সারাদিনের
হাজারো কাজের পরে শরীরের ক্লান্তি কাটানোর জন্য একটা প্রশান্তিময় গোসল
দরকার। নিয়মিত গোসল না করলে ঘুমের সমস্যাও দেখা দিতে পারে। কারণ গোসল না
করলে শরীরের তাপমাত্রা বেড়ে যায়। প্রতিদিনের পরিচ্ছন্ন জীবনযাপনে পরিচ্ছন্ন
গোসল তো চাই চাই। প্রশান্তিময় গোসলের পরামর্শ নিয়ে লিখেছেন সাবেরা সুলতানা
গরম,
বৃষ্টি বা শীতেও নিয়মিত গোসল করা দরকার। গোসল না করলে অস্বন্তি, ঘাম ও
ঘামাচি, পানিশূন্যতা থেকে ঘন ঘন পিপাসা, ক্লান্তি, গায়ে দুর্গন্ধ, রাতে ঘুম
না আসা ইত্যাদি বিভিন্ন রকম শারীরিক সমস্যা হতে পারে। রোজ গোসল না করার
অভ্যাসটি এক কথায় খুবই অস্বাস্থ্যকর। আর বিশেষ করে আমাদের মতো গ্রীষ্ম
প্রধান দেশে যেখানে আর্দ্রতা এত বেশি। সেক্ষেত্রে রোজ গোসল না করলে দেখা
দিতে পারে নানা ধরনের অসুখ-বিসুখ। প্রতিদিন গোসল না করলে দেখা দিতে পারে
স্কিন র্যাশসহ নানা রকম ত্বকের সমস্যা। এছাড়া গায়ের দুর্গন্ধ তো আছেই। শুধু
নামিদামি ব্র্যান্ডের সুগন্ধি লাগালেই এই দুর্গন্ধের সমস্যা থেকে মুক্তি
পাওয়া সম্ভব নয়। বরং সমস্যার হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য রোজ নিয়ম করে গোসল
করাটা খুব জরুরি। এমন অনেকেই আছেন যাদের মাঝে গোসল করার সময়ই দেখা দেয়
রাজ্যের সব আলস্য। তারা মনে করেন ২-৩ দিন পর পর গোসল করলেই চলবে, প্রতিদিন
শুধু স্পঞ্জ বাথ কিংবা হাত মুখ ধুলেই হবে। কিন্তু তাদের এই ধারণা একদম ভুল।
যারা শীত প্রধান দেশে থাকেন তারা রোজ গোসল না করে স্পঞ্জ বাথ নিয়ে থাকেন।
তাদের ক্ষেত্রে ব্যাপারটা কাজে দেয়। তবে আমাদের দেশে গরম ও আর্দ্রতার
পাশাপাশি মারাত্মক দূষণের সমস্যাও আছে। ফলে প্রতিদিন ঘামের সাথে আমাদের
শরীরে জমে অনেক ধুলো-ময়লা। আর এই ধুলো-ময়লা আমাদের শরীরের রোমকূপ বন্ধ করে
দেয়। এছাড়া গরমে আমাদের শরীর থেকে ঘামের মাধ্যমে প্রচুর পানি বেরিয়ে যায়,
ফলে ত্বক শুষ্ক হয়ে পড়ে। সেক্ষেত্রে রোজ গোসল করলে ত্বক রিহাইড্রেটেড হয়,
কারণ পানি ময়েশ্চারাইজারের কাজ করে। গরমে প্রচুর পানি পান নিশ্চয়ই করে
থাকেন আপনি। পাশাপাশি দিনে ২-৩ বার অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল সাবানসহ গোসল
করলে ও ঠাণ্ডা পরিবেশে প্রয়োজনীয় বিশ্রাম নিলে নানা রকম অসুখ থেকে নিষ্কৃতি
পাওয়া যায়। সুযোগ থাকলে পুকুরের পানিতে বা সুইমিং পুলে সাঁতার কাটতে পারলে
অনেক ভালো। এতে শরীর ঠাণ্ডা হওয়ার পাশাপাশি বেশ খানিকটা ব্যায়ামও হয়ে যায়।
ভোরের পানি শীতল থাকে। তাই স্নানের শীতল পরশ পেতে হলে এ সময়টা বেছে নেওয়া
যায়। রাতে বিছানায় যাওয়ার আগে আরেকবার গোসল করতে পারলে ভালো ঘুম হয় এবং তা
শরীরের জন্যও ভালো। গরমে গোসল করলে অল্পতেই অনেকটা ক্লান্তি দূর হয়ে যায়,
চামড়া পরিষ্কার থাকে, ঘামাচিসহ বিভিন্ন চর্ম সমস্যা প্রতিহত হয়,
পানিশূন্যতা কমে গিয়ে চামড়ায় সৌন্দর্য বাড়ায়, চুল পড়া কমে ও ভালো ঘুম হয়।
পরামর্শ
প্রতিদিন
নিয়ম করে, বিশেষ করে গরম কালে দিনে দুইবার গোসল করা একান্ত জরুরি। যারা
খেলাধুলা করে বা জিম বা নাচ করেন তারা অবশ্যই কাজের শেষে ভালো করে গোসল করে
নেবেন। এতে করে যেমন শরীরে জমে থাকা ময়লা পরিষ্কার হবে তেমনি আপনার মনও
তরতাজা হয়ে যাবে।
কাজের
চাপে আমরা অনেকেই সকালের দিকে ভাল মতো গোসল করার সময় পাই না, তাই সন্ধ্যায়
বাড়ি ফিরেই বেশ খানিকটা সময় নিয়ে গোসল করুন। এই সময় প্রতিদিনের সব চিন্তা
মন থেকে একদম সরিয়ে ফেলুন। বডি ওয়াশ বা সাবানের পাশাপাশি বাথ সল্ট ও
ব্যবহার করতে পারেন।
যাদের
বাথরুম বেশ বড় ও বাথটাব আছে তারা একটা রিলাক্সাড আবহ তৈরি করতে চাইলে
গোসলের সময় হালকা করে পছন্দের গান চালিয়ে দিতে পারেন এবং সুগন্ধি মোমবাতিও
জ্বালাতে পারেন। দেখবেন আপনার মুডটা একদম পাল্টে গিয়েছে।
গায়ে ব্যথা থাকলে দূর করার জন্য হাল্কা গরম পানি দিয়ে গোসল করুন।
গোসল
মানে কেবল গায়ে পানি ঢালা নয়। বরং সাবান বা বডি ওয়াশ ব্যবহার করে শরীরে
জমে থাকা ময়লা দূর করা। চুলও একইভাবে পরিষ্কার করে নেবেন।
নিয়মিত
গোসল না করলে নানা রকমের চর্ম রোগ দেখা দেয়। আর চর্মরোগ যদি হয়েই গিয়ে
থাকে, তাহলে গোসলের পূর্বে পানিতে নিমপাতা ভিজিয়ে রাখুন ঘণ্টা খানেক। তারপর
তা দিয়ে সেরে নিন গোসল। কিছুদিন ব্যবহারের নিরাময় হবে।