রোজায় শারীরিক সমস্যাগুলো

S M Ashraful Azom
রোজাদারদের অনেক সময় বুক জ্বালাপোড়া হতে পারে। রোজায় বুক জ্বালাপোড়া ও ঢেঁকুর ওঠা কমানোর উপায় হচ্ছে তৈলাক্ত, ভাজাপোড়া ও ঝাল খাদ্য এড়িয়ে চলা। তাছাড়া চা পান ও ধূমপান পরিহার করলেও অনেকটা উপকার পাওয়া যায়। খাওয়ার সাথে সাথে শুয়ে না পড়া, উঁচু বালিশে শোয়ার অভ্যাস করা ও শরীরের ওজন কমালে বুক জ্বালাপোড়ার সমস্যা হ্রাস পায়।মাথাব্যাথা : রোজা রেখে অনেকেরই মাথা ব্যাথা হয়। মাথা ব্যাথা বিভিন্ন কারণে যেমন, পেট খালি থাকার কারণে, শরীরে পানির পরিমাণ কমে গেলে, কাজের সময়ে মাঝে মাঝে বিশ্রাম না নিলে এবং চা-সিগারেট না খাওয়ার জন্যও হতে পারে। তাই ধূমপায়ী ও চা পানে অভ্যসস্থদের রোজা শুরুর কয়েকদিন আগে থেকেই এসবের ব্যাপারে লাগাম টেনে ধরতে হয়। ঘুম কম হওয়ার জন্যও মাথা ব্যাথা হতে পারে।পানি শূন্যতা :  রোজাদারদের শরীরে পানি কমে যাওয়া খুবই স্বাভাবিক। ইফতারি থেকে সেহেরি পর্যন্ত, যদি প্রচুর পানি পান  করা না যায় তবে পানিশূন্যতাসহ বিভিন্ন সমস্যা হতে পারে। আষাঢ় মাসে দীর্ঘ সময়ের ও গরমের রোজায় পানিশূন্যতার পরিমাণ বেড়ে যায়। তাই রাতের সময়টা ছোট হলেও অন্ততঃ ৭-৮ গ্লাস পানি পানসহ তরল খাদ্য গ্রহণ, যথাসম্ভব ঠা-া ও আরাম আয়েশে থাকা দরকার। শরীরে পানি কমে যাওয়ার সহজ লক্ষণ হচ্ছে প্রশ্রাব কমে যাওয়া।কোষ্ঠকাঠিন্য : রোজায় কোষ্ঠকাঠিন্য হতে পারে। এ সমস্যা কমানোর জন্য ভাজাপোড়া ও তৈলাক্ত খাদ্য (যেমন আলুর চপ, পেঁয়াজু, বেগুনী ও অন্যান্য ভাজাপোড়া প্রচলিত ইফতার) গ্রহণ কমানোর পাশাপাশি পর্যাপ্ত পানি পান, প্রচুর শাকসবজি, ফল ও দই খাওয়া উচিত। প্রয়োজনে ইস্যুবগুলের ভুষি পানিতে ভিজিয়ে রেখে খাওয়া যেতে পারে।ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ হ্রাস : রোজা রেখে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখা কষ্টকর ও সাধনার ব্যাপার। ইনসুলিন গ্রহণকারী ডায়াবেটিস রোগীদের রোজা রাখা অনেক সময় অসম্ভব হয়ে দাঁড়ায়। ডায়াবেটিসে যারা ট্যাবলেট সেবন করেন, তাদেরও রোজার সময় ডাক্তারের পর্যবেক্ষণে থেকে যাবতীয় নিয়মকানুন ভালোভাবে মেনে চলা উচিত। রোজা রেখে দিনের বেলায় ডায়াবেটিসের নিয়মিত ব্যায়াম ও হাঁটাহাঁটি করা ঠিক না। ইফতারের এক ঘণ্টা পর হাঁটার অভ্যাস করা ভালো। রোজায় ডায়াবেটিস রোগীদের, বাসায় মাঝে মাঝে ব্লাড সুগার টেস্ট করে দেখতে হয়। রক্তে চিনির পরিমাণ কমে গিয়ে যেকোন সময় অঘটন ঘটতে পারে। ‘হাইপো’ হয়ে গেলে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব চিনির শরবত খেয়ে রোজা ভেঙে ফেলতে হবে।শারীরিক ও মানসিক চাপ : রোজায় দিনের বেলা খাদ্য ও পানীয় গ্রহণ থেকে বিরত থাকা ও অপর্যাপ্ত ঘুমের সমস্যার কারণ হতে পারে। রোজা রেখে শরীরে যতটুকু কুলায় ততটা কাজ করাই হিতকর। রোজায় রোদে চলাফেরা করা, অতিরিক্ত কায়িক শ্রম, খেলাধুলা ও হাঁটাহাঁটি করা ঠিক না। চাপ কমানোর জন্য রাগ, দুশ্চিন্তা ও ধূমপান পরিহার করা দরকার। রোজায় স্ট্রেস কমানোর একটা ভালো উপায় হচ্ছে- দৈনন্দিন কাজের পাশাপাশি ইবাদত ও ভালো ভালো কাজে যথাসম্ভব ব্যস্ত থাকা।ওজন নিয়ন্ত্রণ : সারাদিন উপবাসের পর রাতে স্বাস্থ্যসম্মতভাবে খেতে পারলে, রোজায় ওজন কমানোর একটা ভালো সুযোগ থাকে। প্রয়োজনে সঠিকভাবে এর সদ্ব্যবহার করা উচিত। ইফতার থেকে সেহরি পর্যন্ত নিয়ন্ত্রণহীনভাবে যাচ্ছে তাই খেয়ে গেলে বদহজম ও ওজনবৃদ্ধিসহ দৈনন্দিন কাজে নানারকম সমস্যা হতে পারে।রমজানের রোজা আত্মনিয়ন্ত্রণ ও আত্মশুদ্ধিকরণের একটা অপূর্ব সুযোগ। এর মাধ্যমে বিভিন্নভাবে লাভবান হওয়া যায়। রোজা রাখতে পারা ভাগ্যের ব্যাপার। 
ট্যাগস

#buttons=(Ok, Go it!) #days=(20)

Our website uses cookies to enhance your experience. Know about Cookies
Ok, Go it!
To Top