বাংলাদেশ ভারত ছিটমহলগুলো আনুষ্ঠানিক বিনিময়ের আর মাত্র এক সপ্তাহ বাকী থাকলেও উদ্বেগ দেখা দিয়েছে জরিপে বাদ পড়া ব্যক্তিদের নিয়ে। এ সংকটের সমাধান নিয়ে আলোচনা হচ্ছে ঢাকায় বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হওয়া দু’দেশের কর্মকর্তাদের যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপের সভায়। কর্মকর্তাদের দেয়া তথ্য অনুযায়ী বাংলাদেশ ভারত স্থল সীমান্ত চুক্তি বাস্তবায়নের জন্য ২০১১ সালে একটি যৌথ জরিপ হয়েছিলো বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে। সেই জরিপে যাদের নাম অন্তর্ভুক্ত হয়েছে, তারাই কেবল কোন দেশে থাকবে, সেই মতামত নেয়া হয়েছে গত ৬ থেকে ১৬ জুলাই পর্যন্ত। আগের যারা জরিপে ন্তর্ভুক্ত হতে পারেননি, এবার তাদের কোনো মতামত নেয়া হয়নি। আর এ কারণেই জরিপে বাদ পড়া ব্যক্তিদের নিয়ে আইনগত সমস্যার আশংকা দেখা দিয়েছে কর্মকর্তাদের মধ্যে। সেকারণেই আজ দুদেশের কর্মকর্তাদের যৌথ ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকে বৃহস্পতিবার দিনভর আলোচনা হয়েছে বাদ পড়া ব্যক্তিদের নিয়েই। বৈঠকে অংশ নেয়া লালমনিরহাটের জেলা প্রশাসক হাবিবুর রহমান বলেন, কেউ কেউ বলছেন তারা ২০১১ এর জরিপ থেকে বাদ পড়েছেন। আবার কেউ কেউ অপশন প্রত্যাহার বা পরিবর্তনের (ভারতে যাওয়া বা বাংলাদেশে থেকে যাওয়া) কথা বলছেন। এখন প্রত্যেক ব্যক্তিকে ধরে ধরে আলোচনা করতে হচ্ছে। না হলে আমরা যদি এগিয়ে যাই তাহলে লিগ্যাল সমস্যা দেখা দিতে পারে। এছাড়া সভায় ছিটমহল বিনিময় ও যারা ভারতে যেতে চান তাদের পাঠানোর প্রক্রিয়া নিয়েও আলোচনা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা। দুদেশের যৌথ জরিপ অনুযায়ী বাংলাদেশের মধ্যে ১১১টি ছিটমহল থেকে মোট ৯৭৯জন ভারতের নাগরিক হতে চান। সিদ্ধাš অনুযায়ী ১ আগস্ট থেকে ৩০ নভেম্বর পর্যš ভারতে চলে যেতে পারবেন। যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপের বৈঠকে এসব ব্যক্তিদের ভারতে যাওয়ার প্রক্রিয়াসহ আনুষঙ্গিক বিষয়গুলোও আলোচনায় এসেছে জানিয়ে জেলা প্রশাসক বলেন, খুঁটিনাটি সব বিষয় আলোচনায় আসছে। লোকজন কিভাবে যাবে, কখন যাবে, পুঁজোর আগে না পরে, জমি বিক্রি নিয়ে কি হবে,আমরা কতটুকু নিরাপত্তা দেব এমন সব বিষয়। তিনি বলেন তাদের পর্যায়ে এগুলো সমাধান না হলে প্রয়োজনে সরকারের উচ্চপর্যায় থেকে এগুলোর সমাধান আসবে। কর্মকর্তারা বলছেন তাদের আশা ছিটমহল বিনিময়কে ঘিরে যেসব সংকট দেখা দিয়েছে সেগুলো নিয়ে ওয়ার্কিং গ্রুপ কালও আলোচনা চালিয়ে যাবে। প্রয়োজনে উভয় দেশের সরকারের সহযোগিতা নিয়ে রাজনৈতিকভাবেই সেগুলোর সমাধান করে ৩১ জুলাই মধ্যরাতে নির্ধারিত সময়ে ছিটমহলগুলো বিনিময় সম্পন্ন করা যাবে। উভয় দেশের সরকারের হিসেব অনুযায়ী ভারতের মধ্যে বাংলাদেশের ৫১ টি এবং বাংলাদেশের ভেতরে ভারতের ১১১ টি ছিটমহল রয়েছে। এর মধ্যে জরিপে বাংলাদেশের মধ্যে থাকা ছিটমহলে সাড়ে ৪১ হাজার এবং ভারতের মধ্যে থাকা ছিটমহলে ১৪ হাজার মানুষের বসবাসের তথ্য রয়েছে। তবে ২০১১ সালের জরিপে সার্বিক ভাবে কত জন বাদ পড়েছে তার সুনির্দিষ্ট কোন তথ্য নেই। যখন যে আবেদন করছেন তার বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে এখন সমাধানের চেষ্টা করছেন দুদেশের কর্মকর্তারা। সূত্র: বিবিসি বাংলা