্রতিষ্ঠান ঠিক মতো প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে
কি না, তা তদারকি করবে পরিকল্পনা কমিশন। এ প্রকল্পটিতে বিশ্বব্যাংক ১
হাজার ৩৩২ কোটি টাকা প্রকল্প সাহায্য হিসেবে দেবে।
রেলওয়ের
মোট ২ হাজার ৪৯৪টি লেভেল ক্রসিং গেটের মধ্যে ৬৭২টি লেভেল ক্রসিং গেটে
সরকারিভাবে ১৮৮৯ জন গেটকিপার নিয়োগসহ সিগন্যালিং ব্যবস্থা স্থাপনের লক্ষ্যে
একনেক সভায় আলাদা দুটি প্রকল্পের অনুমোদন দেয়া হয়। মোট ৯৭ কোটি টাকা ব্যয়ে
বাংলাদেশ রেলওয়ে ২০১৭ সাল নাগাদ প্রকল্প দুটি বাস্তবায়ন করবে।
কক্সবাজারে
ক্ষতিগ্রস্ত ৬টি পোল্ডার নতুন করে মেরামত করতে মোট ২৬০ কোটি টাকা ব্যয়ের
একটি প্রকল্প অনুমোদন দেয়া হয়। বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড ২০১৭ সাল নাগাদ
প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে।
সভায়
জানানো হয়—কক্সবাজার জেলায় উপকূলীয় বাঁধের আওতায় ২০টি পোল্ডার পঞ্চাশ
বছরের পুরোনো। এর মধ্যে ৬টি পোল্ডার ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাসের আঘাতে
ভীষণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত। ফলে এ এলাকায় লোনা পানি সহজেই ঢুকে পড়ে ফসলের ব্যাপক
ক্ষতি করছে।
এ
দিকে সিলেট বিভাগের সিলেট, সুনামগঞ্জ, মৌলভীবাজার ও হবিগঞ্জ জেলার ৩০টি
উপজেলায় শস্যনিবিড়তা বাড়াতে একনেক সভায় অপর একটি প্রকল্পের অনুমোদন দেয়া
হয়। মোট ৭৪ কোটি টাকা ব্যয়ে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, কৃষি বিপণন অধিদপ্তর
ও বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন ২০১৯ সাল নাগাদ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন
করবে।
সভায়
জানানো হয়—জাতীয় গড় শস্যনিবিড়তা থেকে সিলেট বিভাগের গড় কম। দেশের খাদ্য
নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এ এলাকায় উন্নত জাত, মানসম্পন্ন বীজ, বালাই
ব্যবস্থাপনা, পরিচর্যা ও সেচ ব্যবস্থার মাধ্যমে শস্য উত্পাদন বৃদ্ধি করতে এ
প্রকল্পটির অনুমোদন দেয়া হয় বলে।
একনেক
সভায় ১৩৮ কোটি টাকা ব্যয়ে চট্টগ্রাম জেলার চন্দনাইশ ও সাতকানিয়া উপজেলার
সাঙ্গু ও চাঁদখালী নদীর উভয় তীর সংরক্ষণে অপর একটি প্রকল্পেরও অনুমোদন দেয়া
হয়।