দিনশেষে
স্কোর—৮ উইকেটে ২৪৬। দৃশ্যত মোটেও ভালো কিছু না। তবে আরও দর্শনীয় হতে
পারতো স্কোরটা। অনায়াসে স্কোরটা ৪ উইকেটের বিনিময়েই হতে পারতো। সেটা হল না
কেবল একটা দুর্ভাগ্যজনক ঘটনার কারণে। দিনের সেরা ব্যাটসম্যানটির বিপক্ষে
উইকেটের পেছনে ক্যাচের আবেদন ছিল। বারবার দেখেও আউটের স্বপক্ষে টেলিভিশন
রিপ্লেতে তেমন কিছু পাওয়া গেলো না। অথচ তৃতীয় আম্পায়ার আউটের সিদ্ধান্ত
বহাল রাখলেন।
মাথা নিচু করে ফিরে আসতে হল দীর্ঘদিন পর রানে ফিরে ৬৫ রানের ইনিংস খেলা মুশফিকুর রহিমকে।
এই
ফিরে আসার ভেতর দিয়ে শুধু মুশফিক যে আরও বড় ইনিংস থেকে বঞ্চিত হলেন, তাই
নয়; বাংলাদেশ তাদের অসামান্য দিনটাকে বাঁধিয়ে ঠিক রাখতে পারলো না।
এখনও
ম্যাচ বাংলাদেশের হাত থেকে ফসকে গেছে, এমন কথা বলার উপায় নেই। তবে দিনটা
এর চেয়ে অনেক বেশী বাংলাদেশের ছিল। দিনের শুরুতেই তামিম ইকবালের বেশ
নিন্দাযোগ্য আউটের পরও দারুণভাবে বাংলাদেশকে ফেলায় ফিরিয়েছিলেন ইমরুল কায়েস
ও মুমিনুল হক।
বাংলাদেশ
দু দুবার খেলায় ফিরেছে। প্রথমবার ইমরুল ও মুমিনুল, পরেরবার মুশফিক-রিয়াদ।
এই দুটি জুটি ৬৯ ও ৯৪ রান যোগ করার পরও বাংলাদেশ দিনশেষে খুব স্বস্তিতে
অন্তত নেই।
ডেল
স্টেইনের আগের ওভারেই স্লিপে ডিন এলগারের হাতে জীবন পান তামিম ইকবাল।
কিন্তু সুযোগ কাজে লাগাতে পারেননি এই বাঁহাতি ব্যাটসম্যান। স্টেইনের পরের
ওভারে অফ স্টাম্পের অনেক বাইরের বল তাড়া করতে গিয়ে স্লিপে হাশিম আমলাকে
ক্যাচ দিয়ে ফিরে যান তামিম।
তামিমকে
ফিরিয়ে চারশ’ উইকেটের মাইলফলক স্পর্শ করেন স্টেইন। শন পোলকের পর দক্ষিণ
আফ্রিকার দ্বিতীয় বোলার হিসেবে এই কৃতিত্ব দেখান তিনি। মধ্যাহ্ন-বিরতির পর
জেপি দুমিনিকে আক্রমণে আনেন হাশিম আমলা। নিজের দ্বিতীয় ওভারেই মুমিনুল হককে
ফিরিয়ে দিয়ে ৬৯ রানের দ্বিতীয় উইকেট জুটি ভাঙেন দুমিনি।
দুমিনির
অফ স্টাম্পের একটু বাইরের বল কাট করতে চেয়েছিলেন মুমিনুল। বল শরীরের খুব
কাছে থাকায় ঠিক মতো খেলতে পারেননি। একটু লাফানো বল তার ব্যাট ছুঁয়ে জমা পড়ে
ড্যান ভিলাসের গ্লাভসে। টেস্টে এটাই এই উইকেটরক্ষকের প্রথম ডিসমিসাল। পরের
ওভারে ফিরে ইমরুল কায়েসকে এলবিডব্লিউর ফাঁদে ফেলেন দুমিনি।
৫
রানের মধ্যে ইমরুল-মুমিনুলকে হারানো বাংলাদেশ প্রতিরোধ গড়ে মাহমুদউল্লাহ,
মুশফিকুর রহিমের ব্যাটে। চতুর্থ উইকেটে এই দুই জন গড়েন ৯৪ রানের জুটি।
স্টেইনের বলে ফ্লিক করতে গিয়ে মাহমুদউল্লাহ টেম্বা বাভুমার ক্যাচে পরিণত
হলে ভাঙে বিপজ্জনক হয়ে উঠা এই জুটি।
সাকিব
আল হাসানের সঙ্গে ৩৫ রানের জুটি গড়ে ফিরে গেছেন মুশফিক। ডিন এলগারের বলে
উইকেটরক্ষক ভিলাসের গ্লাভসবন্দি হন বাংলাদেশের অধিনায়ক। রিভিউ নিয়েছিলেন
তিনি কিন্তু আম্পায়ারের সিদ্ধান্ত পাল্টায়নি। দুমিনিকে নিজের উইকেট এক রকম
উপহারই দেন লিটন দাস। অফ স্টাম্পের বাইরের বল সুইপ করতে গিয়ে টাইমিংয়ে গড়বড়
করে শর্ট মিড উইকেটে এলগারের ক্যাচে পরিণত হন তিনি।
বাংলাদেশের
ভরসা হয়ে উইকেটে আছেন ১১ মাস পর আবার টেস্ট খেলতে নামা নাসির হোসেন।
বাংলাদেশ দলে একটিই পরিবর্তন হয়েছে। বাঁহাতি স্পিনার তাইজুল ইসলামের জায়গায়
দলে ফিরেছেন অফ স্পিন অলরাউন্ডার নাসির হোসেন। গত সেপ্টেম্বরে ওয়েস্ট
ইন্ডিজের বিপক্ষে শেষ টেস্ট খেলেছিলেন তিনি।