টানা বর্ষণে
চট্টগ্রাম মহানগরীর অধিকাংশ নিচু এলাকায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। এর সাথে
কয়েকটি এলাকায় জোয়ারের পানি ঢুকে পড়ায় মানুষের দুর্ভোগ অনেক বেড়েছে।
বৃহস্পতিবার সারাদিন চট্টগ্রামের আকাশ ছিল মেঘলা। তবে মধ্যরাত থেকে শুরু হয়
প্রবল বর্ষণ। প্রবল বর্ষণে নগরীর শাহ গরিবুল্লাহ শাহ (র.) এর মাজারসহ
বিভিন্ন কবরস্থানে অনেক নতুন ও পুরানো কবর ভেঙে গেছে। রাস্তাঘাটে সৃষ্টি
হওয়া ছোটখাটো খানাখন্দ বড় গর্তে পরিণত হয়েছে। বৃষ্টির কারণে বাংলাদেশ ও
দক্ষিণ আফ্রিকার মধ্যে চলতি টেস্ট ম্যাচের চতুর্থ দিনের খেলা পরিত্যক্ত
ঘোষণা করা হয়েছে। আবহাওয়া অফিস জানায়, গতকাল শুক্রবার বিকাল ৩টা পর্যন্ত
পূর্ববর্তী ২৪ ঘন্টায় নগরীতে ২২৪ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।
মৌসুমী বায়ু সক্রিয় থাকায় আরো কয়েকদিন বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকার পূর্বাভাস
দেয়া হয়েছে।
প্রবল
বৃষ্টিপাতের কারণে নগরীর বিভিন্ন কবরস্থানে নতুন ও পুরানো অনেক কবর ভেঙে
গেছে। এসব ক্ষতিগ্রস্ত কবর মেরামতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কোনো উদ্যোগ নিচ্ছে
না বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। আবার কবর মেরামতের অজুহাতে ব্যাপক চাঁদাবাজি
চলছে বলেও অনেকে অভিযোগ করেন।
এদিকে
নগরীর বিভিন্ন স্থানে পানি জমে যাওয়ায় দুর্ভোগে পড়েছেন নগরবাসী। নগরীর
অক্সিজেন, হামজারবাগ, মুরাদপুর, মোহাম্মদপুর, আতুরার ডিপো, বহদ্দারহাট,
শুলকবহর, কাতালগঞ্জ, নাসিরাবাদ, বায়েজিদ, ষোলশহর, চকবাজার, পাঁচলাইশ,
বাকলিয়া ডিসি রোড, খাজা রোড, চান্দগাঁও, মোহরা, বাকলিয়া, চাক্তাই,
কোরবানিগঞ্জ, মাস্টারপুল, বৌবাজার, মিয়াখান নগর, রাজাখালী, দেওয়ানবাজার,
আগ্রাবাদ, ছোটপুল, বড়পুল, সিডিএ, হালিশহর, পাহাড়তলী, সরাইপাড়া, সাগরিকা,
কাঁচারাস্তার মাথা ও পতেঙ্গার কয়েকটি এলাকার মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছেন।
এসব
এলাকায় বাসাবাড়ি ছাড়াও বিভিন্ন অফিস, কলকারখানা ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে পানি
ঢুকেছে। চকবাজারসহ কয়েকটি কাঁচাবাজারে পানি জমে থাকায় সাপ্তাহিক ছুটির
দিনে বাজার করতে গিয়ে ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে। রাস্তায় যান চলাচল কম থাকায়
রিকশা ও অটোরিকশা চালকরা ইচ্ছামতো ভাড়া হাঁকিয়েছেন। সকালের দিকে অনেককে
দৈনন্দিন কাজ ফেলে বাসার পানি সেচতে দেখা যায়। পানি উঠার
কারণে অনেকের টিভি, ফ্রিজ, গাড়িসহ মূল্যবান সামগ্রী নষ্ট হয়ে গেছে। প্রবল
বৃষ্টিতে বিভিন্ন রাস্তায় অসংখ্য খানাখন্দ তৈরি হয়েছে। গর্তে গাড়ি পড়ে
ছোটখাটো দুর্ঘটনাও ঘটেছে। বৃষ্টির কারণে ঈদের ছুটি শেষে কর্মস্থলে ফিরতে
অনেককে দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে।