মার্কিন
প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা কেনিয়ায় নারীবিরোধী সংস্কৃতির তীব্র নিন্দা
জানিয়েছেন। গতকাল রবিবার দেশটির রাজধানী নাইরোবিতে এক অনুষ্ঠানে নারীদের
দ্বিতীয় শ্রেণির নাগরিক হিসেবে বিবেচনা না করতে কেনিয়াবাসীর প্রতি আহবান
জানান। মার্কিন প্রেসিডেন্ট পিতৃপুরুষের জন্মভূমি কেনিয়ায় এক ঐতিহাসিক সফর
গতকাল শেষ করেন। খবর বিবিসি ও গার্ডিয়ানের।
নাইরোবিভিত্তিক
গবেষণা সংস্থা ইনস্টিটিউট অব সিকিউরিটি’র পিটার আলিঙ্গ বলেন, সোমালিয়ার
ইসলামপন্থী জঙ্গি গোষ্ঠী আল শাবাবকে শায়েস্তা করার কথা মাথায় রেখে
যুক্তরাষ্ট্র চাইছে কেনিয়ার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক তৈরি করতে। তাছাড়া
কেনিয়ায় অর্থনীতি এবং নিরাপত্তা খাতে চীনের উত্তরোত্তর প্রভাবের বিষয়টিও
যুক্তরাষ্ট্রকে বিচলিত করছে।
প্রেসিডেন্ট
ওবামা বলেছেন, কেনিয়ানরা এখনই তাদের ভবিষ্যত্ গড়ে তুলতে পারবেন। তবে একই
সাথে কেনিয়ায় দুর্নীতি এবং গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের বিরুদ্ধে ওবামা হুঁশিয়ারি
উচ্চারণ করেন। প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর এই প্রথম তিনি তার পিতৃপুরুষের দেশ সফর
করলেন।
সে
কারণে শুধু আফ্রিকা নয়, সারা পৃথিবীরই আগ্রহ ছিল এই সফর নিয়ে। সেখানে গিয়ে
যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম আফ্রিকান-আমেরিকান প্রেসিডেন্ট কি বলেন, এই অঞ্চলের
সমাজ, রীতি, রাজনীতি নিয়ে কি বার্তা দেয়ার চেষ্টা করেন - সেদিকেও বিশেষ করে
নজর ছিল। এ সময় তার সত্ বোন অউমাসহ পরিবারের অন্য সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানের মাঝে ওবামা অউমার সঙ্গে আলিঙ্গন করেন।
সফরের
শেষ দিনে নাইরোবির এক স্টেডিয়ামে পাঁচ হাজার মানুষের সামনে বক্তৃতায়
প্রেসিডেন্ট ওবামা খোলাখুলি তার মনোভাব তুলে ধরেন। কেনিয়া তথা আফ্রিকার
বিশাল অংশের দুর্নীতিগ্রস্ত গোত্র রাজনীতিরও কড়া সমালোচনা করেছেন তিনি।
ওবামা বলেন, যে রাজনীতির ভিত্তি শুধুমাত্র গোত্র এবং সমপ্রদায়, সেই রাজনীতি
কোনো দেশের জন্য অবধারিত সর্বনাশ ডেকে আনবে। তিনি যুবকদের পরিকল্পনার
মাধ্যমে এগিয়ে যেতে উত্সাহ দেন।
কেনিয়ার
বহুদিনের সনাতন বিভিন্ন রীতিনীতি নিয়ে কথা বলেন, কেনীয় বংশোদ্ভূত মার্কিন
এই প্রেসিডেন্ট। বিশেষ করে নারীদের প্রতি সমাজের দৃষ্টিভঙ্গিরও কড়া
সমালোচনা করেন তিনি। তিনি বলেন, ‘মেয়েদের ওপর যৌন নিগ্রহ, ঘরের ভেতর তাদের
ওপর নিপীড়নের পেছনে কোনো অজুহাত থাকতে পারে না। অল্প বয়সী মেয়েদের জবরদস্তি
করে তার যোনিছেদ করার কোনো যুক্তি থাকতে পারে না। তাদের জবরদস্তি করে বিয়ে
দেয়ার রীতি কোনো সভ্য সমাজে থাকতে পারে না। একবিংশ শতকে এসব রীতির কোনো
জায়গা নেই।’ পর্যবেক্ষকরা বলছেন, পিতৃভূমি দর্শন ছাড়াও কেনিয়া সফরের পেছনে
প্রেসিডেন্ট ওবামার অন্য কৌশলগত উদ্দেশ্যও ছিল।