নতুন মাত্রা পাচ্ছে মধ্যপ্রদেশে দুর্নীতির ঘটনা

S M Ashraful Azom
ভারতের মধ্যপ্রদেশে সরকারি চাকরি ও মেডিকেল কলেজে নিয়োগ পরীক্ষায় দুর্নীতির ঘটনায় যতদিন যাচ্ছে ততই নতুন মাত্রা যোগ হচ্ছে। এ কেলেঙ্কারিতে জড়িয়ে হাজার হাজার লোকের গ্রেফতার, শীর্ষ রাজনীতিক ও আমলাদের সংশ্লিষ্টতাসহ নিয়োগ পরীক্ষার দুর্নীতিতে যারা অভিযুক্ত, সুবিধাভোগী বা সাক্ষী তাদের একের পর এক অস্বাভাবিক মৃত্যুতে রহস্য আরো দানা বেঁধে উঠেছে। 
 
মৃত্যুর মিছিলে সোমবার যোগ হয়েছে এক শিক্ষানবিশ সরকারি কর্মকর্তা। রাজ্যের সাগর জেলার একটি লেকে অনমিকা খুশওয়াহার মৃতদেহ ভাসতে দেখা যায়। এর আগে এই দুর্নীতির তদন্তে মধ্যপ্রদেশে গিয়ে দুর্নীতির দায়ে অভিযুক্তের পরিবারের ইন্টারভিউ নেয়ার সময় মারা যান এক সাংবাদিক। এছাড়া রাজ্যের একটি মেডিকেল কলেজের ডিনের লাশ দিল্লির একটি হোটেলের দরজা ভেঙে উদ্ধার করা হয়। যিনি মাত্র দুদিন আগে 'ব্যপম' দুর্নীতি বিষয়ে একটি তদন্ত রিপোর্ট পুলিশের কাছে জমা দিয়েছিলেন। এ নিয়ে মধ্যপ্রদেশে ‘ব্যপম’ কেলেঙ্কারি নামে পরিচিত এই দুর্নীতিতে গত তিনদিনে তিনজনের অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে।
 
এ ঘটনায় তীব্র চাপের মুখে রাজ্যের বিজেপি মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিং চৌহান বলেছেন, আদালত চাইলে এই সব মৃত্যু নিয়ে কেন্দ্রীয় সংস্থা সিবিআই তদন্তে তার আপত্তি নেই। বিরোধী কংগ্রেস তার পদত্যাগ দাবি করেছে। ফুঁসে উঠেছে শিক্ষার্থীরাও। এই ঘটনার প্রতিবাদে চলছে বিক্ষোভ সমাবেশ। 
 
ভারতের সংবাদমাধ্যমে বলা হচ্ছে এ পর্যন্ত এই কেলেঙ্কারির সঙ্গে কোনো না কোনোভাবে জড়িত, এমন অন্তত ২৫ জনের রহস্যময় মৃত্যু হয়েছে। তবে কেউ কেউ দাবি করছেন, এই সংখ্যা চল্লিশেরও বেশি।
 
'ব্যপম' দুর্নীতিতে মধ্যপ্রদেশের রাজ্যপাল রাম নরেশ যাদব ও তার ছেলে শৈলেশ যাদব জড়িত বলে অভিযোগ উঠেছে। রাজ্যপালের ছেলেও গত মার্চ মাসে অস্বাভাবিকভাবে হঠাৎ মারা যান। গভর্নর রাম নরেশ যাদব এ সংক্রান্ত মামলায় ১০ নম্বর আসামী বলে জানিয়েছে এনডিটিভি। 
 
এই দুর্নীতিতে রাজ্যের তিন দফার মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিং চৌহানের স্ত্রী ও পরিবারের অন্য সদস্যরাও জড়িত বলে অভিযোগ উঠেছে, তবে চৌহান জোরালোভাবে তা অস্বীকার করে আসছেন। তবে এখন চাপের মুখে ব্যপম-কাণ্ডে সিবিআই তদন্তের ব্যাপারে মাথা নোয়াতে বাধ্য হলেন মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিংহ  চৌহান। 
 
উল্লেখ্য, মায়ের ক্যান্সারের চিকিত্সা করাতে গিয়ে গোয়ালিয়রের অধিবাসী ২৬ বছর বয়সী আশিস দেখেন, রাজ্যের অনেক চিকিত্সকেরই সাধারণ প্রশিক্ষণও নেই। ঘটনা জানতে নিজেই তদন্ত শুরু করেন। সহায়তা নেন তথ্য অধিকার আইনের। আর এতেই বেরিয়ে পড়ে মূল ঘটনা। আশিসের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে ২০১৩ সালে মেডিকেল প্রবেশিকা পরীক্ষায় দুর্নীতি নিয়ে মামলা করে পুলিশ। আর এ সময় গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়ে সহায়তা করেন চিকিৎসক আনন্দ রায়। এরপরই তা ঝড় তুলতে শুরু করেছে ভারতের রাজনীতিতে। সূত্র: বিবিসি, এনডিটিভি
ট্যাগস

#buttons=(Ok, Go it!) #days=(20)

Our website uses cookies to enhance your experience. Know about Cookies
Ok, Go it!
To Top