যে স্পিনকে বরাবরই
ভাবা হয় বাংলাদেশের শক্তিমত্তার জায়গা, কাল দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে
প্রথম টি-টোয়েন্টিতে সেই স্পিনই ধরাশায়ী করলো তাদের। নিজেদের স্পিন
নির্ভরতার কথা চিন্তা করে বানানো উইকেট থেকে বাংলাদেশের চেয়ে বেশি সাহায্য
পেলেন সফরকারি স্পিনাররা। বাংলাদেশের বোলারদের সাফল্য ম্লান হয়ে গেল
ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতায়। বোলাররা দক্ষিণ আফ্রিকাকে ১৪৮ রানে বেঁধে রাখার
পরেও দুই ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজের প্রথমটিতে কাল মিরপুরে ৫২ রানে হেরে
১-০ তে পিছিয়ে পড়লো বাংলাদেশ। ফলে শুরুটা ক্রিকেট অনুরাগীদের প্রত্যাশা
অনুযায়ী ভালো হলো না।
উইকেটের
বাড়তি টার্নই বাংলাদেশকে সমস্যায় ফেলেছে বলে ম্যাচ শেষে স্বীকার করলেন
বাংলাদেশ দলপতি। একটানা বেশ কিছুদিন পেস সহায়ক উইকেটে খেলার পর হঠাত্ করে
এই ভিন্নতাই বাংলাদেশের ছন্দে পতন ঘটিয়েছে বলে মন্তব্য করেন মাশরাফি। তবে
অচিরেই নিজেদের শুধরে নেয়ার সুযোগ পাচ্ছেন তারা। আগামীকাল মঙ্গলবার একই
ভেন্যুতে বেলা একটায় দ্বিতীয় এবং শেষ টি-টোয়েন্টিতে মুখোমুখি হবে দু’দল।
এ
বছরের শুরুতে অনুষ্ঠিত বিশ্বকাপের আগ পর্যন্ত বাংলাদেশের বোলিং আক্রমণকে
ভাবা হতো পুরোপুরিই স্পিন নির্ভর। অস্ট্রেলিয়া-নিউজিল্যান্ডের বাউন্সি
উইকেটে পেসাররা সফলতা পাওয়ায় পাল্টে যায় দৃশ্যপট। বিশ্বকাপ পরবর্তী সময়ে
দেশের মাটিতে খেলা দু’টি সিরিজেই একাদশে ছিল পেসারদের আধিক্য।
কিন্তু
সেই দুই সিরিজের প্রতিপক্ষ ছিল দুই উপমহাদেশীয় দেশ। দক্ষিণ আফ্রিকার স্পিন
দুর্বলতার কথা চিন্তা করে সাকিব আল হাসানের সঙ্গে বিশেষজ্ঞ স্পিনার হিসেবে
কাল দলে অন্তর্ভুক্ত হন আরাফাত সানি-সোহাগ গাজিও। সঙ্গে ছিলেন ইদানিং বল
হাতে নিয়মিত সাফল্য পেতে থাকা নাসির হোসেনও।
সানি-নাসিরই
বল হাতে শুরু করেন ইনিংস। পান সাফল্যও। ফলে দক্ষিণ আফ্রিকার তারকা সমৃদ্ধ
ব্যাটিং লাইন আপকে ১৪৮ রানেই আটকে দেয় বাংলাদেশ। ১৯ রানে দুই উইকেট নিয়ে
সানি ছিলেন সফলতম বোলার। সাফল্য পান নাসির, সাকিবও।
রান
তাড়া করতে নামার পর টি-টোয়েন্টিতে তুলনামূলক অনভিজ্ঞ বাংলাদেশ শুরুতেই
শুরু করে তাড়াহুড়া। দুই ওপেনারের উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে যায় তারা। তবে
চাপটা আরো বাড়ে সপ্তম ওভারে স্পিন আক্রমণ শুরু হবার পর। বরাবরই স্পিনের
বিরুদ্ধে সাবলীল দুই অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান মুশফিকুর রহীম এবং সাকিব আল হাসান
অ্যারন ফ্যানগিসোর প্রথম ওভারে ১১ রান তুলে আশা জাগিয়ে তোলেন। কিন্তু অষ্টম
ওভারেই ঘটে বিপত্তি।
অকেশনাল
স্পিনার হিসাবে ক্যারিয়ার শুরু করা জে পি ডুমিনি বল হাতে হয়ে ওঠেন অনেকটা
দুর্বোধ্য। তাকে উড়িয়ে মারতে গিয়ে আউট হয়ে যান মুশফিক, একই সঙ্গে সূচনা হয়
বাংলাদেশ ইনিংসের ধসের। অষ্টম ওভারে মুশফিকের পর নবম এবং দশম ওভারে
ডুমিনি-ফানগিসো তুলে নেন সাব্বির-নাসিরকেও। এরপর শেষ ভরসা হয়ে থাকা সাকিবও
ফিরে গেলে নিশ্চিত হয়ে যায় বাংলাদেশের পরাজয়। শেষ পর্যন্ত দেশের মাটিতে
আয়োজিত টি-টোয়েন্টিতে নিজেদের সর্বনিম্ন সংগ্রহের বাজে নজির গড়ে টাইগাররা
অল আউট হয় ৯৬ রানে। টি-টোয়েন্টিতে এটা মাশরাফির দলের তৃতীয় সর্বনিম্ন
সংগ্রহ।