পাকশী বিভাগের ৫৯
স্টেশনে পয়েন্টসম্যান, স্টেশন মাস্টারসহ নানা পদ পর্যাপ্ত লোকবল নেই। অনেক
স্টেশন বন্ধ হয়ে গেছে। এতে পশ্চিমাঞ্চলে রেল চলাচলে দেখা দিচ্ছে নানা
সমস্যা। ঝুঁকি নিয়ে চলছে যাত্রীবাহী ও মালবাহী ট্রেন।
বাংলাদেশ
রেলওয়ের পাকশী বিভাগীয় রেলওয়ের ব্যবস্থাপক (ডিআরএম) মো: আফজাল হোসেন
জানান, স্টেশন মাস্টার, পয়েন্টসম্যান, গেটকিপার পদে লোকবল সংকট থাকায়
স্টেশনগুলো বন্ধ আছে। এ কারণে ট্রেন চলাচলে সমস্যা তৈরি হচ্ছে। তিনি আরো
বলেন, স্টেশনগুলো চালু থাকলে ক্রসিং ব্যবস্থাপনার কাজটি নির্বিঘ্নে করা
যেত। আগে যেখানে প্রয়োজন হলে ১০ কিলোমিটার পরপর ক্রসিং করা হতো, এখন সেখানে
২০ কিলোমিটার পর ক্রসিং করতে হচ্ছে। রাতারাতি এ সমস্যার সমাধান সম্ভব নয়।
চাটমোহর
উপজেলার গুয়াখড়া স্টেশন। এক সময় যাত্রীদের উপস্থিতিতে সরব থাকতো। কিন্তু
এখন তা অতীত। বর্তমানে স্টেশনটিতে সাইনবোর্ড ছাড়া আর কিছুই চোখে পড়ে না।
নেই স্টেশন মাস্টার বা বুকিং সহকারী। একজন মাত্র পোর্টার রমজান আলী
ভাঙ্গাচোরা অফিসটি দেখাশোনার কাজ করেন। সেখানে থামে না কোনো আন্ত:নগর
ট্রেন। স্টেশনটি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ক্ষোভের শেষ নেই এ অঞ্চলের মানুষের। শুধু
গুয়াখড়া নয়, এমন অবস্থা ভাঙ্গুড়া, শরত্নগরসহ পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের পাকশী
বিভাগের ৫৯ স্টেশনের। লোকবলের অভাবে দীর্ঘদিন এসব স্টেশন বন্ধ থাকায়
ভোগান্তি বেড়েছে যাত্রীদের।
গুয়াখড়া
গ্রামের বাসিন্দা পার্শ্বডাঙ্গা ইউনিয়নের দুই নাম্বার ওয়ার্ডের মেম্বার
মোজাহার আলী ও এক নাম্বার ওয়ার্ডের মেম্বার খাইরুল ইসলাম জানান, এক সময়
প্রচুর যাত্রী গুয়াখড়া স্টেশন দিয়ে যাতায়াত করতো। ১৫-২০ বছর ধরে স্টেশনটি
বন্ধ হয়ে আছে। এখানে কোনো আন্ত:নগর ট্রেন থামে না। বন্ধ থাকায় অন্য স্টেশনে
গিয়ে ট্রেনে উঠতে হয়। পার্শ্বডাঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রবিউল করিম
তারেক বলেন, স্টেশনটি বন্ধ থাকায় এ অঞ্চলের যাত্রীদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে
হচ্ছে। স্টেশনটি চালু করে আন্ত:নগর ট্রেনের স্টপেজ দিলে এলাকার অর্থনৈতিক
উন্নয়ন ঘটবে বলে তিনি মত প্রকাশ করেন।
গুয়াখড়া
স্টেশনের পোর্টার রমজান আলী বলেন, মাঝে-মধ্যে কিছুদিনের জন্য চালু হলেও
বিগত ৫/৬ বছর ধরে স্টেশনটি পুরোপুরি বন্ধ আছে। বুকিং সহকারী বা অন্য কোনো
লোকবল এখানে নেই। তিনি শুধু অফিস পাহারা দিচ্ছেন।
পাকশী
বিভাগীয় পরিবহন কর্মকর্তা শওকত জামিল বলেন, পশ্চিমাঞ্চল রেলের পাকশী
বিভাগের আওতায় মোট ১১৩ স্টেশনের মধ্যে বর্তমানে বন্ধ আছে ৫৯ স্টেশন। এর
মধ্যে সম্পূর্ণ বন্ধ ৪২ এবং আংশিক বন্ধ ১৭। স্টেশন মাস্টারের মোট পদ ৩৬৩।
কর্মরত আছেন মাত্র ১৫৮ জন স্টেশন মাস্টার। বাকী ২০৫ স্টেশন মাস্টারে পদ
শূন্য। পয়েন্টসম্যানের ৪৬৩ পদের মধ্যে কর্মরত আছেন ৩৬৯ জন। শূন্য পদ ৯৪।
গেটকিপারের ১১৫টি পদের মধ্যে কর্মরত মাত্র ১০ জন, ১০৫ পদ শূন্য। এছাড়া ১৩৫
গার্ডের মধ্যে কর্মরত আছেন ১০৮ জন, শূন্য পদ ২৭।