আষাঢ়ের এই সময়ে যখন তখন বৃষ্টি নামবে, এটাই স্বাভাবিক। তবে প্রয়োজনে
বাইরেও যেতে হয় সবাইকে। বৃষ্টিতে ভিজতে মানা নেই, তবে খেয়াল রাখতে হবে যে এ
সময় চুলের প্রয়োজন বিশেষ যত্নের।
কীভাবে বৃষ্টির দিনে আপনার চুলের যত্ন নিবেন, তা নিয়ে পরামর্শ জানাচ্ছেন নওশীন শর্মিলী
বৃষ্টিতে চুল ভিজে গেলে চুল অবশ্যই ভালো করে ধুয়ে নেওয়া উচিত। নয়তো
বৃষ্টির পানি মাথায় বসে যেমন ঠাণ্ডা লেগে যাওয়ার ভয় থাকে, তেমনি চুলে জট
পাকিয়ে যায়। অনেকেই মনে করেন বৃষ্টির দিনের স্যাঁতস্যাঁতে আবহাওয়ায়
প্রতিদিন চুল ভেজানোর প্রয়োজন নেই। কিন্তু এ রকম সময়েই আসলে রোজ চুল ধোয়া
উচিত। কারণ স্যাঁতস্যাঁতে আবহাওয়ায় চুলের গোড়া ভিজে যায়। ফলে ভেজা চুলের
গোড়ায় ফাংগাস হওয়ার ব্যাপক আশঙ্কা থাকে।
যারা প্রতিদিন বাইরে যান, তারা একদিন পরপর এবং যারা বাইরে খুব একটা বের হন
না তারা সপ্তাহে অন্তত দু’বার শ্যাম্পু করুন। যাদের প্রতিদিন শ্যাম্পু
করার প্রয়োজন হয়, তারা মাইল্ড শ্যাম্পু ব্যবহার করুন। শ্যাম্পু শেষে চুলের
ধরন অনুযায়ী কন্ডিশনার ব্যবহার করুন। ভেজা চুল কখনোই ঘষে ঘষে মুছবেন না,
এতে চুলের গোড়া দুর্বল হয়ে পড়ে।
স্বাস্থ্যোজ্জ্বল চুলের জন্য হেয়ার অয়েল ম্যাসাজ একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।
বিশেষ করে বর্ষাকালের স্যাঁতস্যাঁতে পরিবেশে চুলের যত্নে বিশেষ ধরনের অয়েল
ম্যাসাজের প্রয়োজন হয়। যাদের চুল নেতিয়ে পড়ে বা ম্রিয়মাণ হয়ে পড়ে তারা একটি
পাকা কলা ভালো করে চটকে নিন। এরপর এতে এক চা চামচ অলিভ অয়েল মেশান। এই
মিশ্রণটি পুরো চুলে ভালো করে লাগান। পনেরো মিনিট পর শ্যাম্পু করে ধুয়ে
ফেলুন।
যাদের চুল অত্যন্ত ভঙ্গুর ও রুক্ষ তারা দুই টেবিল চামচ অলিভ অয়েলের সাথে
এক টেবিল চামচ মধু মিশিয়ে হালকা গরম করে নিন। মিশ্রণটি পুরো চুলে লাগান,
মাথার ত্বকে লাগাবেন না। পনেরো থেকে বিশ মিনিট রেখে শ্যাম্পু করে চুল ধুয়ে
ফেলুন।
চুলের উজ্জ্বলতা ও ঝরঝরে ভাব ধরে রাখতে এক টেবিল চামচ অলিভ অয়েল, এক টেবিল
চামচ নারকেল তেল ও একটা ভিটামিন ই ক্যাপসুল একসাথে মিশিয়ে হালকা গরম করে
নিন। পুরো চুল ও চুলের গোড়ায় লাগিয়ে হালকা ম্যাসাজ করুন। আধা ঘণ্টা থেকে এক
ঘণ্টা পর চুল শ্যাম্পু করে ধুয়ে ফেলুন।
খেয়াল রাখতে হবে
চুল বৃষ্টিতে ভিজে গেলে বাড়ি ফিরে অবশ্যই মাইল্ড শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে
ফেলুন। বেবি শ্যাম্পুও ব্যবহার করতে পারেন। চুল তাড়াতাড়ি শুকানোর জন্য
বারবার হেয়ার ড্রায়ার ব্যবহার করলে চুল তার স্বাভাবিক ময়েশ্চার হারিয়ে
ভঙ্গুর হয়ে পড়ে। চুলে জটা লাগলে প্রথমে আঙুল দিয়ে জট ছাড়িয়ে নিন তারপর মোটা
দাঁতের চিরুনি দিয়ে চুল আঁচড়ান। চুল ভেজা রাখবেন না। ভেজা চুলে খুশকি
হওয়ার আশঙ্কা বেড়ে যায়। ভেজা চুল বেঁধে রাখবেন না, এতে চুল দুর্বল হয়ে যায় ও
চুল পড়া বেড়ে যায়। বৃষ্টির সময় বাতাসে আর্দ্রতার পরিমাণ বেশি থাকে। তাই এ
সময় হেয়ার স্ট্রেটনিং, কার্লিং বা পামিং যতটা কম করা যায় তত ভালো।